ইসলামী বিশ্ববিদ‍্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি

পাঁচ দেশের তিন হাজার ছবির প্রদর্শনী

ইমানুল সোহান

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ‍্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

ঋতু বদলের সঙ্গে বৈচিত্র্য আসে প্রকৃতিতে। প্রকৃতির এই পালাবদল মানব হৃদয়ের প্রশান্তির খোরাক। রঙিন আবহ মাস বদলের পরিক্রমায় আবার হারিয়ে যায়। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বৈচিত্র্যের কোনো শেষ নেই। তবে একদল ফটোগ্রাফারের চিত্রপটে সে দৃশ্যগুলো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ফ্রেমবন্দি আলোকচিত্রে। সম্প্রতি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের করিডোরে দেখা মিলল তিন হাজারের বেশি আলোকচিত্র। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, জর্জিয়া ভুটান পাঁচটি দেশের দেড় হাজার ফটোগ্রাফারের তোলা এসব আলোকচিত্র। প্রশিক্ষক বিচারক হিসেবে এসেছেন ভারতের পাঁচজন স্বনামধন্য ফটোগ্রাফার বাংলাদেশের চারজন ফটোগ্রাফার। সম্প্রতি ইবিতে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর চিত্র এটি। আয়োজন করেছে ইবি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন তরুণের হাত ধরে যাত্রা হয় সংগঠনটির। অনেকে শখের বশে, ফটোগ্রাফিকে গ্রহণ করেছেন কেউবা পেশা হিসেবে। নিজেদের দক্ষ করার পাশাপাশি ছবির গুরুত্ব তুলে ধরতে সংগঠনটি বিভিন্ন সময়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

এবার ক্যাম্পাসে আয়োজিত সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্য, শৈশবের দুরন্তপনা, বন্যপ্রাণীর ছবিসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ছবি স্থান পায়। তিন হাজারের বেশি আলোকচিত্রের মধ্যে সংগঠনটির তোলা বাছাইকৃত ৭৫টি আলোকচিত্রও স্থান পায়। প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত ভারত বাংলাদেশী বিচারকরা মোট ১১টি আলোকচিত্র বাছাই করেন। বাছাইকৃত ১১টি আলোকচিত্রকে দেয়া হয় পুরস্কার। প্রথম তিনজনকে নগদ ১৩ হাজার টাকা এবং বাকিদের প্রদান করা হয় সম্মাননা স্মারক সনদ।

প্রথম বিজয়ী আলোকচিত্রটি ভারতীয় ফটোগ্রাফার পার্থ মুখার্জির। যেখানে ভারতীয় স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। পাশেই হুইলচেয়ারে বসা একজন সৈনিক। যিনি প্রশিক্ষণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গু হয়ে যান। হয়তো পা ভালো থাকলে তিনিই কুচকাওয়াজে অংশ নিতেন। দ্বিতীয় বিজয়ী আলোকচিত্রটি বাংলাদেশী আলোকচিত্রী টাঙ্গাইলের হাজী আবুল হোসেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী মাহাদ আল-হাসানের তোলা। ড্রোন শটের ছবিটিতে শুষ্ক নদীর মধ্য দিয়ে চারটি ঘোড়ার গাড়ি করে মালপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদীগুলোর বেহাল দশা নদী জনজীবনের চিত্র এখানে উঠে আসে। ময়লার স্তূপে কাকের দল একটি গরু খাবারের সন্ধান করছে। পাশাপাশি একজন মানুষকেও দেখা যায়। যিনি স্তূপের মধ্য থেকে মূল্যবান কিছু সন্ধান করছেন, যা হয়তো তার জীবিকার জোগান দেবে। কুমিল্লার দাউদকান্দির এক ফটোগ্রাফারের তোলা ছবিটি তৃতীয় স্থান লাভ করে।

আয়োজকদের প্রধান ইবি ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি এনামুল রায়হান বলেন, ‘ছবি মানুষের মনের কথা বলে। একই সঙ্গে প্রাণ-প্রকৃতিকে জীবন্ত রূপ ফুটিয়ে তোলে। ধারণা থেকে আমরা সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করি। সংগঠনটির অনেকে পড়ালেখার পাশাপাশি ছবি তোলাকে গ্রহণ করেছেন পেশা হিসেবে। বর্তমানে সংগঠনের ২০০ সদস্যের মধ্যে ৪০ জনই রয়েছেন নারী ফটোগ্রাফার। অনেকের রয়েছে নিজস্ব ক্যামেরা। ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ন্যাচারালসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আমরা কাভার করি। এছাড়া নিয়মিত ক্যাম্পাসে ফটোগ্রাফি বিষয়ে প্রদর্শনী কর্মশালা আয়োজন করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন