শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ট্রাস্টি বোর্ডের আট সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে গতকাল দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে বেনজীর আহমেদ, এমএ কাশেম, রেহানা রহমান, আজিম উদ্দীন আহমেদ, মো. শাহজাহান, ইয়াছমিন কামাল, ফওজিয়া নাস ও তানভীর হারুনকে। তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, আজিম উদ্দীন আহমেদ ও মো. শাহজাহান বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ডে না থাকলেও এমএ কাশেম, ইয়াছমিন কামাল, ফওজিয়া নাস ও তানভীর হারুন স্বপদে দায়িত্ব পালন করছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৯, ৪২০, ১০৯ ধারা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০১০-এর ৪৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন–১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের করা মামলার নথি থেকে জানা গেছে, আসামিরা পূর্বপরিকল্পনামাফিক ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক পরস্পর যোগসাজশে সাধারণ তহবিলের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৪৪ (৭) ধারা লঙ্ঘনের মাধ্যমে ৪৯ ধারায় দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। তারা ব্যক্তিগত ব্যবহারের অসৎ উদ্দেশ্যে বিলাসবহুল ১০টি গাড়ি ক্রয়, ব্যবহার ও পরবর্তী সময়ে বিক্রির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৫ টাকা এবং জ্বালানি ও চালকের বেতন বাবদ ৮৩ লাখ ২৮ হাজার ৫০৩ টাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করেছেন। সব মিলিয়ে ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫৮ টাকা ক্ষতিসাধনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন আসামিরা। এজাহারে আরো বলা হয়, ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৪৪ (৭) ধারা লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে বিলাসবহুল গাড়ি কেনার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০২২ সালের ১৭ মে সেগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হয়। গাড়িগুলো মোট ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৭৪৫ টাকায় বিক্রি করলেও ক্রয়মূল্যের চেয়ে ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৫ টাকা কম পাওয়া গেছে, যা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধিত হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের ৫ মে প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিমউদ্দিন ও চার সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।