জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার দেওড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্রের এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুই আসামিকে ৫ লাখ ও পাঁচ আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ড. এবিএম মাহমুদুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আক্কেলপুর উপজেলার মারমা পূর্বপাড়া গ্রামের খয়বর আলীর ছেলে সোহেল তালুকদার, সোনারপাড়া গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন, দেওড়া গুচ্ছগ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে রাহিন, সাখিদারপাড়ার মৃত এবাদত আলী সাখিদারের ছেলে ফেরদৌস আলী সাখিদার, সোনারপাড়া গ্রামের ভোলা সোনারের ছেলে মজিবর সোনার, জগতি গ্রামের আব্দুর রশীদের ছেলে রুহুল আমিন ও দেওড়া গুচ্ছগ্রামের মৃত ইছাহাকের ছেলে আজিজার রহমান। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সোহেল ও ফেরদৌসকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও অন্য পাঁচ আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাতে দেওড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসামিরা গণধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে ওই গৃহবধূ মারা যান। এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর নিহত গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে আক্কেলপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা পরে আদালতে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে গতকাল রায় ঘোষণা করেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে জরিমানাও করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফিরোজা চৌধুরী। এছাড়া বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ও রফিকুল ইসলামসহ পাঁচজন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফিরোজা চৌধুরী বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাই।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।