ক্রেতা সংকটে ভারতের স্বর্ণের বাজার

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্বর্ণ ব্যবহারের দিক থেকে দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ভারতে প্রতি বছর দীপাবলি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে স্বর্ণ কেনাবেচা রমরমা হয়ে ওঠে। তবে এবার দীপাবলি অনুষ্ঠানের দুই সপ্তাহের মতো বাকি থাকলেও এখনো জমে ওঠেনি স্বর্ণের বাজার। এমনকি বিভিন্ন ছাড় দিয়েও ক্রেতা আকর্ষণ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ভারতে সেন্টের বিস্কুট থেকে শুরু করে গাড়ি পর্যন্ত সবকিছুতেই দাম ঊর্ধ্বমুখী। যে কারণে স্বর্ণের দাম বেশি থাকায় বাজারে ক্রেতার তেমন দেখা মিলছে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। খবর ব্লুমবার্গ।

চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে রয়েছে। আর সেপ্টেম্বরে ভারতের বাজারে স্বর্ণের দাম বড় আকারে বৃদ্ধি পায়। এমন একটি সময়ে ভারতের বাজারে মূল্যবান ধাতুটির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যখন দেশটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি, বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং ব্যাংকগুলোর প্রতি জনসাধারণের আস্থার সংকট রয়েছে। অবস্থায় চলতি বছর তৃতীয়বারের মতো সেপ্টেম্বরে দেশটিতে স্বর্ণের আমদানি রেকর্ড পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোও স্বর্ণ ক্রয় কমিয়ে দেয়।

সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ভারতের স্বর্ণ আমদানি ৬৮ শতাংশ কমে যায়, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সময় দেশটিতে মোট ২৬ টন স্বর্ণ আমদানি হয়েছে। যেখানে গত বছরের একই সময় আমদানি ছিল ৮১ দশমিক ৭১ টন। মূল্যের হিসাবে, সময় ১২৮ কোটি ডলারের স্বর্ণ আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ কম।

আসন্ন অনুষ্ঠানে স্বর্ণের ক্রয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুম্বাইয়ের ট্যাক্সি ড্রাইভার মনিশ কোটেকার বলেন, অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে স্বর্ণ ক্রয় পরিধান  আমাদের ঐতিহ্য। এখন বাজার বেশ চাঙ্গা। কারণে স্বর্ণের দাম পড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি। দীপাবলির আগে যদি দাম না কমে, তাহলে বছর আর স্বর্ণ ক্রয় করা না- হতে পারে। কারণ বর্তমান মূল্য আমাদের বাজেটের বাইরে।

আগামী ২৭ অক্টোবর দীপাবলি। কিন্তু সেপ্টেম্বরে বেঞ্চমার্কে স্বর্ণের ভবিষ্যৎ মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ১০ গ্রামে  দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ৮৮৫ রুপিতে। যদিও এখন দাম শতাংশ কমেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এখনো দাম ২০ শতাংশ বেশি। ফলে আসন্ন অনুষ্ঠানকে ঘিরেও ক্রেতা সংকট কাটছে না।

মুম্বাইভিত্তিক জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান পেন্টা গোল্ডের পরিচালক এবং ইন্ডিয়া বুলিয়ান অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব কেতান শ্রফ বলেন, বছর দীপাবলি কেবল পঞ্জিকায় আটকে আছে। স্বর্ণের বাজারে অনুষ্ঠানের কোনো আমেজই নেই। বর্তমানে খুবই বাজে অবস্থা। এমনকি ক্রেতা সংকটে বিক্রি বাড়াতে কোম্পানিগুলো ছাড়ের পরিমাণও বাড়িয়েছে।

তবে বাজার চাঙ্গা করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ছাড় বাড়ালেও ডিসেম্বরের আগে বিক্রি বাড়ার কোনো আভাস দেখছেন না ইন্ডিট্রেড ডেরিভেটিভস অ্যান্ড কমোডিটিসের পণ্য মুদ্রা বিভাগের প্রধান হরিশ গালিপেল্লি। তিনি বলেন, জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে ডিসেম্বরের আগে স্বর্ণের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন