খাতুনগঞ্জ

সরবরাহ সংকটে ঊর্ধ্বমুখী হলুদের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ব্যুরো

ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে মসলাপণ্য হলুদের দাম। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে পণ্যটির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মৌসুমের শেষ দিকে পণ্যটির সরবরাহ কমে যাওয়া এবং ভারতীয় বাজারে পণ্যটির বুকিং দর বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের মসলার আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। এদিকে ভারতীয় হলুদের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশী হলুদের দামেও প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশী শুকনা হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এসব হলুদের দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর মৌসুমের পর প্রথম কয়েক মাস হলুদের বাজার স্থির থাকে। এরপর ধীরে ধীরে দাম বাড়তে থাকে। কিন্তু দুই বছর ধরে মৌসুম শেষ হতে না হতেই হলুদের বাজার চাঙ্গা হয়ে যায়। অন্যদিকে চাহিদা বাড়লেও হলুদ উৎপাদন তুলনামূলক বাড়ছে না। তাছাড়া মসলা প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলো পাইকারি বাজার থেকে হলুদ কিনে সারা বছরের জন্য মজুদ করায় পণ্যটির বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বণিক বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে বাজারে শুকনা হলুদের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশীয় বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়া এবং ভারতীয় হলুদের দাম বাড়ায় পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহেই পণ্যটির দাম কেজিতে ১০-১২ টাকা বেড়েছে।

তার দেয়া অনুযায়ী, গেল মৌসুমে পার্বত্য অঞ্চলে হলুদের ফলন কম হয়েছে। এতে প্রায় এক মাস ধরে বাজারে চাহিদার তুলনায় হলুদ আসছে কম। মূলত সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশী হলুদের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

ভারতীয় হলুদের দাম সম্পর্কে মেসার্স কর্ণফুলী ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী নেওয়াজ মোর্শেদ বণিক বার্তাকে বলেন, মৌসুমের শেষ দিকে হলুদের বাজার নির্ভর করে ভারতীয় আমদানীকৃত হলুদের ওপর। প্রায় এক মাস ধরে ভারতীয় বাজারে হলুদের দাম বেড়েছে। যার ফলে সময়ে দেশীয় বাজারে হলুদের আমদানি কমেছে। এতে বাজারে হলুদের সরবরাহ সংকটে পণ্যটির দাম বেড়েছে।

তবে অন্য মসলা ব্যবসায়ী নেয়ামত উল্লাহর মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত হলুদের বাজার ছিল নিম্নমুখী। আগস্টের শুরু থেকে পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। এই সময়ের (গত দুই মাসে) মধ্যে পণ্যটির দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি হলুদের চাষ হওয়া দেশের তিন পার্বত্য  জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি বান্দরবান থেকে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টন দেশী হলুদ আসে। কিন্তু এবার উৎপাদন কম হওয়ায় গত ১৫ দিন থেকে প্রতি সপ্তাহে বাজারে হলুদ আসছে ২৫-৩০ টনের মধ্যে। মৌসুমের মাঝামাঝি সময় অর্থাৎ জানুয়ারির দিকে চাহিদার চেয়ে বেশি পণ্য বাজারে এলেও বড় বড় কোম্পানি এগুলো কিনে নেয়ায় বাজারে মজুদের পরিমাণও কমে গেছে। এতে পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন