টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু আজ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি গাজীপুর

গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে আজ শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ফজরের নামাজ শেষে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ এ জমায়েতের আনুষ্ঠানিকতা। এতে অংশ নেয়ার জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে সমবেত হয়েছেন।

ইজতেমার প্রথম পর্বের গণমাধ্যমবিষয়ক সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম জানান, তিনদিনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন জামাতকে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। ময়দানজুড়ে বিশাল চটের শামিয়ানার নিচে মুসল্লিদের জন্য ৮৭টি খিত্তা নির্ধারণ করে খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার বিদেশী মেহমানের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রেখে ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে আন্তর্জাতিক নিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জামাতবদ্ধ মুসল্লি ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেবেন।

বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, ২০ লাখ মুসল্লির সমাগম সামনে রেখে প্রতিদিন সাড়ে তিন কোটি গ্যালন পানির ব্যবস্থা থাকছে। বাড়তি টয়লেট নির্মাণ ও পাকা টয়লেটগুলোও ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।

এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ইজতেমা মাঠে ব্লিচিং পাউডার ও মশক নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু করেছে। এছাড়া ৭৫০টি বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপন ও ধুলাবালি যাতে না ওড়ে, সেজন্য পানি ছিটানোর ব্যবস্থা থাকছে। ইজতেমা চলাকালে মুসল্লিদের উচ্ছিষ্ট ফেলার জন্য ময়দানের চারপাশে রিংয়ের তৈরি পোর্টেবল ডাস্টবিন স্থাপন করা হচ্ছে, যাতে মুসল্লিরা ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে পারেন।

ইজতেমায় সমবেত লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দাসহ যৌথ বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য পাঁচ স্তরে ভাগ হয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ১৪টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। থাকছে ময়দানজুড়ে সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর। খিত্তায় খিত্তায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। সার্বিক নিরাপত্তায় এবার ইজতেমায় সাড়ে আট হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করবেন।

সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ব ইজতেমা চলাকালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মুসল্লিদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মুসল্লিদের জন্য চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ মেডিকেল টিম। মাঠের আশপাশের খাবার দোকান ও আবাসিক হোটেলের মান ঠিক রাখতে ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় তুরাগ নদীতে তৈরি করা হয়েছে ছয়টি ভাসমান সেতু। বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। এজন্য দুই হাজার কর্মী মাঠে কাজ করছেন। ইজতেমার মুরব্বিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তত্পর রয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন