আর্ট ক্লাব

শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওপেন স্পেস’

ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া

ছবি: বৈশাখ আহমেদ মিহান

শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষার্থীদের কাছে অতি পরিচিত নাম ‘ওপেন স্পেস’। দৈনন্দিন একাডেমিক ব্যস্ততার মাঝে সময় পেলেই শিক্ষার্থীরা এ ‘ওপেন স্পেসে’ ছুটে যান রঙতুলি আর ক্যানভাস নিয়ে। সাদা ক্যানভাসে রঙিন তুলিতে ফুটিয়ে তোলেন নিজের মনের অনুভূতি, পছন্দের কোনো দৃশ্য।

গ্রাফিকস ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া বিভাগের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার মো. মনিরুল ইসলামের মাধ্যমে ওপেন স্পেসের যাত্রা শুরু হলেও স্বল্প সময়েই এ ওপেন স্পেস হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালীন যেকোনো সময়েই ওপেন স্পেসে গেলে রংতুলি হাতে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা দেখা যায়। তাদের কেউ পছন্দের কোনো দৃশ্য আঁকার চেষ্টা করেন, আবার কেউবা ব্যস্ত হয়ে ওঠেন ক্যালিগ্রাফিতে।

ওপেন স্পেসের উদ্যোক্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‌ক্লাসের বাইরে ফাঁকা জায়গায় বসে আমি প্রায়ই ছবি আঁকতাম, ওই সময় দেখতাম আমার অনেক শিক্ষার্থীই আমার কাছে আসছে, জানার আগ্রহ প্রকাশ করছে। তখন চিন্তা করলাম আমার যেসব শিক্ষার্থী আগ্রহী তাদেরও আমার সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। এতে তারা আর্ট-সংক্রান্ত বিষয়গুলো আরো দ্রুত আয়ত্ত করতে পারবে। পরবর্তী সময়ে আমি যখন আমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ শুরু করলাম তখন দেখলাম আমাদের চারপাশে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও জড়ো হচ্ছে। তারাও ছবি আঁকা শিখতে আগ্রহী। এর পর থেকেই আমি সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিই। বর্তমানে যে কেউ ওপেন স্পেসে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, ছবি আঁকতে পারে। কীভাবে রঙতুলির ব্যবহারে ক্যানভাসে ভালোভাবে একটি ছবি ফুটিয়ে তোলা যায় এ বিষয়ে তাদের যথাসম্ভব প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিই।’ 

‘ওপেন স্পেসে’ ছবি আঁকার সুযোগ পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও। নিয়মিত ছবি আঁকেন এমন সাত শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ওপেন স্পেসে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ -এর অধিক। এরই মধ্যে একটি চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও লাভ করেছে। এ শিক্ষার্থীদের একজন, বৈশাখ আহমেদ মিহান। মিহান বলেন, ‘‌ওপেন স্পেস এমন একটা জায়গা যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কেউ মনের আনন্দে ছবি আঁকতে পারে। একাডেমিক ব্যস্ততাসহ জীবনের দৈনন্দিন নানা ব্যস্ততার মাঝে ওপেন স্পেস এক টুকরো প্রশান্তির জায়গা। এটি একাডেমিক কার্যক্রমের অংশ না হলেও এখানে শিক্ষক থাকায় তার কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শেখার সুযোগ পাই। এরই মধ্যে আমাদের ওপেন স্পেসের কাজ দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুস শাকুর শাহ স্যার, শেখ আফজাল হোসেন স্যার, আবদুর সাত্তার তওফিক স্যার, দুলাল চন্দ্র গাইন স্যার, মনিরুজ্জামান মনির স্যার প্রশংসা করেছেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছিলেন। এছাড়া এখানে আমরা নানা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারি। সব মিলিয়ে ওপেন স্পেস এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।’

ওপেন স্পেস নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‌শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন সৃজনশীল চর্চাও জরুরি। তারা যত বেশি সৃজনশীল চর্চায় যুক্ত হবে তাদের জ্ঞানের পরিধি তত বাড়বে। এ কারণে আমরা চাই আরো বেশি শিক্ষার্থী এ ওপেন স্পেসে অংশগ্রহণ করুক।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন