পোশাক নিয়ে বরাবরই সচেতন ছিলেন ওয়াহিদা রেহমান

ফিচার ডেস্ক

ছবি: ইন্ডিয়া টুডে

পাঁচ দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ওয়াহিদা রেহমান। এর মধ্যে কাজও করেছেন অনেক নির্মাতার সঙ্গে। তবে ক্যারিয়ারের একটা সময় নিয়মিত কাজ করেছেন দেব আনন্দ ও তার ভাই বিজয় আনন্দের সিনেমায়। বলা যায়, ওয়াহিদার ক্যারিয়ার গ্রাফ তৈরি হয়েছিল সে সময়টায়। কিন্তু তার বরাবরই ছিল নিজস্ব মত। আর তিনি তা প্রকাশ করতেন দ্ব্যর্থহীনভাবে। দৃশ্য বা চরিত্র চিত্রণে ওয়াহিদা নিজের মতের বাইরে যেতেন না। তিনি তার সেরা সময়ে কখনো প্রয়োজনের বেশি শরীর প্রদর্শন করেননি। এমনকি ‘‌কালা বাজার’ সিনেমার জন্য একটি দৃশ্যে বিজয় আনন্দের প্রস্তাব নাকচ করেছিলেন ওয়াহিদা। পোশাক নিয়ে কোনো রকম আপস করতেন না তিনি।

কালা বাজার সিনেমার শুটিংয়ের সময় একটা দৃশ্য নিয়ে আপত্তি তোলেন ওয়াহিদা। দৃশ্যটি ছিল দেব আনন্দ ফুল আনতে যাবেন ওয়াহিদার জন্য। তিনি পিছলে যাবেন পাহাড় থেকে আর ওয়াহিদা শাড়ি খুলে সেটাকে ব্যবহার করবেন দড়ির মতো করে। ওয়াহিদা বিজয় আনন্দকে বলেছিলেন, ‘এ রকম একটা দৃশ্যে আমি অভিনয় করব না। আউটডোরে তো কখনই না।’

ওয়াহিদা মনে করেন, একজন নায়িকার কস্টিউম হওয়া উচিত এমন, যা সিনেমা বা দৃশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘শাড়ি পরানো হোক বা বিকিনি, সেটা হয় দৃশ্যকে উপস্থাপনা করবে বা নায়িকার চরিত্রকে। অন্যথায় অকারণে শরীর প্রদর্শনের জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক পরানোর মানে হয় না।’ এ প্রসঙ্গে ওয়াহিদা স্মরণ করেন ‘‌আম্রপালি’ সিনেমাটির কথা। আড়াই হাজার বছর আগের ভারত ও তার মানুষ দেখানো হয়েছিল সিনেমায়। এ সিনেমায় বৈজয়ন্তীমালার পোশাক নিয়ে ওয়াহিদা বলেন, ‘ওই সময়টায় নারীরা তাদের বুকে কোনো বিশেষ পোশাক পরতেন না। বৈজয়ন্তীমালার ঊর্ধাঙ্গ তাই ঢাকা হয়েছিল মুক্তার মালা দিয়ে। আম্রপালিকে প্রকাশ করেছিলেন তিনি।’

নানা সময়ই নিজের মতের কারণে পরিচালকদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছে ওয়াহিদার। সেই সময়ের পর আবার তার মত নিয়ে কাজ করেছেন নির্মাতারা। এ নিয়ে ওয়াহিদা বলেন, ‘একটা সময় গেছে, যখন আমি নতুন ছিলাম। তখন আমার কথায় গুরুত্ব দেয়া হতো না। তারপর আমি পরিণত হই প্রথম সারির একজন অভিনেত্রীতে। তখন আর কোনো সমস্যা হতো না। আমাকে বলার আগেই বরং পরামর্শ নিতে আসত লোকে।’

এখানেই শেষ নয়। সোলভা সালের আরেকটি দৃশ্যের জন্যও পোশাকজনিত আরেকটি সমস্যা হয়েছিল ওয়াহিদার। তার ভেজা শরীর প্রদর্শন করার প্রয়োজন ছিল। এজন্য তাকে একটি কস্টিউম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওয়াহিদা পরতে চাননি। তিনি জানান, এজন্য রাজ খোসলা তার প্রতি রেগে গিয়েছিলেন। ওয়াহিদা বলেন, ‘ভেবেছিলাম ক্যারিয়ার ওখানেই শেষ হয়ে যাবে আমার। কিন্তু পরে সেটে আসার পর তিনি বললেন যে আমার পছন্দ না হলে ওই কস্টিউম পরার দরকার নেই। কিন্তু সিনেমার সেটে খুশি থাকা বেশি দরকার।’

সূত্র: দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন