ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের গতকালের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হয় গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়সংলগ্ন লাউঞ্জে এ সভা হয়। সভায় সিন্ডিকেটের ১৭ সদস্যের মধ্যে ১৫ জন অংশ নেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া দুজন সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা যে নয় দফা দাবি দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতি বন্ধ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

বেশ কিছুদিন ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন করছেন একদল শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি এক জরিপ চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ। ৩ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে ঢাবির ৭৮টি বিভাগ ও ১০টি ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ থেকে ২৩-২৪ সেশনের মোট ২ হাজার ২৩৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগই জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ দলকেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতি সমর্থন করেন না। ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। 

জরিপে পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ৯৬ শতাংশ মনে করেন, দলকেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতিকে একেবারেই নিষিদ্ধ চান। সংস্কারকৃত রূপে চান ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায়ই প্রত্যাশা করেছেন মাত্র দশমিক ২ শতাংশ। 

প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির বেশ কয়েকটি হল প্রশাসন হলের অভ্যন্তরে সব ধরনের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন