কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত কমছে আগেই বন্ধ হচ্ছে মাছ ধরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরছেন জেলেরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। এবার হ্রদের পানি দ্রুত কমায় আগেভাগেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ২৫ এপ্রিল থেকে আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত জলাধারে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এ সময় হ্রদের মাছ বাজারজাতসহ স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ থাকবে।

গতকাল বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ-সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। 

বৈঠকে জানানো হয়, চলতি বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত কমতে থাকায় নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগেই মাছ আহরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বল্প পানিতে মাছ ধরলে হ্রদের ছোট মাছ ব্যাপক হারে ধরা পড়ে। এতে করে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদনে ভাটা পড়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছর হ্রদের পানি অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের ১২ দিন আগেই বন্ধ করা হয় মাছ আহরণ। আবার তিন মাসের নির্ধারিত সময়ে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় দুই দফায় আরো এক মাস ১২ দিন মাছ আহরণ বন্ধের সময় বাড়ানোর হয়। চার মাস ১২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে হ্রদে ফের মাছ আহরণ শুরু হয়। এবারো নির্ধারিত সময়ের ছয়দিন আগেই মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) তথ্যমতে, কাপ্তাই হ্রদে উৎপাদিত মাছের ৯০-৯৫ শতাংশই ছোট প্রজাতির। এর মধ্যে কাঁচকি, চাপিলা ও মলা মাছের আধিক্য রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের রক্ষণাবেক্ষণ ও মাছ চাষের দায়িত্বে রয়েছে বিএফডিসি। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রজাতিভিত্তিক মৎস্য বিবরণীতে কাপ্তাই হ্রদ থেকে ছোট-বড় ৪৪ প্রজাতির মাছ আহরণের তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে ২৭ প্রজাতি বড় মাছ ও ১৭ প্রজাতির রয়েছে ছোট মাছ।

মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, রাঙ্গামাটির রাজস্থলী ও কাউখালী ছাড়া বাকি আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং মহালছড়ি উপজেলা মিলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন