
পুঁজিবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ থাকা ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময়সীমা এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ সময়সীমা ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে করে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য আরো এক বছর সময় পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গতকাল এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশনের (ডিওএস) পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এ বছরের ৪ আগস্ট জারি করা ডিওএস সার্কুলার লেটার নং ৩০ জারির পর ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ধারা ২৬ক-এর উপধারা (১) এবং ডিওএস সার্কুলার লেটার নং ০৭/২০১৪ অনুযায়ী পুঁজিবাজারে ৩১ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত যেসব ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ (ব্যাংক কর্তৃক অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে সামষ্টিক বা এককভাবে কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে) রয়েছে, সেসব ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার জন্য ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারের প্রতি আন্তরিক। এ সিদ্ধান্তের ফলে পুঁজিবাজারে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ থাকা ব্যাংকগুলো এটি সমন্বয়ের জন্য আরো এক বছর সময় পাবে। ফলে এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে শেয়ার বিক্রির চাপ আসবে না, যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক।
এর আগে এ বছরের ৭ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব জেহাদ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময়সীমা আরো এক বছর বাড়ানোর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়। এ নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারি করা ডিওএস সার্কুলার লেটার নং ৩০/২০২২-এর নির্দেশনা পরিপালনজনিত লোকসান রোধে এবং পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে ব্যাংকগুলো কর্তৃক ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ধারা ২৬ক-এর উপধারা (১)-এর নির্দেশনা পরিপালনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রস্তাবিত পুঁজিবাজারে বিডিবিএলসহ যেসব ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ (ব্যাংক কর্তৃক অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে সামষ্টিক বা এককভাবে কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে) রয়েছে সেসব ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এ বর্ণিত নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার জন্য ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় প্রদান করা হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়, এ বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে সামষ্টিকভাবে বা এককভাবে কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলো ৩১ আগস্ট ২০২২ ভিত্তিক সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকে (অনুপাতে) কোনো ক্রমেই বাড়াতে পারবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত ব্য্যাংকগুলোর জন্য ইতিবাচক।
যেসব ব্যাংকের পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে তারা আপাতত চাপমুক্ত থাকবে।