
দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসিআই লিমিটেড তাদের যৌথ উদ্যোগ টেটলি এসিআই (বাংলাদেশ) লিমিটেডে থাকা পুরো শেয়ার ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চুক্তি অনুসারে এ শেয়ার কিনে নেবে টাটা কনজিউমার প্রডাক্টস ওভারসিজ হোল্ডিং লিমিটেড (টিসিপি)। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রির এ তথ্য জানিয়েছে এসিআই লিমিটেড।
তথ্য অনুসারে, শেয়ার কেনাবেচার বিষয়ে এ বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এসিআই লিমিটেড ও টিসিপির মধ্যে একটি যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, টেটলি এসিআই (বাংলাদেশ) লিমিটেডে থাকা এসিআইয়ের ৫০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেবে টিসিপি। ভারতের মুম্বাইভিত্তিক টাটা কনজিউমার প্রডাক্টস গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে টিসিপি। টেটলি এসিআই (বাংলাদেশ) লিমিটেডের মোট শেয়ার সংখ্যা ৩২ লাখ ৫০ হাজার এবং এর অর্ধেক শেয়ার কিনে নিতে টিসিপির পক্ষ থেকে এসিআই লিমিটেডকে প্রস্তাব দেয়া হয়। এর ভিত্তিতে দুই পক্ষের মধ্যে শেয়ার বিক্রি, যৌথ উদ্যোগ বাতিল ও স্বল্প সময়ের জন্য কারখানা ইজারা এবং বিপণন ও বিতরণ সমঝোতাসংক্রান্ত খসড়া চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শেয়ার বিক্রি করে এসিআই লিমিটেড ১০ কোটি ৬১ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা পাবে। এর পাশাপাশি বিপণন ও বিতরণ এবং কারখানা ইজারা চুক্তির আওতায় এসিআই লিমিটেড আরো সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবে। এসিআই লিমিটেড, টিসিপি ও টাটা কনজিউমার প্রডাক্টস ইউকে গ্রুপ মিলে দ্রুতই চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করবে এবং শেয়ার হস্তান্তর ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্নের উদ্যোগ নেবে।
সম্প্রতি এশিয়ান কনজিউমার কেয়ার লিমিটেডে থাকা ২৪ শতাংশ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় এসিআই লিমিটেড। ডাবর ইন্ডিয়ার সাবসিডিয়ারি ডাবর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সঙ্গে এসিআই লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এশিয়ান কনজিউমার কেয়ার লিমিটেড।
চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এসিআই লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৩ টাকা ৪২ পয়সা। এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩৭ টাকা ৬০ পয়সায়।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে এসিআই লিমিটেডের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে যেখানে এ মুনাফা ছিল ৩৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২৩ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৭৮ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৪১ টাকা ৯৮ পয়সায়। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ। ঘোষিত লভ্যাংশ ও আলোচ্য হিসাব বছরের অন্যান্য এজেন্ডায় বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে এ বছরের ২৬ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ছিল ১৭ নভেম্বর।
ডিএসইতে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ২৬০ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ শেয়ারদর ছিল যথাক্রমে ২৬০ টাকা ২০ পয়সা ও ৩৫৮ টাকা ৫০ পয়সা।