বাহাত্তরের সংবিধানের অন্যতম কারিগর তাজউদ্দীন আহমদ

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা, সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি সংবিধান রচনাসহ মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে  তাজউদ্দীন আহমদ এবং তার উত্তরসূরিদের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিকা মাহজাবিন

বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাজউদ্দীন আহমদের ভাবনাগুলোকে তার মেয়ে হিসেবে কীভাবে দেখেছেন?

আমার যখন মাত্র চৌদ্দ বছর বয়স, তখনই আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়। এজন্য তেমন দেখার সুযোগ হয়নি। আমার যেটুকু সুযোগ হয়েছে, সেটুকু হয়েছে যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করি তখনই। সেখানেই আমি তাজউদ্দীন আহমদের এক একটা নতুন নতুন দিক দেখতে থাকি। তিনি মিশনারি স্কুলে পড়তেন। সেখান থেকে মানুষের জন্য কিছু করার ভাবনা তৈরি হয়। তিনি স্কাউটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এটি ছিল মানবসেবার বড় জায়গা। তার ভেতরে মানুষের প্রতি সমানুভূতি প্রচণ্ড পরিমাণে জাগ্রত ছিল। তিনি ছাত্রসংগঠন আওয়ামী লীগে ছিলেন। তার লেখা ডায়েরিতে তার রাজনৈতিক আদর্শের বিষয়গুলো দেখতে পাওয়া যায়। যখন দেশভাগ হয়নি তখনই তারা চিন্তা করছেন, আমাদেরই একটি দল গঠন করতে হবে। মুসলিম লীগের সঙ্গে থাকলে হবে না। কারণ দলটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক, মানুষকেন্দ্রিক না। তৎকালীন মুসলিম লীগ জমিদারদের বা নবাববাড়ির হাতে চলে যাচ্ছে। তখন তারা ভাবলেন আমাদের এমন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে হবে, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তিটা প্রাধান্য পাবে। কারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া রাজনৈতিক স্বাধীনতা কাজে আসে না। তিনি যখন এমনটি ভাবছেন তখন তার বয়স ২১ বা ২২ বছর।

এরপর ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়ে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে জয়লাভ করেন, তার জীবনের শুরু থেকেই তার রাজনৈতিক লক্ষ্য অনেক স্পষ্ট ছিল। তিনি চিন্তা করতেন মুক্তিকামী অন্যান্য দেশের মতো করে আমাদের ভাবতে হবে। তারা যেমন করেছে, আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য তেমন করব। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা-সংস্কৃতির উন্মেষ-রাজনৈতিক স্বাধীনতা-মানুষের চিন্তাচেতনার যে উন্মেষ; সেটিও তার রাজনীতির একটা বড় অংশ।

সরদার ফজলুল করিম স্যার বলতেন, তাজউদ্দীন তার সময়ের অনেক আগে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাকে জানতে আমাদের অনেক বাকি। তিনি তীক্ষ বুদ্ধির মানুষ ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের সময়ও তিনি অনেক লেখালেখি করেছেন। সে সময়ের আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান খান বলেন, সে সময় নিয়ে তিনিও একই কথা বলেছিলেন যে আমাদের লেখালেখি, কোনো ড্রাফট করা সবকিছুতে তাজউদ্দীনের ওপর আমরা নির্ভর করতাম।

বাহাত্তরের সংবিধান রচনায় তার ভূমিকা অবদান সম্পর্কে বলুন।

আমরা বলি আমাদের এত তাড়াতাড়ি সংবিধান দেয়া হলো। মাত্র দশ মাসের মাথায় বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটা সংবিধান দিতে পেরেছে। এটি কিন্তু অনেকে জানে না ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খান যখন দ্বিতীয়বারের মতো মার্শাল দিয়ে ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা দিলেন, তখন ইয়াহিয়া খান এসে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) গঠন করেছিলেন। ওই এলএফওর অধীনে যখন নির্বাচন হবে, পাকিস্তানকে আবার নতুন করে একটা সংবিধান দেয়ার জন্য ৭০-এর নির্বাচনটা ছিল। যারা আওয়ামী লীগ করছিল তাদের একটা ধারণা ছিল, দল নির্বাচনে জিতে যাবে। এজন্য নির্বাচনের আগে থেকে তারা সংবিধানের খসড়া তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম সাহেব বলেছেন, তখন কনস্টিটিউশন ড্রাফটিং কমিটিতে প্রতিদিন যে মানুষটি উপস্থিত থাকতেন, তিনি হলেন তাজউদ্দীন আহমদ।

স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশের সংবিধান রচনার অন্যতম কারিগর আমার বাবা। তৎকালীন আইনমন্ত্রী সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি . কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধানের মূল থিমটি ছিল তাজউদ্দীন ভাইয়ের চিন্তা। আমরা এটাকে ইলাবোরেট (সম্প্রসারিত) করেছি।

১৯৭২ সালে পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন প্রফেসর নুরুল ইসলাম। তিনিও বলেছেন, তাজউদ্দীন আহমদের একসঙ্গে অনেক কিছু চিন্তা করার প্রচণ্ড রকম দক্ষতা ছিল। যখন সংবিধান ড্রাফটিং কমিটির সভা হতো, তখন বোঝা যেত তাজউদ্দীন আহমদের চিন্তার গভীরতা কতখানি। বাহাউদ্দিন চৌধুরী স্পষ্ট করে বলেছেন, চল্লিশ থেকে ষাটের দশক পর্যন্ত রাজনৈতিক সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে আমাদের চিন্তার জগতের মূল মানুষ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।

সত্তরে আওয়ামী লীগের মেনিফেস্টোয় যে কথা বলা হয়েছিল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে; সে জায়গাগুলো নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। ১৯৭২ সালের ৩০ অক্টোবর খসড়া সংবিধান প্রণয়নকালে তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন সংবিধানে যত সুন্দর কথা লেখা থাকুক, তা যদি মানুষের জীবনে প্রয়োগ না হয় তাহলে কিন্তু কাজে আসবে না। বাস্তবায়ন না হলে আমাদের ত্রিশ লাখ শহীদেরসহ সব মানুষের যে আশা আমরা সুখী সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ পাব, সেটা অপূর্ণ থেকে যাবে।

তিনি বাহাত্তর-তিয়াত্তরে যে কথা বলেছেন, এগুলো এখনো একই রকম তাত্পর্যপূর্ণ এবং প্রযোজ্য। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোটা হবে এমন যাতে করে মানুষ স্বচ্ছন্দে চলতে পারে। অর্থাৎ রাষ্ট্র সবার জন্য এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থায় যাবে, সেখানে মানুষ ভাবতে পারবে এখানে আমার অধিকার, এখানে আমার প্রাপ্যতা কী। তখনই রাষ্ট্রের প্রতি তাদের ভালোবাসা জন্মাবে। তার চিন্তাগুলো রকমই ছিল।

বাহাত্তরের সংবিধানে আমরা থাকতে পারিনি। সামরিক শাসনসহ অন্যান্য কারণে আমাদের সংবিধানকে কাটছাঁট করা হয়েছে। এতে আমাদের মূল সংবিধানের সৌন্দর্য অনেকখানি হানি হয়েছে। আমাদের দেশ গঠনে যারা মূল ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং মূল্যবোধগুলো আমরা ধরে রাখতে পারিনি।

স্বাধীনতার পর আপনার বাবার রাজনৈতিক পথচলাটা কেমন ছিল?

১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। দেশের রাষ্ট্রীয় খাতে টাকাও ছিল না। যখন বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী, তখন আমার বাবা অর্থ পরিকল্পনামন্ত্রী। বাংলাদেশের প্রথম অর্থ সচিব মতিউল ইসলাম সাহেবের কাছ থেকে জেনেছি, আমার বাবা বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড় করানোর জন্য কীভাবে কাজ করেছেন। ১৯৭৩ সালে স্বল্পোন্নত দেশ আইএমএফকে বলেছে, আমাদের ঋণ দরকার নেই। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই আমাদের অর্থনীতিটা দাঁড়িয়ে যায়। নুরুল ইসলাম সাহেবও এভাবে বলেছেন।

মতিউল ইসলাম সাহেব আমার বাবা সম্পর্কে বলেন, শূন্য থেকে বাংলাদেশকে রকম একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া। আমরা এখন বলি জাদুর মতো। কিন্তু জাদুর মতো তো ছিল না। সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে তখন রাষ্ট্রীয়করণ করা হলো। তারা পরিকল্পনা করেছেন, কীভাবে অর্থনীতিকে একটি স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। সে জায়গায় নিয়ে যেতেও পেরেছেন ওই সময়। তার দেয়া বাজেটগুলো গতানুগতিক বাজেট ছিল না। সেখানে একদম স্পষ্ট ছিলআমরা এটা চাচ্ছি; কেন চাচ্ছি, কীভাবে করব। তার বাজেট ছিল অর্থনৈতিক রাজনৈতিক দর্শনের গণমানুষকেন্দ্রিক বাজেট। সময়ের আবর্তে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মন্ত্রিপরিষদ নীতিনির্ধারণী জায়গা থেকে সরে যেতে হয়। তিনি যদি থাকতেন হয়তো ১৫ আগস্ট ঘটত না। হয়তো তেসরা নভেম্বরও ঘটত না। আন্তর্জাতিক হোক বা দেশীয় হোককোনো না কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তাকে সরে যেতে হয়। তারা (১৫ আগস্টের পরিকল্পনাকারীরা) ওইভাবেই একটি গ্রাউন্ড তৈরি করেছিল বলে আমার ধারণা।

আপনার বাবার আদর্শ প্রচারের জন্য আপনারা ভাইবোনেরা কী করছেন?

তাজউদ্দীন আহমদের আদর্শ হলো বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু সবসময় বলতেনভালো মানুষ দরকার, সোনার মানুষ দরকার। আমার বাবার আদর্শের জায়গাটাও ছিল একই রকম। সেই চিন্তা থেকে সবসময় মনে হয় বাংলাদেশে অনেক বেশি আদর্শবান দক্ষ মানুষের প্রয়োজন। সেই ধারণা থেকে ১৯৯৭ সালে আমি কাপাসিয়ার কয়েকটি গ্রামে ছোট পরিসরে বই পড়া কর্মসূচি শুরু করি। এর আরো পরে তাজউদ্দীন আহমদ পাঠচক্রের সঙ্গে যুক্ত হই। কারণ তাজউদ্দীন আহমদ এমনই একজন মানুষ ছিলেন, যিনি মানুষকে দিতে চাইতেন। আমি এখন প্রায় ১০০ স্কুলে বই পড়া কর্মসূচি করি। নিয়ে বছর শেষে যে মূল্যায়ন পরীক্ষা হয়, সেখানে এবার প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। কাব স্কাউট স্কাউটের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া আমার বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডও গঠন করেছেন। এটির মাধ্যমে প্রতি বছর বৃত্তি দেয়া হয়।

আপনার ভাই তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

পরিশীলিত পরিমিতিবোধ থেকে সে সেই সময়ে পদত্যাগ করেছে। তাজউদ্দীন আহমদের জীবন অনুসরণ করলে বোধ তৈরি হয়। তবে আমার ভাই কেন সরে এসেছে, তা সে- ভালো বলতে পারবে। তবে সোহেল সবসময় বলে এসেছে, আমার যেহেতু একটা রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম; যদি দল কোনো সময় মনে করে আমাকে প্রয়োজন, তাহলে যেকোনো কাজের জন্য আমি প্রস্তুত। এটি বরাবরই বলে আসছে। কিন্তু আমি দলে পদ চাই’— ধরনের কিছু কখনোই বলেনি।

কী ধরনের রাজনীতি করতে চান?

আমি আজকের দিনটিকে বিশ্বাস করি। আজ যদি ভালো কাজ করি, তাহলে আগামীটা মানুষের জন্য ভালো হবে। আমি প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক প্রয়োজন ধরে আমার বাবার মতো কাজ করি। সেই ভাবনা থেকে শিশু মাতৃমৃত্যু রোধে কাজ শুরু করি। আজ কাপাসিয়া বাংলাদেশের মধ্যে একটিমাত্র উপজেলা যেখানে মাতৃমৃত্যু শূন্যের কোঠায়, যা ইউএনএফপিএ কর্তৃক মাতৃমৃত্যু কাপাসিয়া মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টো অসাধারণ। আমরা যদি সেগুলো ধরে কাজ করি, তাহলেই আমাদের দেশটা অনেক সুন্দর হয়ে যায়।

আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে আপনার বাবার আদর্শ বাস্তবায়নে কতটুকু কাজ করতে পারবেন বলে আপনি মনে করেন?

কতটুকু অর্জন করতে পারব তা তো বলতে পারব না। এটি তো চলমান প্রক্রিয়া। এর শেষ নেই। পৃথিবীর যেমন শেষ কবে জানা নেই, একটি ভূখণ্ডে রাজনৈতিক পথচলারও শেষ নেই। অনেক প্রতিবন্ধকতা তো থাকেই। এর পরও আনন্দ আশা নিয়ে আমার পথচলা।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বাংলাদেশের বর্তমানকে কীভাবে দেখছেন?

আমাদের সবই আছে কিন্তু সিস্টেমের অভাব। প্রতিটি জায়গায়। একটি জায়গায় গেলে যেখানে দুই মিনিট দরকার, সেখানে তিনদিন ঘোরা লাগে। এটি কেন হবে? আমাদের সিস্টেম তৈরি হয়নি। আরেকটা জিনিস হলো, আমরা যখন যে পদে থাকি সেটি সরকারি হোক বা রাজনৈতিক হোক প্রতিটি দপ্তরে অফিস সহকারী থেকে একেবারে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নিজেকে কী যেন একটা ভাবে। ভাবাটা যদি দূর করতে পারা যায়, তাহলে অনেক উপকার হবে। আমি একটা কিছু’—এটি বোঝানোর যে প্রবণতা, সেটির কারণে আমরা কাজে খুব পিছিয়ে যাই।

আমার মনে হয় আমাদের রাষ্ট্রটা শক্ত ভিত পায়নি। দেশের ভূখণ্ড ঠিক আছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মানুষের মধ্যে তেমন করে মন তৈরি করা হয়নি। মানুষের মন তৈরি করার দায়িত্বটি রাষ্ট্রের। মানুষ যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখন মন জয় করা সহজ। কিন্তু যখন দায়িত্ব পায়, তখন কাজটা অনেক কঠিন। তখন কাজটা নিজেকে করতে হয়। কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে কাজটা করব। এজন্যই ইংল্যান্ডে ছায়া সংসদ ধারণাটি খুব কার্যকর। যেখানে তারা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায়ই চিন্তা করে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেয়ে কীভাবে মন্ত্রণালয় চালাতে হবে। এই-এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। কীভাবে করবে, কে দেখবে? এজন্য তারা তিন মাস, ছয় মাস পর এক-একটা মানুষকে দায়িত্ব দিয়ে দেখতে থাকে। এমন হওয়াটা আমাদের এখানেও জরুরি। আমাদের দেশে সে রকম মানুষ তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক দলকেই মানুষ তৈরির কাজটা করতে হয়। সেই দক্ষ মানুষ তৈরি করতে হবে। রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র হয়ে ওঠার জন্য আমাদের সবার প্রতিনিয়ত যে প্রচেষ্টা, সেটির জন্য সমাজের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের বড় ভূমিকা রাখা উচিত। সে ভূমিকাটি কিন্তু আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের সমাজ এখন অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সময়টায় অনেক সুবিধাবাদী মানুষ যুক্ত হয়। আর সমাজ যেখানে খুব দুর্বল, সেখানে তারা সবল হয়ে যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন