বিশ্ববাজারে প্রাকৃতিক রাবারের দাম ঊর্ধ্বমুখী

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো থেকে সরবরাহের সীমাবদ্ধতা বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক রাবারের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে ছবি: রয়টার্স

বিশ্ববাজারে প্রাকৃতিক রাবারের দাম চলতি মাসে ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রেখেছে। এ সময় প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো থেকে সরবরাহের সীমাবদ্ধতা বিশ্বব্যাপী পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। খবর কেমঅ্যানালিস্ট।

বিশ্বব্যাপী রাবারের সরবরাহ কমে যাওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে রয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রাবারের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় ফসল কাটায় রাবার চাষীদের আগ্রহ কমে যাওয়া, প্রতিকূল জলবায়ু পরিস্থিতি ও পাতার রোগ। আর থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলো সবচেয়ে বেশি এসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।

প্রধান রাবার উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে আরেকটি থাইল্যান্ড। এ দেশেও আবহাওয়ার কারণে চলতি বছর পণ্যটির উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হয়েছে। একইভাবে এ সময় চীনের হাইনান ও ইউনান প্রদেশেও ক্রমাগত বৃষ্টিপাতের কারণে রাবার উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হয়েছে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার। অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভিয়েতনামের রাবার উৎপাদনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে চলতি মাসের প্রথমার্ধে দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে তা কিছুটা কমে আসবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মূলত এ সময় অনুকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি মাসের শেষার্ধে সরবরাহ ঘাটতি কমতে পারে, যা মূল্য কমার পেছনে ভূমিকা রাখবে।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল রাবার স্টাডি গ্রুপ চলতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদন বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। চলতি বছর পণ্যটির উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৪৫ লাখ ২ হাজারে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এ সময় চীন, ভারত ও ভিয়েতনামে প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদন বাড়বে।

তবে চলতি বছর থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় রাবার উৎপাদন কমার পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল রাবার স্টাডি গ্রুপ। দেশ দুটিতে রাবার উৎপাদন গত বছরের তুলনায় যথাক্রমে দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ইন্টারন্যাশনাল রাবার স্টাডি গ্রুপের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক রাবারের চাহিদা গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। এ সময় বিশ্বব্যাপী পণটির মোট চাহিদা দাঁড়াবে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজারে। এর মধ্যে চীনে এ পণ্যের চাহিদা গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, ভারতে ৩ শতাংশ ও ভিয়েতনামে ৬ শতাংশ বাড়বে। 

বাজারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক রাবার বাজারের গতিশীলতায় জটিলতার আরেক কারণ মুদ্রার বিনিময় মূল্যের হারের উত্থান-পতন। ডলারের বিপরীতে উৎপাদনকারী দেশগুলোর মুদ্রার বিনিময় বেড়ে যাওয়ার কারণে এ পণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলছে। তবে সামনের দিনগুলোয় প্রাকৃতিক রাবারের বাজারে গতিশীলতা ফিরে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীনে এ সময় পণ্যটির চাহিদা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন