পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত

মোট লেনদেনের ২২ শতাংশই বস্ত্র খাতের

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহে টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সূচকের পাশাপাশি সময়ে গড়ে দৈনিক দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হচ্ছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে দশমিক ৩৯ শতাংশ। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর প্রায় ২২ শতাংশই হচ্ছে বস্ত্র খাতের শেয়ারের। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক লেনদেন বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম ২৩ মিনিট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। এরপর কিছুটা ছন্দপতন ঘটে। তবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিট থেকেই সূচকে আবারো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। বেলা ১১টা ১৩ মিনিটে ডিএসইএক্স দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে। এরপর সূচকে ওঠানামা দেখা গেলেও দিন শেষে গতকাল এর আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ৪০৮ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল পয়েন্ট বেড়ে হাজার ২৭৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২৭৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৩৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৯৩ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের শেয়ারের।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের বিনিময় মূল্যে স্থিতিশীলতা, জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাস বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থিতিশীলতার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ফলে সূচকের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে টাকার অংকে বড় লেনদেন দেখা যাচ্ছে। অবশ্য বাজারের ঊর্ধ্বমুখিতার সুযোগে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে মুনাফাও তুলে নিচ্ছেন। কারণে গতকাল লেনদেনের শুরুর দিকে সূচকের যে উত্থান ছিল সেটি শেষ পর্যন্ত বজায় থাকেনি।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ৭৬৯ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৮৪টির, কমেছে ১২৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৩টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। ১২ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ১১ দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বিবিধ খাত। আর খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে সেবা আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল টেলিযোগাযোগ খাতে দশমিক শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৩২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ২৮৫ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৮২৯ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩০৪টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ৯৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬৩টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪২ কোটি টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন