নীতি আলোচনা

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পুরনো পথ পাল্টাতে হবে

আনু মুহাম্মদ

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে সেটি কেবল বিগত সরকারের শাসনামলের সৃষ্ট নয়। প্রকৃতপক্ষে আশির দশক থেকেই এর সূত্রপাত। সেই সময় থেকে এ খাত নিয়ে দুটি দৃষ্টিভঙ্গির লড়াই তৈরি হয়—এক. এ খাত কি নব্য উদারনৈতিক পথে বা মুনাফা বানানোর খাত হিসেবে অর্থাৎ দেশী-বিদেশী কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বার্থে চলবে? নাকি দুই. সর্বজনের মালিকানায় সর্বজনের স্বার্থে এ খাত দেশের মানুষকে, শিল্প ও কৃষিসহ সব কাজে সুলভে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার ব্যবস্থা করবে?

প্রথম দৃষ্টিভঙ্গির পেছনে ছিল দেশী-বিদেশী ব্যবসায়িক স্বার্থ। বিশ্বব্যাংকের হাত ধরে প্রথম দৃষ্টিভঙ্গিই নীতিনির্ধারণে প্রাধান্য বিস্তার করে। আশির দশকের শুরুতে সমীক্ষা আর টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে এ খাতকে বেসরকারীকরণ ও এতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল বিশ্বব্যাংকের। তাদের যুক্তি ছিল এ খাতে বিদেশী বিনিয়োগ এলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমে যাবে, আর্থিক অপচয় কমার পাশাপাশি দক্ষতা বাড়বে, সামগ্রিক অর্থনীতি গতিশীল হবে। এসব যুক্তি মেনে নব্বই দশক থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানি নিয়ে বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে ‘উৎপাদন অংশীদারী চুক্তি’ স্বাক্ষর শুরু হয়। নব্বই দশকের শুরুর দিকে হয় প্রথমবারের মতো কয়েকটি চুক্তি, এ দশকের শেষে হয় আরেক দফা চুক্তি। দুই সময়ে দুই সরকার ছিল, তাতে কিন্তু কোনো পার্থক্য তৈরি হয়নি। ২০০০ সালের পর যে সরকারগুলো এসেছে সেখানেও ওই ধারাবাহিকতা ছিল। 

বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর তাদের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন শুরু এবং আরো বেসরকারীকরণের পর দেখা গেল, ‘এগুলো হলে দাম কমবে, দক্ষতা বাড়বে, শৃঙ্খলা আসবে, দুর্নীতি কমবে’ বিশ্বব্যাংকের এসব যুক্তি পুরোপুরি ভুল। বরং পুরো খাত দেশী-বিদেশী কোম্পানির উচ্চ মুনাফা ও লুণ্ঠনের ক্ষেত্রে পরিণত হলো। ফলে উল্টো গ্যাসের ক্ষেত্রে অপচয় ও দাম বাড়ল, বিদ্যুতের দাম বাড়ল—ক্রমাগত বাড়তেই থাকল। পুরো অর্থনীতির ঋণগ্রস্ততা বাড়ল এবং দক্ষতারও কোনো উন্নতি হলো না। দক্ষতার কথা বলে অনেক বেশি দামের চুক্তি করে আনা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি অক্সিডেন্টাল মৌলভীবাজারের মাগুরছড়ায় বিস্ফোরণ ঘটাল, সুনামগঞ্জের টেংরাটিলায় বিস্ফোরণ ঘটাল কানাডার কোম্পানি। যার যথাযথ ক্ষতিপূরণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। অথচ এরা নষ্ট করেছে দেড় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ গ্যাস। মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টাল, ইউনোকাল, শেভরন ও নাইকো—এদের সবারই এতে দায় আছে। কোনো সরকার এ দায়ের কথা বলেনি। 

এ ধারার বিনিয়োগ ও বেসরকারীকরণের ভয়াবহ পর্ব আমরা দেখেছি গত দেড় দশকে। ২০১০ সালে লোডশেডিং দূর করার অজুহাত দিয়ে সরকার কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল বিদ্যুৎ চুক্তি করতে থাকে। সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে কিছু ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে ব্যবসা দেয়ার জন্য এগুলো করা হয়। আমরা সেগুলো বাতিলের দাবি জানিয়ে সংকট সমাধানে বিকল্প উপায় দেখিয়ে দিয়েছিলাম। সেগুলোর মধ্যে ছিল—বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সংস্কার, গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে কিছু বিকল্প পথ ইত্যাদি। সরকার শোনেনি। আর ‌এ সময় থেকেই দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বিধান বৃদ্ধি (বিশেষ আইন) আইন’-এর অধীনে সরকার একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে থাকে। এ আইনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত, চুক্তি, প্রকল্প তা যতই জাতীয় স্বার্থবিরোধী হোক তা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ বা আদালতে যাওয়ার পথ বন্ধ করা হয়। ফলে এ দায়মুক্তি আইনই এ খাতে সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের বর্ম হিসেবে কাজ করতে থাকে। এর সঙ্গে সরকার জাপানের জাইকা দিয়ে এ খাতের মহাপরিকল্পনা করেছে, যেখানে শতভাগ বিশেষজ্ঞ বিদেশী। এ মহাপরিকল্পনায় কয়লাভিত্তিক ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এবং এলএনজি আমদানির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। 

গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে মনোযোগ কিংবা গুরুত্ব না দিয়ে ৫০ গুণ বা আরো বেশি দামে এলএনজি আমদানি শুরু করা হয়। গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দুর্বলতার কথা বলে এর সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হতে থাকে একের পর এক। আমাদের উপকূলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সবচেয়ে বেশি, সেই উপকূলজুড়ে সুন্দরবন থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বিপদ আরো বাড়ানো হলো। বলাই বাহুল্য, এ পথে বিদ্যুৎ সংকটের টেকসই সমাধান হয়নি, উপরন্তু দেশের মানুষের জন্য তিনটি বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এক. বিশাল আর্থিক বোঝা, যা দীর্ঘদিন দেশের মানুষকে বইতে হবে। দুই. দেশের ঘনবসতি, প্রাণ-প্রকৃতি, নদ-নদী সবকিছু ভয়ংকর আক্রমণের মুখে ফেলা হয়েছে এবং তিন. পুরো অর্থনীতিতে ব্যয় বৃদ্ধির চাপ। 

রামপাল, পায়রা, বাঁশখালী ও মাতারবাড়ীসহ কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি ব্যাপক। এ ধরনের প্রকল্পের জন্য অত্যাবশ্যক পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন যথাযথভাবে করা হয়নি। এগুলো নিয়ে পর্যালোচনা কিংবা জনগণের সম্মতি নেয়ার যে ন্যূনতম শর্ত আছে সেগুলোও মানা হয়নি। ক্ষতিপূরণও ঠিকভাবে দেয়া হয়নি। প্রকল্পগুলো নিয়ে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ মতামতও গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ১০ বছর ধরে আন্দোলন হয়েছে এবং সুন্দরবনের ওপর কী ভয়াবহ প্রভাব পড়বে তার বিস্তারিত গবেষণা হয়েছে, সেগুলোর কোনো কিছুই সরকার শোনেনি। 

দুর্নীতি ও কমিশন নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে অনেক বেশি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি, যার ৯০ শতাংশ রুশ সরকারের ঋণ। এ কেন্দ্র থেকে কী বিপদ আসতে পারে কিংবা কী সতর্কতা দরকার, তা দেশের মানুষকে জানানো হয়নি। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় জনসংখ্যার হিসাবে এ প্রকল্পের জন্য এক কোটির মতো মানুষ ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। অথচ এ প্রকল্পেও কর্মকর্তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির নামেও অনেক বেশি দামে বেক্সিমকোসহ বেশকিছু কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে চুক্তির মেয়াদ ৩০ বছর অর্থাৎ দীর্ঘকালীন লুটপাট ও জমি দখলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে ভারতে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায় সেখানে বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়; কেনার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে। আর এসব নিয়ে কথা বলা বন্ধ করতে করা হয়েছে ডিজিটাল/সাইবার সিকিউরিটি আইন। 

বোঝাই যায় যে এ প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল না। এর পেছনে মূলত চারটি উদ্দেশ্য কাজ করেছে। এগুলো হলো—এক. বিনা নির্বাচনে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে হলে সরকারের আন্তর্জাতিক সমর্থন দরকার। সেজন্য ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াকে খুশি রাখা। দুই. সরকারঘনিষ্ঠ দেশের বড় বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে দ্রুত অর্থবিত্ত বানানোর পথ করে দেয়া। তিন. সরকারের প্রভাবশালী লোকদের জন্য কমিশন আয়। চার. ‘উন্নয়নের’ ঢোল পেটানো। 

এসবের ফলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম দফায় দফায় কয়েক গুণ বেড়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সরবরাহ প্রভাবের কারণে অন্য সবকিছুরই দাম বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সে তুলনায় জনগণের বেতন ও প্রকৃত আয় বাড়েনি। তাই আপাতদৃষ্টিতে দেশের জিডিপি ও বিনিয়োগ বাড়লেও জনগণের ওপর প্রবল চাপ কমেনি। আবার বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। কিছু গোষ্ঠী বিদ্যুৎ জোগান না দিয়েও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লক্ষ কোটি টাকা পকেটে ভরেছে।

এ খাত নিয়ে বিভিন্ন সরকারের এ ধারার ভূমিকার বিপরীতে আমরা গত ২০ বছরে, ওপরে নির্দেশিত দ্বিতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে, গ্যাস রফতানি, জমি-পানি-পরিবেশ বিনাশী উন্মুক্ত কয়লা খনি, সুন্দরবনবিনাশী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ জনস্বার্থবিরোধী সব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জনমত ও গণ-আন্দোলন তৈরি করেছি। এক পর্যায়ে দেশী ও বিদেশী স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে সরকারি মহাপরিকল্পনার বিপরীতে টেকসই বিকল্প গবেষণা ও অনুসন্ধানও করেছি। দেশের বিদ্যমান সম্পদ ও সম্ভাবনা, বিশ্ব অভিজ্ঞতা, প্রযুক্তিগত বিকাশ বিচার-বিশ্লেষণ করে ২০১৭ সালে আমরা একটি পাল্টা মহাপরিকল্পনার রূপরেখা দিতে সক্ষম হই। এতে আমরা পর্যালোচনা করে দেখিয়েছি, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য কয়লাভিত্তিক ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দরকার নেই বরং তা বিপজ্জনক, বিদেশী কোম্পানি ও ঋণনির্ভরতা কোনোটিরই দরকার নেই। প্রকৃতপক্ষে স্থলভাগে ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান-উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দেয়াই হচ্ছে আমাদের সমাধানের পথ।

আমরা বলেছি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে বাপেক্সকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। ২০০৯ সালে যখন কনোকোফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি হয়, তার বিরোধিতা করতে গিয়ে আমরা বিকল্প একটি মডেল দিয়েছিলাম। আমরা বলেছি, গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন করবে বাপেক্স, মালিকানা থাকবে পেট্রোবাংলার হাতে। যেসব জায়গায় বাপেক্সের সীমাবদ্ধতা দেখা যাবে সুনির্দিষ্টভাবে সেখানে সাব-কনট্রাক্ট দিয়ে কাজ করাবে। ইজারা মডেলে না গিয়ে সর্বজনের মালিকানা ও নিজেদের সক্ষমতা বিকাশের পথে গেলে যে গ্যাস উত্তোলন হবে, তার পুরোটাই নিজের হাতে থাকবে। একবারে না করে প্রয়োজন অনুযায়ী উত্তোলন করা যাবে। ফলে কম খরচে দীর্ঘদিন গ্যাস পাওয়া যাবে। আর বিদ্যুৎ কম খরচে উৎপাদন হবে, অর্থনীতিও অধিকতর গতিশীল হবে।

আমরা যে মহাপরিকল্পনার কথা বলেছি সেটি বাস্তবায়ন হলে ক্রমান্বয়ে এ খাতে খরচ ও দাম কমে আসত এবং ঋণের প্রয়োজন হতো না, জাতীয় আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেত। আসলে এ খাতে যে পরিমাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে তার একাংশও যদি জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে হতো তাহলে দুটির সমন্বয়ে জনগণ খুবই সুলভ, পরিবেশবান্ধব ও নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পেত। 

এখন জরুরি রামপাল, বাঁশখালী ও রূপপুরের মতো প্রকল্প থেকে বের হয়ে আসা। এসব প্রকল্প বাতিল করলে যতটুকু ক্ষতি হবে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে চালু রাখলে। বিশেষত রামপাল ও রূপপুর প্রকল্প দুটি থেকে বের হতে না পারলে শুধু আর্থিক বোঝাই তৈরি হবে না, বরং দেশের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে। সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারা দেশ বিপদগ্রস্ত হবে। আমরা অসংখ্যবার বলেছি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের বহু বিকল্প ব্যবস্থা আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। রামপাল নিয়ে প্রায় ১০ বছর আন্দোলন হয়েছে এবং গবেষণা আছে। রূপপুর নিয়ে করা চুক্তিগুলোর দুর্বলতা নিয়েও অনেক গবেষণা আছে। সরকার এগুলোর ভিত্তিতে দরকষাকষি শুরু করতে পারে।

এসব মেগা প্রকল্প করতে গিয়ে আগের সরকার বড় ঋণের ফাঁদে ফেলেছে দেশকে। তবে এ ঋণ বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান বা অস্বীকার করতে পারে। অবৈধ বা ঘৃণ্য ঋণের (অডিওস ডেট) ধারণা আন্তর্জাতিক আইন ব্যবহারে কাজে লাগতে পারে। কেননা এ ঋণ যে সরকার নিয়েছে তারা প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ছিল না। তারা জনসম্মতি না নিয়ে এমনকি জনবিরোধিতা সত্ত্বেও এ ঋণ নিয়েছে। এগুলো দেশের বা মানুষের জন্য বরং ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। বরং এ ঋণ নিয়ে বিশেষ গোষ্ঠী দুর্নীতি ও সম্পদ পাচার করেছে। এ ধরনের ঋণ নিয়ে বিগত সরকার রামপাল, রূপপুরের মতো প্রকল্পগুলো করেছে। ঋণের ফাঁদ ও প্রকল্পের বিপদ থেকে বের হতে বাংলাদেশ এসব ঋণ অস্বীকারের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে। 

আনু মুহাম্মদ: প্রাক্তন অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন