প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ডে আজ জনসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় পর আজ চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভায় অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য দেবেন আসন্ন নির্বাচন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সিআরবি ইস্যু, মেগা প্রকল্পসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সেই সঙ্গে উদ্বোধন করবেন ৩০টির বেশি প্রকল্প। চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী, যেগুলোর হাত ধরে চট্টগ্রাম আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা সবার। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে এরই মধ্যে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরী। রাজপথ থেকে অলি-গলি সবখানেই সাজ সাজ রব। ব্যানার-ফেস্টুন আলোকসজ্জায় ছেয়ে গিয়েছে শহর। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বাজানো হচ্ছে নানা গান। সড়কে নৌকার আদলে গাড়ি ট্রাক নিয়ে হচ্ছে মিছিল। মোটরবাইক নিয়ে শোডাউন দিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

সকাল থেকে উৎসবের সেই মাত্রা আরো কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে আশা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের। প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে ১০ লাখ লোক সমাগমের। ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে জনসভার মঞ্চ। বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে কয়েক স্তরে ভাগ করা হয়েছে জনসভা মাঠকে। পলোগ্রাউন্ড মাঠ আশপাশ এলাকায় নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সমাবেশস্থল আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সরাসরি সমাবেশ দেখাতে সাতটি বড় এলইডি মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নগরীজুড়ে লাগানো হয়েছে ৩০০ মাইক। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ ঘিরে এরই মধ্যে সড়ক চলাচলে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে সিএমপির পক্ষ থেকে। নগরীর মোড়ে মোড়ে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল, চলছে তল্লাশি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী . হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে চট্টগ্রামজুড়ে ব্যাপক সাড়া জেগেছে। মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। জনসভার সার্বিক প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন সবাই প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ২৮ মার্চ সর্বশেষ পলোগ্রাউন্ডে ভাষণ দিয়েছিলেন।

এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আজ জনসভায় ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। সেগুলো হলো ফটিকছড়ি হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী এবং ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২ নম্বর পোল্ডারের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প এবং বাঁশখালী উপজেলার ৬৪/১এ, ৬৪/১বি ৬৪/১সি পোল্ডারের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধিত) বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ভবন, হাসপাতাল, প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছে নাসিরাবাদ শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার আধুনিকায়ন কাজ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়ানহাটে হর্টিকালচার সেন্টারে একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র অফিস, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাগবোট সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্প চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্প।

এছাড়া চট্টগ্রামের মানুষের জন্য আরো চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হচ্ছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে মিরসরাই সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ন  গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে বিপিসি ভবন নির্মাণ প্রকল্প।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণমানুষের দল। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সমাবেশ করা হচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১০ বছর পর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন। আমাদের বিশ্বাস, জনসভা শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, গোটা চট্টগ্রাম শহরই সব মানুষের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে রূপ নেবে। সকাল ৮টায় সমাবেশস্থলের দরজা খোলা থাকবে। আশা করি বেলা আড়াইটার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে আসবেন এবং ৩টায় তিনি বক্তব্য শুরু করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন