সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

অধিকাংশ খাতে নেতিবাচক রিটার্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সার্বিকভাবে নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সময়ে প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর সব সূচকের পাশাপাশি গড় লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। আলোচ্য সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির কেবল পাট এবং কাগজ মুদ্রণ খাত ছাড়া সব খাতেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতে সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে চেক নগদায়নের আগে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিষয়টি গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কোম্পানির ঘোষিত আর্থিক ফলাফল নিয়েও বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ নিয়েও তাদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। তাছাড়া ফ্লোর প্রাইসের জন্য বাজার লেনদেন হাতে গোনা কিছু কোম্পানির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে বিষয়গুলোই গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ কমেছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ৩৯২ পয়েন্টে।  সূচকের পতনে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে হাজার ৩০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে হাজার ৪০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ১৭১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭৪টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ১১টির।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে হাজার ৮০১ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের চার কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৮৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে সাপ্তাহিক লেনদেন বেড়েছে ৯৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি বা ২০ দশমিক শূন্য শতাংশ। তবে গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির গড় লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ১০৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। এক্সচেঞ্জটির মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশই ছিল খাতটির দখলে। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে কেবল পাট এবং কাগজ মুদ্রণ খাতে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে পাট খাতে দশমিক ১০ শতাংশ এবং কাগজ মুদ্রণ খাতে দশমিক ২০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া বাকি সব খাতেই গত সপ্তাহে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ভ্রমণ অবকাশ খাতে, ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে ১৮ হাজার ৮০০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে দশমিক ৬২ শতাংশ কমে ১১ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৪৫৪ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ১৭২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন