![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_325651_2.jpg?t=1722067793)
এয়ারলাইনস একটি বিশেষায়িত খাত। খাতটির প্রত্যেক জায়গাতেই এ-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয়। একটি জাতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার দক্ষ মানবসম্পদ। এজন্য একাডেমিক প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য দেশে যেমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, এ দেশে এখনো সেভাবে তা গড়ে ওঠেনি। ভারতে চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও নেই।
সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, রিজার্ভেশন, এভিয়েশন অ্যাকাউন্টিং—এগুলোর জন্যও দেশে এভিয়েশন সংক্রান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খুব অভাব। সেভাবে স্কুল-কলেজও গড়ে ওঠেনি। বিশেষায়িত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এ বিষয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য পেশাদার পাব—সেটাই আশা করছি। আমাদের দেশে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তেমন ছিলই না। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাস করেন, তারা বিমান বাহিনীর সঙ্গে থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তারপর কাজ করার জন্য লাইসেন্স পান। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।
এভিয়েশন খাতে যে জনবল দরকার তা অধিকাংশই বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে হয়। দেশী পাইলট তৈরি হলে বিদেশীরা চলে যাবে। ইঞ্জিনিয়ারের ক্ষেত্রে এখনো বিদেশনির্ভরতা রয়েছে। আমাদের যে মেকানিকস, টেকনিশিয়ান প্রয়োজন তার অনেকটা জোগান আসে প্রতিরক্ষা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন রয়েছে। সেখান থেকেও চাহিদা পূরণ হয়। টেকনিক্যাল দিক দেখাশোনার জন্য আরো প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।
এভিয়েশনের টেকনিক্যাল কাজ যারা করতে চায়, তাদেরকে সে-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়ালেখা করে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আমাদের কোয়ালিটি ফ্লাইং ট্রেনিং স্কুল দরকার। পাইলটের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী পাচ্ছি না। পাইলটের চাহিদা জোগান দেবে এমন অন্তত একটি প্রতিষ্ঠান দরকার।
এমআইএসটি ও বিএসএমআরএএইউ থেকে যারা পড়ালেখা করে বের হচ্ছে, তাদের দক্ষতা বেশ ভালো। কিন্তু বেসরকারি কলেজে এ বিষয়ে যে শিক্ষা দেয়া হয়, সেগুলো বেশির ভাগই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। যারা এ বিষয়ে বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করে বের হয়, তাদের গুণগত মান বেশি ভালো নয়। এগুলো কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে নিয়ে আসা উচিত। এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষিত জনবল আসতে হবে। যাদেরকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো যাবে। এভিয়েশন শিল্পকে টেকসই ও লাভজনক করতে হলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে পর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
মফিজুর রহমান
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নভোএয়ার