নদ-নদীর পানি বাড়ছে, বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা (ফাইল ছবি)

আষাঢ় মাসের টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ফুলে ফেঁপে উঠছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদী। ফলে এক মাসে দুই দফা বন্যার পর ফের ডুবছে বিভিন্ন এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, এ অঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলে সামগ্রিকভাবে বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়াও সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নভূমিতে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে এবং মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। 

 বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র দেশের নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস তুলে ধরে জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময়ে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে। 

বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র বলেছে,  দেশের ১১০টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে ৯০টি স্টেশনে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে ১৯টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১টি স্টেশনে। বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৯টি স্টেশনে। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ৫টি নদীর পানি। 

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার এবং সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। কুশিয়ারার অমলশীদে ৭১ সেন্টিমিটার, শেওলায় ২২ সেন্টিমিটার, শেরপুর-সিলেট পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ও মারকুলি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মনু নদীর মৌলভীবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার, সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার এবং ভুগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

এদিকে, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৯৮, জাফলংয়ে ৩০৯, ছাতকে ২৩০ ও লালাখালে ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সুনামগঞ্জে ৩০০, মহেশখালিতে ১৯৪ ও লরেরগড়ে ২১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। নেত্রকোনার জারিয়াজাঞ্জাইলে ১৭৫ ও দুর্গাপুরে ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কুড়িগ্রামে ১১৯, পাটেশ্বরীতে ১৪২ ও চিলমারীতে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মৌলভীবাজারে ১৮৩, চট্টগ্রামের রামগড়ে ১৬৯ ও নারায়নহাটে ১২৯, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন