অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক

দশ বছরের মধ্যে প্রথম ঋণাত্মক রফতানি প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে পোশাকপণ্য থেকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পোশাক রফতানি হোঁচট খেয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে দেড় শতাংশের বেশি কমে গেছে পোশাকপণ্যের রফতানি। ভালো করতে পারেনি রফতানির অন্য দুই বড় খাত চামড়া চামড়াজাত এবং পাট পাটজাত পণ্য। এর প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক রফতানিতে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে কখনই ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়নি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে রফতানি নিয়ে গতকাল হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি হয়েছে মোট ৯৬৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে রফতানি হয়েছিল ৯৯৪ কোটি লাখ ডলারের পণ্য। হিসাবে রফতানি কমেছে দশমিক ৯৪ শতাংশ।

ডলারের বিপরীতে টাকার অতিমূল্যায়নকে এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন রফতানি খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রতিযোগী দেশগুলো ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রা অবমূল্যায়ন করেছে। এর ফলে তাদের মূল্য সক্ষমতা বেড়েছে। কারণে অনেক ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে না এসে প্রতিযোগী দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে। ক্রয়াদেশ ঘাটতিতে বাংলাদেশের রফতানি কমে গেছে।

অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন রফতানি খাতসংশ্লিষ্টরা। কারণ গত ১০ অর্থবছরে কখনই প্রথম প্রান্তিকে রফতানিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিতে পড়েনি দেশ। গত ১০ বছরের রফতানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানিতে ২৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। পরের অর্থবছরও প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমলেও ঋণাত্মক হয়নি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আবার দুই অংকের ঘরে অর্থাৎ ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় রফতানিতে। এর পরের তিন অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি প্রবৃদ্ধি শতাংশের নিচে ছিল। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দশমিক ১২ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় রফতানিতে। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেও ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি প্রায় শতাংশ কমে গেছে।

পরের প্রান্তিকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছেন রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে পরিস্থিতি ভালো হবে বলে আশা করছি। তবে চ্যালেঞ্জ আছে অনেকগুলো। প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো মূল্য সক্ষমতা প্রতিযোগী দেশের চেয়ে কমে এসেছে। উদ্যোক্তারা সরকারের নীতিসহায়তা কাজে লাগাচ্ছেন। তারা অটোমেশন, প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগ করছেন। এর মাধ্যমে তারা প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আশা করছি, আগামী প্রান্তিকে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি না হলেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে, বিশেষ করে বস্ত্র পোশাক খাতে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি আয়ের প্রধান খাত পোশাকপণ্য রফতানি হয়েছে ৮০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের। ৯১০ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে পণ্য রফতানি হয় দেশ থেকে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তো বটেই, আগের অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায়ও দশমিক ৬৪ শতাংশ কমেছে পোশাকপণ্যের রফতানি। যদিও গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পোশাক রফতানিতে ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার কারণেই রফতানিতে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন