উদ্বৃত্ত পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে ভারত, বাংলাদেশে রফতানির আগ্রহ

গেল বছর বাংলাদেশের মতো পেঁয়াজের সঙ্কটে ভুগেছে বিশ্বের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ভারত। সঙ্কট ঠেকাতে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ আমদানি করেছে দেশটি। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন পেঁয়াজ চলে এসেছে ভারতের বাজারে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের উচ্চমূল্য ও স্বাদে ভিন্নতার কারণে বেশিরভাগ রাজ্যই তাদের চাহিদা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে আমদানি করা মসলাজাতীয় পণ্যটি নিয়ে বিপাকেই পড়েছে দেশটি। আর্থিক ক্ষতি কমাতে প্রতিবেশী বাংলাদেশকে পেঁয়াজ কেনার অনুরোধ জানিয়েছে মোদি সরকার। খবর দ্য প্রিন্ট

গত সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে বাংলাদেশি হাইকমিশনার রকিবুল হককে পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ভারত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ ৬০০ থেকে ৭০০ মার্কিন ডলারে আমদানি করে। সেই পেঁয়াজ মোদি সরকার বাংলাদেশকে ৫০০ থেকে ৫৮০ ডলারে দিতেও রাজি আছে বলেও জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে পেঁয়াজ আমদানিতে অনাগ্রহ প্রকাশ না করলেও বেশ কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। এতে যুক্তি দেখানো হয়েছে, নেপাল হয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশে চীনা পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। তাছাড়া দেশী পেঁয়াজও বাজারে আসতে শুরু করেছে। সুতরাং ভারতের উচিত রপ্তানিকৃত পেঁয়াজ নিজেদের খরচে বাংলাদেশে পৌঁছে দেয়াসহ আরো কিছু সুযোগ সুবিধা প্রদান করা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক কর্মকর্তা দ্য প্রিন্টকে জানিয়েছেন, সঙ্কট কাটাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ৩৬ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে ভারত। গেল ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু আমদানিকৃত পেঁয়াজের মাত্র ৩ হাজার মেট্রিক টন সংগ্রহ করেছে রাজ্য সরকারগুলো। বাকি পেঁয়াজগুলো মুম্বাইয়ের জওহরলার নেহেরু বন্দরে পড়ে আছে। পেঁয়াজ পচনশীল হওয়ায় বিরাট লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে দেশটির সরকার।

খবরে আরো বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, আসাম, হরিয়ানা, কর্ণাটক ও উড়িষ্যার চাহিদানুযায়ী যথাক্রমে ১০ হাজার মেট্রিক টন, ৩ হাজার মেট্রিক টন, ৩ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন, ২৫০ মেট্রিক টন এবং ১০০ মেট্রিক টন আমদানি করা পিঁয়াজ সংগ্রহে অসম্মতি জানিয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে গ্রাহক বিষয়ক মন্ত্রী রাম ভিলাস পাসওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজগুলো এরই মধ্যে পঁচন ধরে যাওয়ার কথা। তাই এগুলো যথাযথ নিরীক্ষণ না করে আমদানির সিদ্ধান্তে যাওয়া ঠিক হবে না।

এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজের দাম নিজেদের বাজারে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এর কিছুদিন পরে ভারতে সফরকালে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরাসরি কিছু না বললেও ঠাট্টাচ্ছলে তিনি পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করার কথাও বলেন। তারপরও ভারতের চাহিদা না মেটায় সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিতই রাখে ভারত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন