জ্বালানি নেটওয়ার্কের আত্মপ্রকাশ

ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য নাগরিক সমাজের ১৪ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

টেকসই ও ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে দেশের জ্বালানিবিষয়ক সর্ববৃহৎ নেটওয়ার্ক ‘জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (জেটনেট-বিডি)’। ৭৫টি নাগরিক সংগঠন (সিএসও), জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, স্থানীয় সংগঠন, জ্বালানি খাত বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবিদদের নিয়ে এ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ নেটওয়ার্কের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সময়  ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য ১৪টি দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও পেট্রোলিয়াম প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম, রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের প্রধান বিশ্লেষক (জ্বালানি) শফিকুল আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খানসহ দেশের বিশিষ্ট ২৩ জনের একটি উপদেষ্টামণ্ডলী প্যানেল এ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

দেশে জ্বালানি সুশাসন, সাশ্রয়ী জ্বালানি, সবুজ কর্মসংস্থান, ন্যায্য ও সবুজ জ্বালানি রূপান্তরে নারীদের অংশগ্রহণ, জ্বালানি দক্ষতা, জ্বালানি সংরক্ষণ, পরিবেশ ও জনপদের সুরক্ষা, ক্যাম্পেইনসহ আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে জেটনেট-বিডি। নেটওয়ার্কের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন (জেট) টিমের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘জেটনেট-বিডির কার্যকরী লক্ষ্য হলো সুশীল সমাজের জোরালো কণ্ঠস্বর তুলে ধরা এবং একটি সবুজ ও টেকসই জ্বালানিনির্ভর ভবিষ্যতের জন্য সবাইকে সংগঠিত করা। সহযোগিতামূলক এ নেটওয়ার্ক নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রচার, সদস্য সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত এবং নীতি-নির্ধারকদের প্রভাবিত করার মধ্য দিয়ে দেশে একটি টেকসই জ্বালানি রূপান্তর অর্জনে নিবেদিত থাকবে।’  

নেটওয়ার্কের উদ্বোধন শেষে জ্বালানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য ১৪ দফা নাগরিক দাবিনামা প্রচারণার শুরু ঘোষণা করা হয়। পরে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ’-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সঞ্চালনায় ‘চাওয়া থেকে বাস্তবতা: বাংলাদেশের জ্বালানির ভবিষ্যৎ গঠন’ বিষয়ক সংলাপ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা এ আলোচনায় অংশ নেন।  এ সম্মিলিত উদ্যোগে সঙ্গে সরকারকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে ফারাহ্ কবির বলেন, ‘জেটনেট-বিডি’র এ যাত্রায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।’ 

দেশের জ্বালানি খাতে সুশাসন আনয়নে সরকারের সঙ্গে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সংলাপের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে জেটনেট-বিডি নিবেদিতভাবে কাজ করবে উল্লেখ করে ড. মোহাম্মদ তামিম বলেন, ‘গত সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের হোম সোলার সিস্টেম পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে পড়েছে।’

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আগামী দিনে কয়লাভিত্তিক নতুন বিদ্যৎ কেন্দ্র যাতে না হয় এবং বিদ্যমান প্রকল্পগুলো যাতে দ্রুত অবসরে যায়–এ বিষয়ে সরকারকে কীভাবে পরামর্শ দেয়া যায়, তা বিবেচনা করে দেখতে হবে।’

সোলারিক গ্রুপের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী নাজনীন আক্তার বলেন, ‘শিল্প খাতে যেখানে প্রতি ইউনিট ১১-১২ টাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, যেখানে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে মাত্র ৩-৪ টাকায় নিজ নিজ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন