সাক্ষাৎকার

স্বজনতোষী পুঁজিবাদ বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটকে আরো ঘনীভূত করছে

ড. রিজওয়ানুল ইসলাম

[গতকালে পর]

বাংলাদেশের মতো এমন পরিস্থিতি কি অন্য দেশও মোকাবেলা করছে, কীভাবে করছে? কীভাবে এটি মোকাবেলা করা যেতে পারে, কোনো মডেল আছে কি?

যেসব দেশ বাজার অর্থনীতিকে গ্রহণ করেছে সেসব দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওঠানামা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির সমস্যা মোটামুটি নিয়মিত ব্যাপার। সমস্যাগুলোর ধরন কারণ এক রকম নাও হতে পারে। যদিও আমরা অনেক সময় উন্নয়নের কৌশলে সফল দেশগুলো থেকে শেখার কথা বলি, তার অর্থ এই নয় যে এক দেশের মডেল অন্য দেশে হুবহু ব্যবহার করা যায় বা উচিত। তা সত্ত্বেও আমি দু-একটি দেশের কথা বলব, যেগুলোর অভিজ্ঞতার দিকে তাকানো যেতে পারে। ১৯৯৮ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের সময় মালয়েশিয়া আইএমএফের সহায়তা ছাড়াই সংকট মোকাবেলা করেছিল, সে কথা আগেই বলেছি। কীভাবে সেটা করা হয়েছিল তা থেকে নিশ্চয়ই কিছু শেখা যেতে পারে। বর্তমান সময়ে ভারত কীভাবে তার সমস্যা মোকাবেলা করছে সেটাও বাংলাদেশের জন্য প্রাসঙ্গিক। সে দেশেও চলতি হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। তবে তাদের রিজার্ভ একসময় (২০২১ সালের অক্টোবরে) বেড়ে হয়েছিল ১৬ মাসের আমদানির সমান। আর এখন কমলেও নয় মাসের আমদানির সমান রয়েছে। তারা কীভাবে রুপির বিনিময় হার ক্রমাগত কমিয়েছে তা থেকেও কিছু শেখার আছে। তবে আমাদের সমস্যার সমাধান নিজ দেশের বাস্তবতার ভিত্তিতেই খুঁজতে হবে।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোনো দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়াটি অনেকটা এমনপ্রথমে কৃষি থেকে শিল্পে, তারপর সেবা খাতের দিকে অর্থনীতি যায়। কিন্তু আমাদের উন্নয়ন প্যারাডাইমে দেখছি, আমরা কৃষি থেকে সেবার দিকে বেশি যাচ্ছি। এখন আবার শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছি। এমন রূপান্তর সম্পর্কে আপনার বিশ্লেষণ কী?

একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনি তুলেছেন। যেটিকে আমরা অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন বলি। অর্থনৈতিক উন্নয়নযাত্রা কী রকম হয়, অতীতে কীভাবে হয়েছে বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমি কিছু লিখেছিও। উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা, এমনকি যারা বিশ শতকের দিকে উন্নয়নের পথে এগিয়েছে (যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার কথা উল্লেখ করেছি) তাদের অভিজ্ঞতা দেখলে আপনি যেমনটা বলেছেন ঠিক তেমনটিই দেখা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে জিডিপিতে কৃষির চেয়ে শিল্প খাতের অংশ বেড়ে যায়। তারপরে একটা পর্যায়ে গিয়ে শিল্প খাতের অংশ আর বাড়ে না, বরং অনেক ক্ষেত্রে কমেও যায় এবং সেবা খাতের অংশ বাড়ে। এটি শুধু ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে নয়, এমনকি জাপান দক্ষিণ কোরিয়ার (যারা পরে উন্নত হয়েছে) অভিজ্ঞতাও একই রকম। মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতাও দেখবেন যে শিল্প খাতের অংশ বেড়েছে এবং কোনো একপর্যায়ে সেটি আর বাড়েনি।

এখন আমাদের দেশে কী হয়েছে? এখানে প্রথমেই যে সেবা খাত বাড়তে শুরু করেছে তা নয়, মোট উৎপাদন যদি দেখেন তাহলে দেখবেন, শিল্প খাতের উৎপাদন কিন্তু বেশ বেড়েছে, যা তেমনভাবে বাড়েনি সেটি হলো কর্মসংস্থানের অংশ। এটি কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু আমরা যেভাবে আশা করেছি সেভাবে বাড়েনি বা বাড়ছে না। বিশেষ করে যেখানে উদ্বৃত্ত শ্রম আছে এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে অনেক শ্রম স্থানান্তরিত হবে, কর্মসংস্থানে শিল্পের অংশ অনেক বাড়বেযেটা দক্ষিণ কোরিয়ায় হয়েছে ধরনের বিষয়টি এখানে হয়নি। ফলে কী হচ্ছে? এদিকে শ্রমশক্তি বেড়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যায় তরুণ-যুবক শ্রমবাজারে আসছে। তারা কোথায় যাবে? প্রেক্ষাপটে ধরনের দেশে একটা সাধারণ প্রবণতা হলো কিছু না কিছু একটা করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করা। তা কোথায় করা যায়? সেটা বেশি করা যায় সেবা খাতে। যেজন্য সেবা খাত বড় হয়ে যাচ্ছে, শিল্পায়নের ব্যাপকতার আগেই আমরা সেবা খাতের বৃদ্ধি দেখছি। এর ফলে কী হচ্ছে? আপনি সেবা খাতের গঠনের ভেতরে গেলে দেখবেন, সেখানে বিভিন্ন ধরনের উপখাত কর্মকাণ্ড রয়েছে। একদিকে অত্যন্ত আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন, ফাইন্যান্স, ইন্স্যুরেন্স, বাণিজ্য এসব আছে; আরেকদিকে রাস্তায় ফেরি করছে, চায়ের দোকান চালাচ্ছে রকমও আছে। এগুলোও কিন্তু এক ধরনের সেবা খাত। আমি এটাকে বলি দ্বৈত কাঠামো। ধরনের একটা কাঠামো গড়ে উঠেছে। কিন্তু এতে কী হচ্ছে। একটা বড় অংশ কোনোমতে কিছু করে জীবিকা অর্জন করছে। তাদের আয় খুবই কম। তাদের অনেকেই হয়তো দারিদ্র্যসীমার নিচে কিংবা একটু ওপরে থাকলেও খুবই নড়বড়ে। আর একটা ছোট্ট অংশ আধুনিক সেবা খাতে। হলো বাংলাদেশের অবস্থা।

সেবা খাতের কারণেই কি বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান বেশি?

এটাও একটা বড় ব্যাপার। বিশ্লেষণ করলে অনেক কিছু বলা যায়। একেবারে সেবা খাতেই যে অনানুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড বা অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান হচ্ছে তা নয়। হ্যাঁ, আমি যেভাবে বললাম, তাতে সেবা খাতের একটা বিরাট অংশ অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু শিল্প খাতেও অনেক ধরনের শিল্প পাবেন, যেখানে কিছু কিছু অনানুষ্ঠানিক খাত/কর্মকাণ্ড রয়ে গিয়েছে। আর আমাদের দেশে একটা কথা আছে, একেবারে আনুষ্ঠানিক খাতেও অনানুষ্ঠানিকভাবে নিয়োজিত শ্রমিক অনেক। সুতরাং অর্থনীতির সর্বত্রই এটা রয়ে গিয়েছে। ফলে মোট কর্মসংস্থানে অনানুষ্ঠানিকের অংশ আর কমছে না। এটা প্রায় ৮৫ শতাংশে রয়ে গিয়েছে।

উদ্বৃত্ত শ্রম শেষ হওয়ার আগেই শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের হার কমে যাচ্ছে কেন? বাংলাদেশ তো শ্রমঘন, এখানে শ্রমনিবিড় শিল্প হওয়ার কথা।

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এটা আমার একটা চিন্তার জায়গা। আসলে আমাদের শিল্প খাত নিয়ে গভীর গবেষণা খুব বেশি হয়নি। হওয়া উচিত। তবু মোটাদাগে দু-একটা কথা বলব। প্রথম কথা, উদ্বৃত্ত শ্রম থাকায় অর্থনীতিতে শিল্পায়ন হওয়ার কথা শ্রমনিবিড়। আমি দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনামের কথা যেমনটা বললাম। তাদের অনেক শ্রমঘন শিল্প গড়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে ধরনের মাত্র একটি শিল্প গড়ে উঠেছে। তাতে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে শিল্প খাতে পুঁজির ব্যাপ্তি, গভীরতা বহর বেড়েছে। এটা সাম্প্রতিক কিছু তথ্য থেকে বলা যায়। এটা প্রথম কথার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ এখানে একটি মাত্র শ্রমনিবিড় শিল্প গড়ে উঠেছে। আর যে শ্রমনিবিড় শিল্প তাতেও কিন্তু কোনো এক পর্যায়ে গিয়ে শ্রমসাশ্রয়ী প্রকৌশলের (লেবার সেভিং টেকনোলজি) ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বড় কারখানাগুলো ধরনের কিছু প্রকৌশল ব্যবহার করছে। ফলে শ্রমনিবিড় শিল্পেও কর্মসংস্থান সেভাবে আর বাড়ছে না। একসময় আমরা বলতাম, ৪০ লাখ লোক শিল্পে নিয়োজিত। এটা কয়েক বছর আগেও বলতাম। কেননা বিজিএমইএর ওয়েবসাইটে রকম একটা তথ্য ছিল। তবে দু-এক বছর ধরে রকম কোনো তথ্য পাচ্ছি না। সুতরাং ওই খাতে কর্মসংস্থান কী হচ্ছে তা জোর দিয়ে বলা যায় না। কিন্তু অনুমান হচ্ছে কর্মসংস্থান সেভাবে আর বাড়ছে না। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে শিল্প খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হারটা অন্তত কমে যাচ্ছে।

উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভূমি, শ্রম, উদ্যোক্তা সরকারের ভূমিকা কেমন ছিল?

সবার ভূমিকা আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। কারো ভূমিকাই খাটো করে দেখা যাবে না। উদ্যোক্তার ভূমিকা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ভূমির ভূমিকাও গৌণ নয়। ছোট দেশ, বিপুল জনসংখ্যা। এখানে জমির স্বল্পতা রয়েছে। জমিস্বল্পতার কারণে আমরা একই জমিতে কত বেশি উৎপাদন করা যায়, সেটি চেষ্টা করছি। তাতে যথেষ্ট সফলও হয়েছি। উদ্যোক্তার ভূমিকাকে সমর্থন জুগিয়েছে বিরাট সংখ্যায় উদ্বৃত্ত শ্রমিক সরবরাহ। উদ্বৃত্ত শ্রমের দেশ হওয়ায় প্রকৃত মজুরি খুব বেশি না বাড়িয়েই অনেক সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করা গিয়েছে। যথার্থ কারণেই আমাদের বইয়ে [বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা: সুবর্ণজয়ন্তীতে ফিরে দেখা, ইউপিএল, ২০২২ (রুশিদান ইসলাম রহমান এবং কাজী সাহাবউদ্দিনের সঙ্গে যৌথভাবে রচিত)] উল্লেখ করেছি, সবকিছু ছাপিয়ে একটা বড় ভূমিকা পালন করছে আমাদের শ্রমশক্তি। সেটি শিল্পে যেমন, তেমনি কৃষিতেও। একইভাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে শ্রমশক্তি। কাজেই জোর দিয়ে বলব উদ্যোক্তা বা জমি এসব তো আছেই, দেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি স্তম্ভে শ্রমিকদেরই অবদান অনেক বেশি।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সফল দেশগুলো এবং আমাদের উন্নয়ন কৌশলের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আপনার অভিমত কী?

উন্নয়ন কৌশলের পার্থক্য বুঝতে হলে বেশ আগে সফল হয়েছে এমন দেশের উদাহরণ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে আমি প্রায়ই দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ টানি। দেশটি আমাদের মতো একসময় নিম্ন আয়ের দেশ ছিল। সেখানে উদ্বৃত্ত শ্রম ছিল, কৃষিভিত্তিক ছিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ অনেক বৈশিষ্ট্যই দক্ষিণ কোরিয়ায় বিরাজ করেছিল। তারা কিন্তু একেবারে উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছেছে। কীভাবে সেটা হয়েছে? তাদের প্রথম থেকেই জোর ছিল শিল্পায়নের ওপর। শিল্পায়নের ধরন ছিল শ্রম নিবিড় রফতানিভিত্তিক। ফলে শুধু প্রবৃদ্ধি হয়েছে তা নয়, তাতে কর্মসংস্থানেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে অনেক উচ্চ হারে। এরই ধারাবাহিকতায় উদ্বৃত্ত শ্রম স্থানান্তরিত হয়ে আধুনিক শিল্পে নিয়োজিত হয়েছে। ফলে এক-দেড় দশকের মধ্যেই তারা মোটামুটি উদ্বৃত্ত শ্রম শেষ করতে পেরেছে। সে কারণে আমরা মডেলকে অনেক সময় উল্লেখ করি। আমি মনে করি না, একই ধরনের মডেল সব দেশেই ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু এটা একটা উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ধরনের প্রবৃদ্ধি কৌশলের মাধ্যমে তারা সফল হয়েছে। আরো কিছু দেশ যেমন তাইওয়ান, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ অনেকটা এভাবে এগিয়েছে। চীনকে আজ বিশ্বের কারখানা বলা হয়। তারাও এভাবে এগোচ্ছে। চীনের প্রথম দিককার অবস্থার সঙ্গে (যেমন জমিস্বল্পতা, কৃষির ওপর নির্ভরশীলতা) বাংলাদেশের যথেষ্ট মিল ছিল।

আর সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ভিয়েতনাম। সময় আমরা ভিয়েতনামের সঙ্গেও বাংলাদেশের তুলনা করি। কোনো একসময় ভিয়েতনাম বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে একই জায়গা থেকে শুরু করেছিল। তারা দ্রুত এগিয়েছে। আমরাও উন্নতি করেছি বটে, তবে তারা অনেক বেশি উন্নতি করেছে। তারা প্রায় একই ধরনের মডেল অনুসরণ করেছে। আগেই বলেছি, তারা রফতানিমুখী শিল্প তার প্রসার, সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তার জন্য শুধু দেশী বিনিয়োগ নয়, তারা বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগ পেয়েছে অনেক। ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কোনো কোনো দেশ অনেক বেশি সফল হয়েছে। কী ধরনের উন্নয়ন কৌশল তারা ব্যবহার করেছে তার কিছু ধারণা আমরা পেতে পারি এবং কিছুটা হলেও সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন কৌশল পরিবর্তন বা উন্নত করতে পারব।

গত ৫০ বছরে সরকার পরম্পরায় আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কেমন ছিল? উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কোন দিকে নজর দিতে হবে?

এটা খুবই গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন। প্রথমে আমাদের শক্তির জায়গা কোথায়, সেটি দেখতে হবে। আমাদের যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা তাতে কিছু কিছু শক্তির জায়গা ছিল বা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমেই আসে সামষ্টিক অর্থনীতি। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে মোটামুটি একটা স্থিতিশীলতা বজায় আছে। প্রাথমিকভাবে অবস্থান বেশ কঠিনই ছিল। সত্তর-আশির দশকে অবস্থা অত ভালো ছিল না। মূল্যস্ফীতির হার, বাজেট ঘাটতি অনেক বেশি ছিল। বাণিজ্য লেনদেনের অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। কিন্তু পরে বিভিন্নভাবে এসবের একটা উন্নতি ঘটেছে এবং সেখানে আমাদের একটা শক্তি তো রয়েছেই। আমাদের অর্থনীতিতে বিভিন্ন সময় কিছু দুর্বলতা লক্ষ করা গিয়েছে। যেমন জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আহরণ আমাদের অনেক কম। অন্যান্য উন্নয়নশীল বা নিম্ন আয় কিংবা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তুলনায়ও কম। এটা আমাদের দেখতে হবে। তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হলো বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। সরকারি বিনিয়োগ তো বাড়ছেই। কিন্তু আগেই বলেছি, বেসরকারি বিনিয়োগ আশানুরূপ বাড়ছে না। কেন বাড়ছে না, এটা বোধহয় একটু গভীরভাবে খতিয়ে দেখা উচিত এবং কী ধরনের সংস্কার নীতিমালা দরকার, সেটি আমাদের একটু দেখতে হবে। [শেষ]

 

. রিজওয়ানুল ইসলাম: অর্থনীতিবিদ, সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা, এমপ্লয়মেন্ট সেক্টর, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, জেনেভা

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন