সিল্করুট

আরবীয় উদের বিশ্বভ্রমণ

নিজাম আশ শামস

সিরিয়ায় তৈরি উদ। কারিগর: আবদো নাহাত, ১৯২১

হজরত আদমের ষষ্ঠ অধস্তন বংশধর লামাক। আদমের পুত্র কাবিলের ধারায় তার জন্ম। একটি ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে লামাকের মাথায় উদ তৈরি করার ধারণা আসে। এক সময় তিনি চমৎকার বাদ্যযন্ত্রটি তৈরি করে ফেললেন। লামাকের সে আবিষ্কার এখন পর্যন্ত বাদ্যযন্ত্রের জগতে দিশারি হয়ে আছে। বাইবেলে ঘটনার উল্লেখ আছে। ব্রিটিশ সংগীতবিশারদ স্ট্যানলি স্যাডি তার দ্য নিউ গ্রোভ ডিকশনারি অব মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস বইয়ের তৃতীয় ভলিউমে কাহিনীটি বর্ণনা করেছেন। তবে উদ আবিষ্কার নিয়ে আরো অনেক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, লামাক উদ তৈরি করেছিলেন। আর তার মেয়ে বীণা তৈরি করেছিলেন। অনেকে আবার মানিকে উদ আবিষ্কারের কৃতিত্ব দিতে চান। মানি ছিলেন (২১৬-২৭৭ খ্রিস্টাব্দ) ইরানের একজন ধর্মপ্রচারক। তিনি মানিবাদ-এর প্রবক্তা। তিনি একজন সংগীতজ্ঞও ছিলেন। উদ আবিষ্কার নিয়ে আরেকটি চমকপ্রদ মত আছে। সে মত অনুসারে, মানুষের মাঝে উদ এসেছে সরাসরি শয়তানের হাত ধরে। হজরত দাউদের অনুসারীদের শয়তান বাদ্যযন্ত্র দিয়ে প্রলুব্ধ করেছিল। বিনিময়ে সে তাদের বাদ্যযন্ত্রগুলো তাকে দিতে বলেছিল। তবে গ্রিক দর্শন দ্বারা প্রভাবিত সংস্কৃতিতে উদ আবিষ্কারের কৃতিত্ব গ্রিক দার্শনিকদের দেয়া হয়েছে।

আরবের সংগীত যদি সাম্রাজ্য হয়, নিঃসন্দেহে এর প্রকৃত শাসক হলো উদ। প্রায়ই একে বাদ্যযন্ত্রের রাজা বলে অভিহিত করা হয়। উদ থেকে নির্গত সুর আরবের ঐতিহ্যবাহী সংগীতের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তবে আরবে উদ কোত্থেকে এল? প্রশ্নের উত্তরে তাত্ত্বিকরা বলেন, পারস্য থেকে উদ আরবে এসেছে। আরবে উদের যাত্রা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় বা প্রথম শতকে। সেখানকার সংগীতের উত্কর্ষে বাদ্যযন্ত্রের প্রভাব অনস্বীকার্য। ১৪ শতকে মুসলিম সংগীতবিশারদদের রচিত গ্রন্থগুলোয় উদের আবিষ্কার বা সৃষ্টি সম্পর্কে জানা যায়। তাদের উপস্থাপিত তত্ত্ব বাইবেলে উল্লিখিত তত্ত্ব থেকে ভিন্ন। তেমনই দুজন প্রখ্যাত লেখক হলেন আবুল ফিদা আবুল ওয়ালিদ। তাদের মতে, ২৪১-৭২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উদের উত্পত্তি। অনেকের মতে, উদ সপ্তম শতাব্দীতে এশিয়া থেকে আরবে হিজরত করেছে। গুঝেং নামের একটি চীনা বাদ্যযন্ত্রের অনুকরণে উদের উত্পত্তি বলে তারা মনে করেন। আমেরিকার সংগীতজ্ঞ হ্যারল্ড জি. হ্যাগোপিয়ান বলেন, কাসাইট শাসনামলে (১৬০০-১১৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) মেসোপটেমিয়ায় প্রথম উদের উত্পত্তি ঘটে। এটি ছিল ডিম্বাকৃতির। অন্যদিকে লেখক সাইমন জ্যারগি বলেন, সুমেরীয় ব্যাবিলনীয়দের প্রিয় বাদ্যযন্ত্র ছিল উদ। ফারাওদের শাসনামলে মিসরে উদের প্রচলন ছিল। সেখানে যন্ত্রটি নেফার নামে পরিচিত ছিল। ১৫০১-১৪৭৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সেন-মুৎ নামের একজন শিক্ষকের সমাধিতে নেফারের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তিনি মিসরের এক রাজকুমারী নেফেরুরার গৃহশিক্ষক ছিলেন। তৎকালে শিল্পকলায় সেন-মুৎ-এর ব্যাপক প্রভাব ছিল। হ্যারল্ড জি. হ্যাগোপিয়ান বলেন, আনাতোলিয়ার হিট্টি সাম্রাজ্যের (১৪৬০-১১৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) একটি কারুশিল্পে উদের প্রতিলিপি দেখা যায়। এটি তুলনামূলক বড়। বাদ্যযন্ত্রটির বর্তমান আকার আকৃতির সঙ্গে এর দারুণ সাদৃশ্য। সংগীতবিশারদদের মতে, চীনে পৌঁছে উদ পিপা নাম ধারণ করে। ২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চীনের হান সাম্রাজ্যে ব্যবহূত বাদ্যযন্ত্র ছিল এটি। পরবর্তী সময়ে এটি জাপানে যায়। সেখানে বাদ্যযন্ত্রটির নাম হয় বিওয়া বিশ্বভ্রমণের ধারাবাহিকতায় রাশিয়ায়ও এর পা পড়েছে। সেখানে বাদ্যযন্ত্রটি বালালাইকা নামে পরিচিত। ইন্দোনেশিয়ায় এর নাম গাম্বুস তবে স্ট্যানলি স্যাডি বলেন, উদের যাত্রা প্রধানত ইরাকের দক্ষিণতম প্রান্তে। আর সপ্তম শতাব্দীতে উদ আরব উপদ্বীপে ছড়িয়ে পড়ে। যা- হোক, মক্কায় খাটো ঘাড়বিশিষ্ট উদের ব্যবহারের কথা নবম দশম শতাব্দীর বইগুলোয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। আধুনিক উদের জনক বলা যেতে পারে আল নদরকে। তিনি উদের বর্তমান রূপটি দেন। তার হাত ধরেই বাদ্যযন্ত্রটি ইরাক থেকে মক্কায় প্রবেশ করে। তবে বাদ্যযন্ত্রটিকে আরো সুসংহত কাঠামো দেন মনসুর জালজাল। তিনি আব্বাসীয় আমলে একজন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ ছিলেন। তুরস্কেও ধরনের একটি বাদ্যযন্ত্র আছে। এর নাম কোপুজ বাদ্যযন্ত্রের জাদুকরী ক্ষমতা আছে বলে তুর্কিরা বিশ্বাস করত। তাই তারা যুদ্ধক্ষেত্রে বাদ্যযন্ত্র বাজাত। মজার ব্যাপার হলো রোগের চিকিৎসায়ও উদের ব্যবহার ছিল। নবম শতাব্দীতে মাওয়ারদি নামে বাগদাদে একজন আইনজীবী ছিলেন। তিনি চিকিৎসা ক্ষেত্রে উদ ব্যবহারের প্রশংসা করেছেন। তবে উদের এমন ব্যবহারের বিরুদ্ধে আপত্তিও ছিল। এগারো শতকের ধর্মতাত্ত্বিক ইবনে হাজাম মুসলিম শাসনভুক্ত স্পেনে চিকিৎসা ক্ষেত্রে উদ ব্যবহারকে অনুমোদন দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি ধর্মীয় আইনের ভিত্তিতে এর বিরোধিতাকারীদের প্রতিহত করেছিলেন। উনিশ শতক পর্যন্ত রোগের চিকিৎসায় উদ ব্যবহার প্রচলিত ছিল। মুহাম্মদ শিহাবউদ্দিন নামে একজন লেখক তার সফিনাতুল মুলক বইয়ে উল্লেখ করেছেন, উদের সুর শরীরকে উজ্জীবিত করে। এটি শরীরের তাপমাত্রাকে সাম্যাবস্থায় নিয়ে আসে। এটি একটি চমৎকার প্রতিষেধক। এটি হূিপণ্ডকে স্বাভাবিক সুস্থ রাখে।

নবম শতাব্দীতে বাগদাদে উদকে প্রতিষ্ঠিত করেন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ ইব্রাহিম আল মাওসিলি। তিনি তার পুত্র ইসহাক আল মাওসিলি আব্বাসীয় শাসনামলে অভিজাত মানী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ইসহাকের বিখ্যাত এক শিষ্যের নাম জিরিয়াব। নানা কারণে বাগদাদ থেকে স্পেনে হিজরত করেন তিনি। তার উপস্থিতি প্রভাবে কর্ডোভা, গ্রানাডার মতো স্পেনের শহরগুলো শিল্প, সংস্কৃতি ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়। মধ্যযুগের ইউরোপকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেন জিরিয়াব। কর্ডোভার রাজদরবারে তিনি থিতু হন। সেখানে গ্রিক, পারস্য আরব উপাদানের সমন্বয়ে তিনি সংগীতের নতুন ধারণা হাজির করেন। জিরিয়াবের অবদান ইউরোপের শাস্ত্রীয় সংগীতের ভিত্তি তৈরি করেছে। তার হাত ধরেই স্পেনে উদের যাত্রা হয়েছিল। সেখান থেকে উপকূলীয় বাণিজ্যের পথ ধরে উদ ভেনিসে প্রবেশ করে। ভেনিস থেকে নাইট টেম্পলারদের মাধ্যমে বাদ্যযন্ত্রটি ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে চলে আসে। কালের পরিক্রমায় অবশেষে তা ব্রিটেনে উপনীত হয়। এলিজাবেথীয় যুগে এসে উদ কিছুটা বিবর্তিত হয়ে লুট- (বীণাজাতীয় বাদ্যযন্ত্র) পরিণত হয়। কালক্রমে উদ আরব সংগীতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। আর লুটকে ঘিরে আবর্তিত হতে থাকে ইউরোপের সংগীতজগৎ।

উদের ইতিহাস কিছুটা জানা হলো। এবার উদ নামের উত্পত্তির দিকে একটু নজর দেয়া যাক। আরবি উদ নামটির উত্পত্তি নিয়ে নানা মুনির নানা মত আছে। কারো মতে, উদ শব্দটি ফার্সি রদ বা রুদ থেকে আরবিতে আত্তীকৃত হয়েছে। এর অর্থ তার। গবেষক রিচার্ড জে. ডামব্রিলের মতে, উদ শব্দটি সংস্কৃত রুদ্রি শব্দ থেকে এসেছে। সংস্কৃত শব্দটি দ্বারা তারের বাদ্যযন্ত্রকে বোঝানো হয়। তবে দুই মত যারা দিয়েছেন, তারা কেউই ভাষাবিজ্ঞানী নন। সেমেটিক ভাষার বিশেষজ্ঞদের মতে, আরবি উদ শব্দটি সিরীয় আউদা শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ কাঠি এর আরেকটি অর্থ হলো জ্বলন্ত কাঠ হিব্রু ভাষায়ও শব্দের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। আগুনের মধ্যে থাকা কাঠের টুকরোকে নাড়াতে ব্যবহূত কাঠিকে বোঝাতে প্রাচীন হিব্রুভাষীদের মধ্যে উদ শব্দটির প্রচলন ছিল। ব্রিটিশ সংগীতবিশারদ হেনরি জর্জ ফার্মারের মতে, উদ শব্দটি আরবি আল আউদা শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ প্রত্যাবর্তন সাধারণ অর্থে, উদ বলতে কাঠের পাতলা টুকরোকে বোঝানো হয়। পারস্যে বাদ্যযন্ত্র বারবাত বা বারবুদ নামে পরিচিত। সেখান থেকেও উদ নামের উদ্ভব ঘটতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন। সাসানীয় শাসনামলে খাটো ঘাড়বিশিষ্ট বীণাজাতীয় এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র বোঝাতে বারবাত বা বারবুদ শব্দটি ব্যবহূত হতো। আধুনিক কালে উদের অন্তত তিনটি রূপ লক্ষ করা যায়। আরব, তুরস্ক পারস্যের তিন ধরনের উদ সমজাতীয় হলেও তাদের মধ্যে কিছুটা বৈচিত্র্য আছে। তুর্কি উদ আকার শব্দের দিক থেকে আরবি উদের থেকে স্বতন্ত্র। তুর্কি উদ আরবি উদের তুলনায় অনেক উঁচু তারে বাঁধা থাকে। ফলে তা থেকে নির্গত শব্দ অনেক বেশি জোরালো স্পষ্ট হয়। তুর্কি উদ সাধারণত আরবি উদের থেকে আকারে ছোট হয়। তাই তা বেশি হালকা। ধরতেও সুবিধা। তাই শিক্ষানবিশরা শেখার জন্য তুর্কি উদকেই বেশি পছন্দ করে। আরবি উদ তৈরিতে সাধারণত দেবদারু গাছ ব্যবহূত হয়। উদের আরো কয়েকটি রূপভেদ আছে। এক ধরনের উদকে বলা হয় জেন উদ এটি নারীদের উদ নামে পরিচিত। সাধারণত ছোট হাত আঙুলযুক্ত মানুষের সুবিধার্থে উদের এমন নকশা করা হয়। সাধারণত আরবি উদে স্কেলের দৈর্ঘ্য ৬০-৬২ সেন্টিমিটার হয়। তুর্কি উদের ক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য ৫৮ দশমিক সেন্টিমিটার। পরিবর্তে জেন উদে স্কেলের দৈর্ঘ্য হয় ৫৫-৫৭ সেন্টিমিটার। উদ আরবি নামে উত্তর আফ্রিকায় উদের একটি প্রকার আছে। এর ঘাড় অধিকতর লম্বা। আরেকটি প্রকারের নাম উদ রমল উদের একটি প্রকারের নাম উদ কুমেত্রা এটি গর্ভবতী উদ বা নাশপাতি উদ নামেও পরিচিত। এর আকৃতির কারণে এমন নামকরণ করা হয়েছে। তবে এমনটি বর্তমানে বিরল। একসময় মিসরে ধরনের উদের বেশ প্রচলন ছিল। বর্তমানে ইলেকট্রিক উদের ব্যবহারও লক্ষ করা যায়। এটি ইলেকট্রিক গিটারের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। স্পিড ক্যারাভান নামের একটি ব্যান্ড ধরনের ইলেকট্রিক উদ ব্যবহার কর।

উদের গঠন সম্পর্কে এবার একটু আলোচনা করা যাক। বাদ্যযন্ত্র তৈরির জন্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাঠের টুকরো বাছাই করা হয়। তারপর সে টুকরোগুলোকে নিপুণভাবে জুড়ে চমৎকার বাদ্যযন্ত্রটি তৈরি করা হয়। উদের খোলটি পাতলা কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত আখরোট বা ম্যাপল গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। অঞ্চলভেদে উদের আকৃতি গঠনে পার্থক্য হয়। উদাহরণস্বরূপ, মিসরীয় উদ গঠনগত দিক দিয়ে সিরীয় উদের থেকে স্বতন্ত্র। মিসরীয় উদের খোলের নিচের দিকটা একটু বেশি সোজা হয়। অন্যদিকে আরবি উদের নিচের অংশ অনেক বেশি গোলাকার। উদের পেগবক্সটি এর ঘাড়ের সঙ্গে ৯০ ডিগ্রি কোণে সংযুক্ত থাকে। ধরনের গঠন পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে উদের পার্থক্য তৈরি করেছে। ৯০ ডিগ্রি কোণের কারণে তারগুলো একদম টান টান থাকে। ফলে নির্গত সুরের তীব্রতা অনেক বেড়ে যায়। আগে উদের তারগুলো সুতা দিয়ে তৈরি হতো। বর্তমানে তার তৈরিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার শুরু হয়েছে। আধুনিক উদে ১১ অথবা ১৩টি তার থাকে। এগুলো পাঁচ কিংবা ছয়টি গুচ্ছে সজ্জিত থাকে। উদের ব্রিজটি কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। তার টানা ধরে রাখার জন্য বাদ্যযন্ত্রটির নিচের অংশে এটি সংযুক্ত থাকে। ব্রিজের আবার দুটি প্রকারভেদ আছে। ফ্লোটিং ব্রিজ ফিক্সড ব্রিজ উদের ওপরের অংশে এক থেকে তিনটি সাউন্ড হোল থাকে। উদের ফিঙ্গারবোর্ডটি শক্ত কাঠ দিয়ে তৈরি। এটি আঙুলগুলোকে সহজে সঞ্চালিত হতে সাহায্য করে। তুর্কি উদে ফিঙ্গারবোর্ড তৈরির জন্য আবলুস কাঠ ব্যবহার হয়। তবে আরবি উদে এক্ষেত্রে আখরোট গাছের কাঠই ব্যবহার করা হয়। উদ তৈরির জন্য অনেক বেশি কারিগরি দক্ষতা থাকতে হয়। বিভিন্ন অংশের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাঠ বাছাই করে তা সঠিক মাপে কাটতে হয়। তারপর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা শুকাতে হয়। পরে দীর্ঘ সময় ধরে সচেতনতার সঙ্গে উদ তৈরি করা হয়।

সেই কবে কোনকালে আরব বেদুইনের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটেছিল কাঠের তৈরি বাদ্যযন্ত্রটির। বিপুল বিস্ময় আগ্রহ নিয়ে সে তাকে ধারণ করেছিল। সারা দেহে বুলিয়েছিল স্নেহের পরশ। আপন খেয়ালে তুলেছিল সুরের ঝংকার। আরবের মরুভূমিতে ঝড় তোলা সে সুর কালক্রমে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। উত্তরসূরিদের দিশা হয়ে এখন পর্যন্ত স্বমহিমায় টিকে আছে শতাব্দীপ্রাচীন উদ।

 

নিজাম আশ শামস: লেখক অনুবাদক