চালের রফতানি শুল্কের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়াতে পারে ভারত

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : বণিক বার্তা

সেদ্ধ চালের ওপর রফতানি শুল্ক নীতির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়াতে পারে ভারত সরকার। বাজারসংশ্লিষ্ট এক সূত্র এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, সরকার সেদ্ধ চালের জন্য শতাংশভিত্তিক শুল্কের পরিবর্তে ফ্রি অন বোর্ডে (এফওবি) টনপ্রতি ৯০ ডলারের মতো একটি নির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করা যায় কিনা সে বিষয়েও চিন্তা করছে। শিপিং টার্মস অনুযায়ী, এফওবি মানে হলো পণ্য সরবরাহে বিক্রেতার পরিবর্তে ক্রেতা নিজ দায়িত্বে, খরচ ও পণ্য পরিবহনের সময়কালীন ঝুঁকি গ্রহণ করে। 

ভারতের বেশির ভাগ চাল রফতানিকারক নির্দিষ্ট শুল্কের সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এ নীতি চালু হলে চাল রফতানিতে আরো স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করছেন তারা। 

এ বিষয়ে কলকাতাভিত্তিক এক চাল রফতানিকারক বলেন, ‘‌গত বছরের জুলাইয়ে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরও সেদ্ধ চাল রফতানিতে অনেক অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তাই ভারত সরকার টনপ্রতি নির্দিষ্ট শুল্ক ১৫০ ডলার পর্যন্ত আরোপ করলেও আমাদের জন্য তা ভালো হবে। কারণ এটি শতাংশভিত্তিক শুল্কের একটি কার্যকর বিকল্প।’

এর আগে বৈশ্বিকভাবে চালের মূল্য বাড়তে শুরু করলে ২০২২ সালে ভাঙা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। পাশাপাশি তখন বাসমতী নয় এমন সাদা চালের রফতানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। এর পরও দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তে থাকে চালের দাম। দেশের ভেতরে চালের ঊর্ধ্বমুখী দাম সামাল দিতে গত বছরের ২০ জুলাই বাসমতী নয় এমন সাদা চাল রফতানিতেও নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। সেই সময় বাসমতী চালের সর্বনিম্ন রফতানি মূল্যও টনপ্রতি ৯৫০ ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।  

এসব কারণে ভারতীয় চাল রফতানি ২০২২-২৩ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সেই সময় দেশটি মোট ১ কোটি ৭৭ লাখ ১০ হাজার টন চাল রফতানি করেছিল।

উল্লেখ্য, ভারত থেকে মোট রফতানি হওয়া চালের প্রায় ২৫ শতাংশ অবাসমতী সাদা চাল। আর দেশটি থেকে সেদ্ধ চাল বেশির ভাগই পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোয় রফতানি করা হয়। আর ভারতীয় বাসমতী চাল প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয়। বিশ্বের প্রায় ৪২টি দেশ মোট চাল আমদানির ৫০ শতাংশেরও বেশি ভারত থেকে আমদানি করে।

এদিকে ভারতে গত সপ্তাহে চালের রফতানি মূল্য বেড়েছে। গেল তিন মাসে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে এ পণ্যের দাম। চাহিদা বৃদ্ধি ও নতুন মৌসুমের জন্য ধান সংগ্রহের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত সরকার, যা চালের রফতানি মূল্য বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। 

কৃষকদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা নতুন মৌসুমের জন্য যে ধান সংগ্রহ করবেন, তার মূল্য আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত সরকার। এ সিদ্ধান্তে প্রতি ১০০ কেজি ধানের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ হয়েছে ২ হাজার ৩০০ রুপি (২৭ ডলার)। আর কৃষকদের কাছ থেকে ধানের ক্রয়মূল্য বাড়ায় চালের রফতানি মূল্যও বেড়েছে। 

শীর্ষ রফতানিকারক দেশটি থেকে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সেদ্ধ চালের টনপ্রতি মূল্য ৫৪৪-৫৫২ ডলার নির্ধারণ হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৩৯-৫৪৬ ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন