চিনির বাজারে আধিপত্য বাড়াতে পারে ভারত

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে তিন মৌসুম ধরে ভারতে চিনির উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসছে। যদিও তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের আধিপত্য খুব বেশি কমেনি দেশটির। কারণ রেকর্ড উদ্বৃত্ত মজুদ থেকে রফতানির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে হিস্যা ধরে রেখেছিল দেশটি। তবে চলতি বছরে অনুকূল আবহাওয়া দেশটির সংরক্ষণাগারগুলোয় পর্যাপ্ত পানি থাকায়  আখের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। দেশটির সরকারি তথ্যও বলছে, ২০২০-২১  মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদন হতে পারে। যে কারণে মৌসুমেও চিনির আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির আধিপত্য আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

এমইআইআর কমোডিটিজ ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহিল শায়খ মনে করেন, দৈব কোনো কারণ ছাড়া এবার ভারতে আখের বাম্পার ফলন থামানো যাবে না। অনেকদিন পর আখ দেশটির একটি আধিপত্যশীল ফসল হয়ে উঠবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।

ভারতে ১২০টি প্রধান পানি সংরক্ষণাগার রয়েছে। দেশটির সরকারি তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের ১৯ তারিখ পর্যন্ত এসব পানি সংরক্ষণাগারে ১৪ হাজার কোটি ঘনমিটার পানি সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা এর আগের বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি। আর গত ১০ বছরের গড় সংরক্ষণের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। ফলে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ থাকায় মৌসুমে আখের আবাদ ফলন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যা পরোক্ষভাবে দেশটির চিনির উৎপাদন রফতানি বাড়িয়ে দেবে।

ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চিনি উৎপাদক রাজ্য মহারাষ্ট্র। রাজ্যটির সুগার কমিশনার শেখর গাইকদ মনে করেন সবকিছু অনুকূল থাকায় মৌসুমে কৃষকরা আখ আবাদে উৎসাহী হবেন। তিনি জানান, মাটির আর্দ্রতা ভালো থাকায় এবং পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ থাকায় রাজ্যটিতে ২০১৯-২০ মৌসুমে আখ আবাদের পরিমাণ লাখ ৪৩ হাজার একর বাড়তে পারে।  

এদিকে মৌসুমে ভারতের চিনি উৎপাদন বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক ব্রাজিলের বাজার হারানোর শঙ্কা আরো বাড়বে। গত বছর দেশটি বৈশ্বিক বাজারে ভারতের অন্যায্য চিনি সরবরাহ বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায়। উদ্বৃত্ত মজুদ কমাতে ভারত চিনি রফতানিতে ভর্তুকি সুবিধা দেয়ায় দেশটির রফতানি বেড়েছে। এর ফলে বৈশ্বিক বাজারে উদ্বৃত্ত সরবরাহে চিনির দাম দুই বছরে ২০ শতাংশের বেশি কমেছে বলে অভিযোগ ব্রাজিলের। যদিও গত বছরের শেষের দিকে বাজার কিছুটা চাঙ্গা হয়েছে। তবে ভারত যদি বছর রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়, তাহলে অবস্থা আবার মন্দার দিকে গড়াতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

নেদারল্যান্ডসের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রাবো ব্যাংক বলছে, চিনি রফতানিতে ভারতের ভর্তুকির ফলে প্রধান প্রধান উৎপাদক দেশ ক্ষুব্ধ হয়েছে, যা মীমাংসায় ডব্লিউটিও পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে বিষয়ে এখনো কোনো সমাধান না হওয়ার মধ্যেই ভারত আবারো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চিনি রফতানি করতে পারে।             সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন