পাম অয়েল রফতানি কর আরোপে নতুন নীতি ইন্দোনেশিয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অন্যান্য ভোজ্যতেলের বিপরীতে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশটি পাম অয়েলের মাসভিত্তিক কর আরোপে নতুন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এ-বিষয়ক বিধি প্রকাশ করে। খবর রয়টার্স। 

নতুন নিয়ম অনুসারে, মালয়েশিয়া থেকে অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানির জন্য সরকার নির্ধারিত রেফারেন্স মূল্যের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ব্যবসায়ীদের কর পরিশোধ করতে হবে। নতুন আইনটি গতকাল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। এছাড়া পরিশোধিত পাম অয়েলের ক্ষেত্রে রেফারেন্স মূল্য অনুযায়ী ৩-৬ শতাংশ কর পরিশোধ করতে হবে। 

বর্তমানে অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানির জন্য ইন্দোনেশিয়ায় টনপ্রতি ৫৫-২৪০ ডলার পর্যন্ত কর পরিশোধ করতে হয় ব্যবসায়ীদের। করের হার মাসভিত্তিক রেফারেন্স মূল্যের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়। 

সেলাঙ্গরভিত্তিক ব্রোকারেজ পেলিনদুঙ্গ বেস্টারির পরিচালক পরামালিংগাম সুপ্রামানিয়াম বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্তে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল অক্টোবরের মধ্যে আরো প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মালয়েশিয়াকে তাদের পাম অয়েলের দাম কমাতে হবে।’ 

মালয়েশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম অয়েল রফতানিকারক দেশ। দেশটিতে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পাম অয়েলের রফতানিমূল্য হতে পারে ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ রিংগিত (৮৮৫ থেকে ১ হাজার ৫৩ ডলার)। চীনের নববর্ষ ও রমজান মাসে পণ্যটির চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকার প্রতাশ্যায় এ মূল্যবৃদ্ধির ধারণা করা হচ্ছে। শুক্রবার ভারতীয় ভোক্তা পণ্য কোম্পানি গোদরেজ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক দোরাব মিস্ত্রি মুম্বাইয়ের গ্লোবাল কনফারেন্সে একটি উপস্থাপনায় এমন মন্তব্য করেন। 

তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার পাম অয়েল একটি ঊর্ধ্বমুখী বাজারে প্রবেশ করতে পারে। চীনের নববর্ষ ও রমজান মাস পাম অয়েল বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক।’ 

দোরাব মিস্ত্রি বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাদ্য ও জ্বালানি খাতের জন্য উদ্ভিজ্জ তেলের চাহিদা ৬০ লাখ টন বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। এ সময় প্রধানত ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে পারে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য, সার্বিক জলবায়ু পরিস্থিতি ও দক্ষিণ আমেরিকায় আবহাওয়া পরিস্থিতি পাম অয়েলের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে। আগামী বছর বা পরবর্তী সময়ে ভারত যদি শুল্ক হ্রাস করে তবে তা পাম অয়েলের দাম নির্ধারণে একটি মূল ফ্যাক্টর হবে।’

এদিকে মালয়েশীয় পাম অয়েলের দাম গত শুক্রবার টানা তৃতীয় দিনের মতো বেড়েছে। অন্যান্য ভোজ্যতেলের ঊর্ধ্বমুখী দাম পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ও ডলারের বিনিময়ে রিংগিতের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে ব্যবসায়ীদের লাভের পরিমাণকে সীমিত করেছে। 

বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে ডিসেম্বরের সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দাম ৫৫ রিংগিত বা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য পৌঁছেছে ৩ হাজার ৯৩১ রিংগিতে (৯৩৭ ডলার ৭৪ সেন্ট)।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন