ফেনীর কালীদাস পাহালিয়া নদী

সেতুর অভাবে পণ্য পরিবহনে ব্যয় বাড়ছে

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ফেনী

নৌকায় কালীদাস পাহালিয়া নদী পার হচ্ছেন চরকালীদাস গ্রামের বাসিন্দারা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের ৯৬ চরকালীদাস গ্রামটি তিন পাশে নদীবেষ্টিত। এক পাশে কালীদাস পাহালিয়া নদী। তবে সেতু না থাকায় বিকল্প পথে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে কৃষককে। এতে একদিকে যেমন ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে সময়ের অপচয় হচ্ছে। নৌকা দিয়ে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে পারলেও ৩০ কিলোমিটার ঘুরে ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদে আসতে হয় গ্রামের মানুষজনকে।

স্থানীয়দের দাবি, তিন দিক নদীবেষ্টিত গ্রামে সেতু না থাকায় শত শত খামার থেকে উৎপাদিত মাছ, সবজি ধানের  সঠিক দাম পাচ্ছেন না কৃষক। জেলা শহর থেকে মাত্র কিলোমিটার দক্ষিণে বিচ্ছিন্ন জনপদে গড়ে ওঠেনি কোনো সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। নেই স্কুল-মাদ্রাসাও। বসতি বাড়লেও শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে পড়ছেন তারা।

জানা যায়, ৯৬ চর কালীদাস গ্রামটি সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ডের অংশ হলেও সরাসরি যাতায়াতের কোনো মাধ্যম নেই। সেখানে যেতে হয় চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বারইয়ার হাট পৌরসভা হয়ে ধুম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা গ্রাম দিয়ে। ওই গ্রামে সরাসরি জেলা সদর থেকে যাতায়াতে সময় লাগে অন্তত - ঘণ্টা। জনপ্রতি ব্যয় হয় ৩০০-৪০০ টাকা।

স্থানীয় কৃষক আবদুস শুক্কুর জানান, গ্রামের চরাঞ্চলে তিন শতাধিক মাছের খামার পুকুর রয়েছে। তুলনামূলক কম জনবসতির গ্রামে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। মধ্যস্থতাকারী ছাড়া পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। কারণে ন্যায্য মূল্যবঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

দোকানি আবদুল হাই জানান, এখান থেকে শহর মাত্র - কিলোমিটার। ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই শহরে পৌঁছানোর কথা। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় নৌকা অথবা মিরসরাই ঘুরে যেতে হয় শহরে। এতে সময় টাকা দুই- অপচয় হচ্ছে। শহরে যেতে হলে প্রথমে ২৫০-৩০০ টাকায় অটোরিকশা ভাড়া করে চট্টগ্রামের বারইয়ারহাট যেতে হয়। সেখান থেকে লোকাল গাড়ি করে ফেনী যেতে হয়। এক্ষেত্রে অনেক খরচ হয়। বিকল্প পদ্ধতিতে ফেনী অথবা বোর্ড অফিসে যেতে হলে নৌকা রয়েছে। বিকল্প যাতায়াতের জন্য একটি নৌকাই তাদের ভরসা।

ফরহাদনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন টিপু বলেন, ‘চর কালীদাস এলাকায় সেতু নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত আছে। সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় পুরো এলাকাটি উন্নয়নের মূলধারা থেকে পিছিয়ে। সম্প্রতি ওই এলাকায় শিশু-কিশোরের শিক্ষায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি স্কুল চালু করেছি।

ফেনী সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী দীপ্ত দাশ গুপ্ত বলেন, ‘৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ডিও লেটার দিয়েছেন। সেতু নির্মাণে ২৬ জুন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরাও ডকুমেন্ট দিয়েছি।

বিষয়ে ফেনী- আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কালীদাস পাহালিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করতে না পারলে ওই এলাকার মানুষকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা অসম্ভব। এখানে সেতু নির্মাণ করতে ডিও লেটার দিয়েছি। আগামী অর্থবছরেই সেতু নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন