জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী

রাশিয়া চীন ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত দেশ থেকে অস্ত্র কেনা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেক কাটেন ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে সমরাস্ত্র কেনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে।’ জাতীয় সংসদে গতকাল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। 

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমীনের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।’

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মারা যাব: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কিন্তু আমাকে মারতে আর গুলি কিংবা বোমা লাগবে না, এমনিতেই শেষ হয়ে যাব। জনগণই আমার প্রাণশক্তি—এটুকু মনে রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। এসএসএফ সদস্যদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি বিষয় আমি নিশ্চয়ই বলব, আমরা রাজনীতি করি। আমার আর কোনো শক্তি নেই। শক্তি একমাত্র জনগণ। সেই জনগণের শক্তি নিয়েই আমি চলি। কাজেই জনবিচ্ছিন্ন যেন না হয়ে যাই, আমি জানি এটা কঠিন দায়িত্ব। তার পরও এদিকেও নজর রাখতে হবে যে এ মানুষগুলোর জন্যই তো রাজনীতি করি; মানুষদের নিয়েই তো পথচলা। আর যাদের জন্য করি, তাদের থেকে যেন কোনোমতে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যাই।’

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান।

বাঙালি জাতি যেন বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসএসএফের প্রত্যেক সদস্য সার্বক্ষণিক সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রশংসনীয় কর্মদক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে এবং বাংলাদেশে আসা বিদেশীরাও তাদের প্রশংসা করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সঙ্গে যারা কাজ করেন এবং যারা আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত, তাদের জন্য আমি চিন্তায় থাকি। কারণ যতবার আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে, প্রতিবারই আমার কিছু না কিছু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তারা মানববর্ম রচনা করে আমাকে গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা করেছেন। কাজেই এসএসএফ যেহেতু আমার সবচেয়ে কাছে থাকে, আমি সবসময় তাদের নিয়ে চিন্তিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিবর্তন হয়েছে সেই পরিবর্তনের ধারা বজায় রেখেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ 

এসএসএফের জন্য করণীয় সবই সরকার করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পরই তিনি তাদের জন্য তেজগাঁওয়ে শ্যুটিং প্র্যাকটিসের জায়গা করে দেন। এখন আধুনিক ও উন্নতমানের শ্যুটিং রেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তাদের অফিসার্স মেস থেকে শুরু করে সবকিছুই তার হাতে গড়া। লোকবলও তিনিই বৃদ্ধি করেছেন।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়ি থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জামাদি যা যা দরকার সবই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শুধু এসএসএফ নয়, সব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নেই বর্তমান সরকার কাজ করেছে। এমনকি শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় যা যা দরকার, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এসএসএফের সবাইকে বলব, দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা ও মানবিক গুণাবলি নিয়ে নিজেদের তৈরি করে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এসএসএফ এমন একটি সংগঠন, যেখানে আমাদের সব বাহিনীরই প্রতিনিধি রয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে শুরু করে নৌ, বিমান ও সেনাসহ সব বাহিনীর সমন্বয়ে এ বাহিনী গঠিত।’ প্রধানমন্ত্রী এসএসএফের সব সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য শুভকামনা জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন