বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র, জাহাজ নির্মাণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে বিশ্বব্যাংককে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে সরকার। গতকাল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) আবদুলায়ে সেকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। এ সময় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন পাট ও বস্ত্র এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চান শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
নৌ-পরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সোনালি আঁশ পাট একটা সময় ছিল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এ ধারায় কিছুটা ছেদ পড়লেও সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের ৭০ ভাগ বিদেশে রফতানি হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের শিল্প-কারখানাগুলো কৌশলগতভাবে যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। সে কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত সহজে এখানে বিনিয়োগ করতে পারে।’
বৈঠকে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘জাহাজ নির্মাণ বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় এবং ক্রমবিকাশমান শিল্প। স্থানীয়ভাবে তৈরি জাহাজ রফতানি করার মাধ্যমে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এটি প্রধান প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পে পরিণত হয়েছে।’
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, ‘আগামীতে পাট, বস্ত্র, শিপিংসহ সব সেক্টরেই নতুন নতুন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।’
এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এজন্য এ শিল্পে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের আরো সক্রিয় করা হবে।’
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বিশ্বব্যাংককে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, চামড়া, সার ও চিনি শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
জবাবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা জানান, সামনের দিনগুলোতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করতে চান তারা। এজন্য শিল্প সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। তারা শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সোলার প্যানেল স্থাপনের পরামর্শ দেন। এ সময় বাংলাদেশে বিদ্যমান জাতীয় শিল্পনীতি হালনাগাদ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।