জ্বালানি সরবরাহে বায়োডিজেলের অংশ বাড়াতে চায় ব্রাজিল। এ লক্ষ্যে বায়োডিজেল উৎপাদনে অধিক পরিমাণে সয়াবিন ব্যবহার করবে দেশটি। এর মধ্যে ২০২০ সালে জ্বালানি উৎপাদনে বায়োডিজেলের ব্যবহার বাড়বে ১ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ বছরে মোট জ্বালানি সরবরাহে বায়োডিজেলের হিস্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১২ শতাংশে। আর ২০২৩ সাল নাগাদ জ্বালানিতে এ হিস্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ শতাংশ। খবর এগ্রিকালচার ডটকম।
দেশটির খনি ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী বেন্তো আল বুকেরকুয়ে সম্প্রতি বলেন, পরীক্ষার মাধ্যমে বর্তমানে জ্বালানি তৈরিতে ১১ শতাংশ বায়োডিজেলের মিশ্রণ নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে আগামী বছর এর ব্যবহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ এবং ২০২৩ সাল নাগাদ ১৫ শতাংশ করা হবে।
যদিও মন্ত্রীর এমন ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। এর মধ্যে ব্রাজিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব সয়াবিন গ্রোয়ারস এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। এর বিপরীতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে ব্রাজিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব কর্ন গ্রোয়ারের পক্ষ থেকে। তারা মনে করছে, জ্বালানিতে মিশ্রণ হিসেবে সয়াবিনের পরিবর্তে ইথানল ব্যবহার বাড়ানো উচিত।
এদিকে বায়োডিজেল তৈরিতে সয়াবিনের ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা। পোর্তো আলিজরিভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক কার্লোস কোগোর মতে, সয়াবিনের পরিবর্তে বায়োফুয়েল তৈরিতে ব্রাজিলের জন্য সবচেয়ে ভালো উৎস হতে পারে পাম অয়েল। চলতি বছরের তুলনায় আগামী চার বছরে যদি দেশের অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি আরো দ্রুত প্রসারিত হয়, তাহলে বছরে বায়োডিজেলের ব্যবহার ৮০০ কোটি লিটারে দাঁড়াতে পারে।
কোগোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বায়োডিজেল উৎপাদনে ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়েছে সয়াবিন তেল। এ সময় ৭০ শতাংশ বায়োডিজেল তৈরিতে সয়াবিন তেল ব্যবহার হয়েছে। যেখানে চলতি বছর ১ কোটি ৯৬ লাখ টন সয়াবিন মাড়াইয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। আর ২০২৩ সাল নাগাদ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩ কোটি টন। এর মধ্যে ২ কোটি ৩৭ লাখ টন সয়াবিন মিলের জন্য, আর ৫৭ লাখ টন সয়াবিন তেলের জন্য।
ব্রাজিলের নবায়নযোগ্য জ্বালানিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিএস বায়োসের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলে প্রতি বছর বায়োডিজেলের ব্যবহার বাড়বে ৭০ কোটি টন। এর বিপরীতে সয়াবিনের প্রক্রিয়াকরণ বাড়বে ৩০ লাখ টনের মতো।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বায়োডিজেল উৎপাদনে অধিক সয়াবিন ব্যবহার হলে এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে মাড়াইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান। কারণ এটি অভ্যন্তরীণ সয়াবিন মিলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। এছাড়া সয়াবিন মিলের রফতানিও বাড়বে না।