সিল্করুট

দক্ষিণ ভারতের পরাশক্তি

আহমেদ দীন রুমি

যুদ্ধের ময়দানে রাজেন্দ্র চোল। কোলারাম্মা মন্দির। ছবি: ওয়েস্ট কোস্ট মাস্কেটিয়ার

পল্লব সাম্রাজ্যের সূর্য তখন অস্তগামী। অন্য রাজ্য পাণ্ড্যের সঙ্গে শুরু হলো টানাপড়েন। পরিস্থিতি ঘনীভূত হয়, যখন পল্লবদের মিত্র মুত্তারায়রা যোগ দিল পাণ্ড্যপক্ষে। এ পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন বিজয়ালয় (৮৫০-৮৭১ সাল)। পল্লব সম্রাট নপতুঙ্গের অধীনে সামন্তরাজা তিনি। মুত্তারায়দের পরাজিত করে অধিকার নিলেন তাঞ্জোরের। চারদিকে বাহবা পড়ে গেল তার নামে। বিজয়ালয়ের এ বিজয়ই পরবর্তীকালে চোল সাম্রাজ্যের ভিত তৈরি করেছে। বদলে দিয়েছে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাসের গতিপথ।

পরাশক্তি হিসেবে নবম শতাব্দীতে উত্থান ঘটলেও চোলরা ইতিহাসে অপরিচিত ছিল না। অশোকের শিলালিপি, গ্রিক ভূগোলবিদ টলেমির লেখা ও পালি গ্রন্থ মহাবংশে চোলদের প্রসঙ্গ এসেছে। সঙ্গম সাহিত্যেও রয়েছে চোল প্রসঙ্গ। বিভিন্ন সময়ে তারা রাষ্ট্রকুট, চালুক্য অথবা পল্লবদের অধীনে সামন্তরাজা হয়েই সন্তুষ্ট ছিল। তবে সব সমীকরণ বদলে দিলেন বিজয়ালয়। তার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারের ভার পড়ে আদিত্যের (৮৭১-৯০৭ সাল) ওপর। তাঞ্জোরসহ নিকটবর্তী অঞ্চলে আদিত্যের অধিকার মেনে নেন পল্লব সম্রাট অপরাজিত। তবে আদিত্য অপরাজিতের অধীনতা বেশিদিন মেনে নেননি। ৮৯০ সালে তিনি অপরাজিতকে সিংহাসনচ্যুত করেন। এর মধ্য দিয়ে ক্রমে সমগ্র পল্লব রাজ্য চোল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। মাত্র ২৫ বছরের মধ্যে চোল পরিণত হয় একটি বিস্তৃত অঞ্চলে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সাম্রাজ্যে।

প্রথম আদিত্যর পরে প্রথম পরান্তক ৪৮ বছর (৯০৭-৯৫৫ সাল) রাজত্ব করেন। দীর্ঘ রাজত্বকালে তিনি পিতার সাফল্যের ধারা অনুসরণ করেন। চোল রাজ্যের সীমা প্রসারিত করেন কন্যাকুমারী পর্যন্ত। তার রাজত্বের অন্তিমলগ্নে রাষ্ট্রকুট রাজা তৃতীয় গোবিন্দ উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। অনিবার্য এ যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রাজাদিত্যের। এ ঘটনার অল্পকাল পরে প্রথম পরান্তক মারা যান। তার মৃত্যুর পরে তিন দশকেরও বেশি সময়ের জন্য চোলদের আকাশে ছিল দুর্দিনের মেঘ। অবশেষে ৯৮৫ সালে প্রথম রাজরাজের সিংহাসন আরোহণের ফলে সংকটের সমাপ্তি ঘটে। প্রথম পরান্তকের মৃত্যুর পর রাজা হন পুত্র গণ্ডরাদিত্য। রাজনীতির চেয়ে ধর্ম ছিল তার কাছে প্রিয়। তার মৃত্যুর পর ভাই অরিঞ্জয় অল্পকাল রাজত্ব করেন। তার পরে মসনদে বসেন সুন্দর চোল। সুন্দরের আমলে উত্তর দিকে কিছুটা সাফল্য আসে। ৯৭৩ সালে তার মৃত্যুর পরে ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে উত্তম চোল ক্ষমতা নেন, সে টানাপড়েন ৯৮৫ পর্যন্ত ছিল। সে বছর রাজরাজের সিংহাসন প্রাপ্তি চোল সাম্রাজ্যের প্রকৃত গৌরবের সূচনা করে। সুন্দর চোলের পুত্র রাজরাজ (৯৮৫-১০১৪ সাল) ছিলেন বিজয়ালয়ের বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি। সরকার ও সেনাবাহিনীর সংগঠনে, শিল্পে ও স্থাপত্যে, ধর্মে ও সাহিত্যে এ যুগে স্মরণীয় কীর্তি অর্জিত হয়েছিল। তিনি ক্ষুদ্র চোল রাজ্যকে একটি বিস্তৃত, সুসংগঠিত, সুশাসিত, ধনৈশ্বর্য এবং সেনাবাহিনী ও নৌবল সমৃদ্ধ সাম্রাজ্যে পরিণত করেন।

রাজরাজ চোল ১০১২ সালে পুত্র রাজেন্দ্র চোলকে যুবরাজ পদে অভিষিক্ত করেন। এর ঠিক দুই বছর পর তার মৃত্যু হয়। রাজেন্দ্র চোল প্রথম দুই বছর তিনি পিতার সঙ্গে যোগ্যভাবে রাজত্ব করেন। উত্তরাধিকার সূত্রে বিস্তৃত সাম্রাজ্য লাভ করেন তিনি। তার সময়ে চোলরা নৌবহরের সাহায্যে সিংহল ও মালদ্বীপের ওপর নিয়ন্ত্রণ করত। বাণিজ্য চলত পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও চীনের সঙ্গে। সম্রাট হিসেবে তার উল্লেখযোগ্য সাফল্য সিংহল অভিযান। সিংহলকে তিনি চোল সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত করেন। তবে সে ক্ষমতা দীর্ঘ হয়নি। তার সময়েই আরব বণিকরা ভারতের পশ্চিম উপকূলের বাণিজ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং কেরলের শাসকদের সমর্থন লাভ করে। এদিকে রাজেন্দ্র চোল চালুক্যদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। বাংলার পাল বংশীয় শাসক মহীপাল জয়সিংহের পক্ষ অবলম্বন করায় রাজেন্দ্র চোল তার বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। মহীপালের বিরুদ্ধে রাজেন্দ্র চোলের এ অভিযান বাংলাদেশে স্থায়ী চিহ্ন রেখেছিল। রাজেন্দ্র চোলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে কিছুসংখ্যক কর্ণাট নরপতি পশ্চিম বাংলায় এসেছিলেন। তাদেরই বংশধর সামন্ত সেন পরবর্তী বাংলায় সেন বংশের শুরু করে। রাজেন্দ্র চোলের সময়ে রাজ্যে শান্তি অক্ষুণ্ন ছিল। তার উত্তরাধিকারীরা ১০৪৪-১০৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তারপর তার তিন পুত্র একের পর এক সিংহাসনে আরোহণ করেন। পিতার কাছ থেকে তারা যে বিস্তৃত সাম্রাজ্য লাভ করেন, তা মোটামুটি ভালোভাবেই রক্ষিত হয়। রাজেন্দ্র চোলের পর রাজাধিরাজ ১০৫৪ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। রাজত্বের বেশির ভাগ সময় তিনি সিংহলের শান্তি বিধানের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ১০৫৪ সালে অনুষ্ঠিত কৃষ্ণা তীরবর্তী কোপপমে রাজাধিরাজ মারাত্মকভাবে আহত হলে দ্বিতীয় রাজেন্দ্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং জয়লাভ করেন। দ্বিতীয় রাজেন্দ্রের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠান যুদ্ধ ক্ষেত্রেই অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় রাজেন্দ্র ছিলেন আজন্ম যোদ্ধা। তার যুদ্ধ প্রতিভা চোল সাম্রাজ্য রক্ষার ব্যয়িত হয়েছিল। তিনি রাজত্ব করেন ১০৬২ সাল পর্যন্ত। তিনি পশ্চিম চালুক্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করেননি। তার পরে বীররাজেন্দ্র ১০৭০ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। পশ্চিম চালুক্যদের সঙ্গে সংগ্রাম ছিল তার রাজত্বকালের মূল বিষয়। তবে বীররাজেন্দ্র শুধু যে পশ্চিম চালুক্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, এমন নয়। ১০৬৭ সালের অল্পকাল আগে তিনি সিংহল আক্রমণ করেন এবং তাতে অধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেন।

১০৭০ সালে বীররাজেন্দ্রর মৃত্যুর পর তার পুত্র অথিরাজেন্দ্র মাত্র কয়েক মাস রাজত্ব করেন। তার রাজত্বকাল এত সংক্ষিপ্ত হয়েছিল যে কেন ও কীভাবে পরবর্তী শাসক কুলোত্তঙ্গ চোল সিংহাসন অধিকার করেছিলেন, তা নিশ্চিত জানা যায় না। প্রথম কুলোত্তঙ্গ (১০৭০-১১২০ সাল) দীর্ঘ ৫০ বছর রাজত্ব করেন। তার রাজত্বকালে চোল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। অকারণ যুদ্ধে না করে তিনি জনসাধারণের কল্যাণের দিকে মন দিয়েছিলেন। তার রাজত্বের স্থায়ী ফল পরবর্তী শাসকদের রাজত্বকালে দেখা গিয়েছিল। তার পরে প্রায় এক শতাব্দীব্যাপী রাজ্য সুসংহত ছিল। আগের অবিরাম যুদ্ধ এ শতাব্দীকে কলঙ্কিত করেনি।

বিক্রম চোল ১১১৮ সাল থেকে তার রাজত্ব শুরু করেন, যদিও তার পিতা কুলোত্তঙ্গ তার পরও জীবিত ছিলেন। তার ১৭ বছরের রাজত্বকাল মোটামু‌টি শান্তিপূর্ণ ছিল। তিনি উত্তর ও পশ্চিম দিকে হৃত রাজ্য উদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। পশ্চিমের তুলনায় উত্তরে তার সাফল্য বেশি। তার রাজত্বের ষষ্ঠ বছরে প্রবল বন্যায় সাম্রাজ্যের সাধারণ মানুষ বিপন্ন হয়েছিল। বিক্রম চোলের পর মসনদে আসেন দ্বিতীয় কুলোত্তঙ্গ। ১১৩৩-১১৫০ পর্যন্ত তিনি শাসন পরিচালনা করেন শান্তি ও সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। চিদাম্বরমের শিব মন্দিরের কাজ তার সময়ই শেষ হয়। তার পরে ক্ষমতায় এসে দ্বিতীয় রাজরাজও শান্তির পথই অনুসরণ করেন। তবে কেন্দ্রীয় শাসনেও দুর্বলতার চিহ্ন ফুটে উঠতে থাকে। এর আগে চোল সম্রাটরা যে প্রবল প্রতাপশালী নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন, এ যুগে তা আর বলবৎ ছিল না। তৎকালীন লেখাগুলোয়ও চোল রাজাদের অসহায় অবস্থার পরিচয় পাওয়া যায়। ১১৭৩ সালে দ্বিতীয় রাজরাজের রাজত্ব শেষ হয়। তার পরের চোল রাজা দ্বিতীয় রাজাধিরাজ। তিনি রাজরাজের পুত্র ছিলেন না, ছিলেন বিক্রম চোলের পৌত্র। তার বংশধরদের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তি না থাকায় রাজরাজ রাজাধিরাজকে মনোনীত করেছিলেন। এ মনোনয়নের অল্পকালের মধ্যে পাণ্ড্য রাজ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল এবং ভারতের মূল ভূভাগে সিংহলের প্রভাব প্রতিহত করার জন্য চোলদের এ গৃহযুদ্ধে অংশ নিতে হয়েছিল। দ্বিতীয় রাজরাজের মৃত্যুর আগেই এ যুদ্ধ শেষ হয়।

দ্বিতীয় রাজাধিরাজ ও তৃতীয় কুলোত্তঙ্গ ১২১৬ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। দ্বিতীয় রাজাধিরাজের সিংহাসন আরোহণের অল্পকিছু পরেই পাণ্ড্য রাজ্যের সিংহাসনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এ গৃহযুদ্ধে সিংহলরাজ ও চোলরাজ দুই বিরোধী পক্ষে যোগ দেন। এতে কোনো রাজ্যের পক্ষই শুভ হয়নি। পাণ্ড্যরা গৃহযুদ্ধের আগুনে শুচিশুদ্ধ হয়ে নতুন প্রাণশক্তি ফিরে পায়। শেষ পর্যন্ত চোল ও সিংহল রাজ্য দুই-ই গ্রাস করে নেয়। অবশ্য তৃতীয় কুলোত্তঙ্গের রাজত্বকাল ব্যক্তিগত যোগ্যতার জয়লাভের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি যখন সিংহাসন লাভ করেন, তখন চারদিকে ভাঙনের লক্ষণগুলো তীব্র আকার ধারণ করেছে। উচ্চাভিলাষী রাজারা শুধু স্বাধীনতা লাভেই সন্তুষ্ট ছিলেন না, রাজ্য সম্প্রসারণের জন্য আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। তৃতীয় কুলোত্তঙ্গ ছিলেন চোল ইতিহাসের শেষ স্মরণীয় রাজা। তার পরেই দুর্বল রাজার সময় চোল সামাজ্য ভেগে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তাকে অন্তত তিনবার মুখোমুখি হতে হয় পাণ্ড্য রাজার সঙ্গে। রাজত্বের শেষ দিকে ১২১৬ সালে জটাবর্মণের মৃত্যুর পর তার ভাই সুন্দর পাণ্ড্য সিংহাসনে বসেন। তিনি চোল রাজ্যের চিদাম্বরম পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। অভিযানের সময় তিনি ব্যাপকভাবে হত্যা ও ধ্বংসলীলায় মেতে ছিলেন। তৃতীয় কুলোত্তঙ্গ সাময়িকভাবে পলায়ন করলে এবং শেষ পর্যন্ত সুন্দর পাণ্ড্যকে অধিপতি হিসেবে মেনে নেবেন, এ শর্তে সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হন। ১২১৮ সাল তার মৃত্যু হয়।

তৃতীয় কুলোত্তঙ্গের পর মসনদে বসেন তৃতীয় রাজরাজ এবং আরো পরে তৃতীয় রাজেন্দ্র। তারা দুজন ১২১৬-৭৯ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তৃতীয় রাজরাজের রাজত্বকালে একের পর এক বিপর্যয় ঘটে। ভেতর ও বাইর থেকে আঘাত আসে রাজ্যের ওপর। অধীন সামন্তরাও সহজেই আনুগত্য পরিবর্তন অথবা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তৃতীয় রাজরাজ শুধু দুর্বল ছিলেন না, তিনি নির্বোধ ছিলেন। তার আমলে বিশৃঙ্খলা, রাজদ্রোহ, সামন্ত নরপতিদের পারস্পরিক সুবিধার জন্য রাজার অজ্ঞাতসারে চুক্তি, প্রকাশ্য রাজকীয় নির্দেশ অমান্য করা চোল রাজ্যকে পঙ্গু করে ফেলেছিল। সেদিক থেকে তৃতীয় রাজেন্দ্র কিছুটা যোগ্য ছিলেন। তিনি চোল রাজ্যের গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন এবং সাময়িকভাবে সফল হয়েছিলেন। তবে বিজেতা জটাবর্মণ সুন্দর পাণ্ড্য সিংহাসন আরোহণ করলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে বাঁক নেয়। ১২৫৮ সালে তিনি চোল রাজাকে করদানে বাধ্য করেন। ১২৭৯ সালে একটি যুদ্ধে সুন্দর পাণ্ড্যর উত্তরাধিকারী কুলশেখরের কাছে পরাজিত হন। এর পরে তৃতীয় রাজেন্দ্র অথবা চোলদের কথা আর শোনা যায় না। চোল রাজ্য পাণ্ড্য সাম্রাজ্যের সঙ্গে মিশে যায়। সমাপ্তি ঘটে এক গৌরবময় অধ্যায়ের। চোল শক্তির অভ্যুদয়, সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা ও ৩৫০ বছরের ইতিহাস দক্ষিণ ভারতের ইতিহাসকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে।

আহমেদ দীন রুমি: লেখক