বুড়িমারী স্থলবন্দর

উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি থেকে রাজস্ব কমার ধারা অব্যাহত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি লালমনিরহাট

উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে কৃষিজ পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি বাবদ রাজস্ব আহরণে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দুই বছরের আগের তুলনায় উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি বাবদ রাজস্ব আহরণ কমেছে ৩৭ লাখ টাকারও বেশি। 

বুড়িমারী স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের তথ্যমতে, উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি বাবদ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৮ টাকা রাজস্ব আহরিত হয়। পরের অর্থবছর রাজস্ব কমে গিয়ে আহরিত হয় ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে রাজস্ব আহরণ কমে ২২ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৮ টাকা। রাজস্ব কমার এ ধারা অব্যাহত আছে চলতি অর্থবছরও। চলতি অর্থবছরের গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ হয় ৬৩ হাজার ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ দুই বছর আগের তুলনায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের ঘাটতির পরিমাণ ৩৭ লাখ টাকারও বেশি।  যদিও চলতি অর্থবছর শেষ হতে আরো সাত মাস বাকি।

বুড়িমারী স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের রোগ তত্ত্ববিদ কর্মকর্তা শামীম আহমদ সরকার জানান, ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা কৃষিজ পণ্যের অন্যতম হলো কমলা, আপেল, মসলা, পাটবীজ, সবজিবীজ, ভুট্টাবীজ, ভুট্টা, ভুসি। তবে বাংলাদেশ থেকে কোনো কৃষিজ পণ্য রফতানি হয় না।

জানা গেছে, প্রথম এক টন কমলা আমদানির ক্ষেত্রে উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি বাবদ ১৫০ টাকা সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। এরপর পরবর্তী প্রতি টনে ৫০ টাকা হারে রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। একই নিয়মে ভুসিতে প্রথম এক টনের জন্য ৫০ টাকা; এরপর পরবর্তী প্রতি টনের জন্য ২০ টাকা। বীজ আমদানির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। প্রথম টন ১০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি টনের জন্য ৫০ টাকা। সবজিবীজ ও মসলার জন্য প্রথম এক টনের জন্য ৩০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি টনের জন্য ৫০ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী মেসার্স রাহী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. তারেকুল ইসলাম বলেন, একসময় এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে কৃষিজ পণ্য ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু সে অবস্থা এখন নেই। বর্তমানে কিছু পাটবীজ, সবজিবীজ, এলাচ জাতীয় মসলা ও কমলা আমদানি হয়। একসময় চাল ও ভুট্টা প্রচুর আমদানি হতো। গত বছর ভারতেই ভুট্টার দাম বেশি হওয়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশী ভুট্টা রফতানি হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ কৃষিজ পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি চাহিদা কমেছে।ং

বুড়িমারী স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. শাহাদৎ হোসেনও উদ্ভিদ সংগনিরোধ ফি বাবদ রাজস্ব আহরণ হ্রাস পাওয়ার জন্য দেশের অভ্যন্তরে কৃষিজ পণ্য উৎপাদন বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করে বলেন, আগে সয়াবিন, সরিষা ও চালের ভুসি আমদানি হতো। এখন সেগুলোর সঙ্গে ভুট্টা ও চাল আমদানিও বন্ধ রয়েছে। কমেছে কমলা আমদানি। এখন পাট, ধনেপাতা, সবজিবীজের পাশাপাশি এলাচ আমদানি হচ্ছে। তবে এগুলো আমদানি হচ্ছে খুবই অল্প পরিমাণে। ফলে রাজস্ব আহরণ কমেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন