প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় আফ্রিকার বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া আফ্রিকার বিভিন্ন দেশও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করতে আগ্রহী।
গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) ‘লুক আফ্রিকা: এক্সপ্লোরিং নিউ হরাইজনস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক হাইব্রিড সেমিনারে আলোচকরা এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব, বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস প্রমুখ। সেমিনারে পাঁচটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এখন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ফুড সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হওয়ায় বাংলাদেশ ও আফ্রিকা গম, সার ও তেল আমদানিতে একই ধরনের সমস্যায় পড়েছে। আফ্রিকান ‘গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট’ (আগোয়া) ও ‘কমন মার্কেট ফর ইস্টার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন আফ্রিকা’র মতো অ্যাক্ট থাকায় ওই অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করলে আমরা বিভিন্ন সুবিধা পেতে পারি। আফ্রিকায় আইটি, এগ্রিকালচার ও ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে বাংলাদেশীদের জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। এর কোনো অঞ্চল শান্তিপূর্ণ আবার কোথাও সংঘর্ষ চলমান। এজন্য বিভিন্ন এলাকার জন্য কৌশলও বিভিন্ন রকম হবে। তবে সবমিলে আফ্রিকা ব্যবসার জন্য বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময়। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ফার্মাসিউটিক্যালের মতো বিভিন্ন সেক্টরে আমাদের জন্য বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ দীর্ঘদিন তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ দ্বারা শোষিত হয়েছে। তবে স্বাধীনতা পাওয়ার পর ও কলোনি থেকে মুক্ত হওয়ার পর তাদের অর্থনৈতিক ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আফ্রিকা অঞ্চলে অনেক দেশ রয়েছে যাদের মধ্যে অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য রয়েছে। আফ্রিকার ৫৪টি দেশের মধ্যে ৩৪টি এলডিসিভুক্ত। এজন্য আফ্রিকার অনেক দেশ বাংলাদেশী পণ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ থেকে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে পণ্য রফতানি বাড়ছে এবং এসব দেশে আরো অনেক বেশি রফতানির সুযোগ রয়েছে।