বিজিএমইএর প্রতিবেদন

চট্টগ্রামে এক বছরে ব্যবসা গুটিয়েছে ৩৬ প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরো

লোকসান কাটিয়ে উঠতে না পেরে চট্টগ্রামের ছোট মাঝারি কারখানার অনেকগুলোই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। ছোট উদ্যোক্তাদের অনেকে সংস্কার ব্যয়সহ নানা সংকটে পড়ে বড় কারখানার মালিকদের কাছে কারখানা বিক্রি করে দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন।

তৈরি পোশাক প্রস্তুত রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে চট্টগ্রামে ৩৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ৩২৮টি কারখানা উৎপাদনে থাকলেও সরাসরি রফতানি কার্যক্রমে জড়িত মাত্র ১৮৬টি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষুদ্র মাঝারি আকারের কারখানার পাশাপাশি বড় কারখানাগুলোও এখন সংকটে রয়েছে।

রফতানি খাতের উদ্যোক্তারা জানান, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে সময়মতো ডলারের বিপরীতে টাকার মান যৌক্তিকভাবে না কমানোর কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় হিমশিম খাচ্ছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা।

চট্টগ্রামের পোশাক খাতের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমইএর প্রস্তুতকৃত পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ৬৮৬টি পোশাক কারখানার মধ্যে ২০১৮ সালে চালু ছিল ৩৬৪টি। তবে চালু থাকা এসব কারখানার সংখ্যা চলতি বছরে কমে দাঁড়িয়েছে ৩২৮টিতে। এর মধ্যে বর্তমানে সরাসরি রফতানি কার্যক্রমে জড়িত আছে ১৮৬টি কারখানা। অর্থাৎ এই স্বল্প সময়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে ৩৬টি পোশাক কারখানা। পাশাপাশি সরাসরি রফতানি কার্যক্রমে জড়িত কারখানার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

বিজিএমইএর প্রতিবেদনে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পণ্যের যথাযথ মূল্য না পাওয়া, অ্যালায়েন্স অ্যাকর্ডের সুপারিশ বা শর্ত অনুযায়ী সংস্কার করতে না পারা, নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নে অক্ষমতা, বিদেশী ক্রেতাদের চট্টগ্রাম বিমুখতা, কিছু ক্রেতা বায়িং হাউজের প্রতারণা, চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত সমস্যা, ব্যাংকঋণে উচ্চ সুদহার, ঋণ পেতে দীর্ঘসূত্রতা, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার না হওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অসম প্রতিযোগিতা।

দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। সরকারি হিসাবেই খাত থেকে রফতানি আয় কমতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পাশাপাশি রফতানি আয় ধরে রাখতে ডলারের দর ১০৫ থেকে ১১০ টাকা নির্ধারণ ছাড়া পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো উপায় নেই বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।

তৈরি পোশাক কারখানা প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাছির উদ্দীন বলেন, রফতানি খাত মেঘাচ্ছন্ন দেখছি। এখন পর্যন্ত শক্তিশালী কোনো নীতি কৌশল তৈরি হয়নি আমাদের। আমাদের প্রতিযোগী দেশ চীন, ভারত, ভিয়েতনামসহ আরো কয়েকটি দেশ কয়েকবার তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। রফতানি খাতকে বাঁচাতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমিয়ে কমপক্ষে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। এখন এটা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা আছে কিনা আমাদের জানা নেই।

রফতানিকারকরা জানান, গত সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় হয়েছে ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা গত বছরের (২০১৮) সেপ্টেম্বরের তুলনায় দশমিক ৩০ শতাংশ কম। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় কমেছে দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, তৈরি পোশাক খাত গভীর সংকটে পড়েছে। একের পর এক কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। রফতানি আয় কমছে। প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা পেয়ে প্রতিযোগী দেশগুলো অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং করছে, যেখানে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সম্ভাবনা আছে। একটি শক্তিশালী নীতি বা কৌশল সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে পারে।       

পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ থাকলেও বেশকিছু বাধা আছে। দেশের উদ্যোক্তাদের উৎপাদন দক্ষতা ব্যবস্থাপনা দক্ষতা আরো বাড়াতে হবে। পোশাক খাতের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন