এফবিসিসিআইয়ের সেমিনারে বক্তারা

দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর দর্শন এখনো প্রাসঙ্গিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর দর্শন এখনো প্রাসঙ্গিক। তার দেখানো পথেই বর্তমান সংকট উত্তরণের উপায় নিহিত আছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী অর্থনীতিবিদরা।

গতকাল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর অর্থনীতি বাণিজ্য ভাবনাবিষয়ক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনার কৌশল। শুধু রাজনৈতিক মুক্তিই নয়, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যও ছিল বঙ্গবন্ধুর। তাই তার ঘোষিত ছয় দফার মধ্যে তিনটিই ছিল অর্থনীতি বিষয়ক। বঙ্গবন্ধুর এনে দেয়া স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক মুক্তি আনার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কারণে দেশের রফতানি খাতে বৈচিত্র্য এসেছে। সদ্যস্বাধীন দেশে আমদানি-রফতানিতে বার্টার প্রথা চালু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বেসরকারি খাতে পদ্ধতিতে ৪০ শতাংশ অপ্রচলিত পণ্য রফতানি করার শর্ত দিয়েছিলেন তিনি। ওই সিদ্ধান্তের কারণেই রফতানি খাতে চিংড়ি চা যুক্ত হয়েছিল। পরে সরকারি বার্টারেও বিদেশী দেশগুলোকে এসব অপ্রচলিত পণ্য কিনতে বাধ্য করেছিলেন। পরিত্যক্ত শিল্প রাষ্ট্রীয়করণ না হলে স্থিতিশীলতা আসত না। রাষ্ট্রীয়করণ হলেও প্রশাসনিক দায়িত্ব ছিল ব্যক্তিখাতে। ১৯৭৫ সালে বিরাষ্ট্রীকরণের নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা বাস্তবায়নের আগেই তাকে হত্যা করা হয়।

এর আগে স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, কৃষি উন্নয়ন, শিল্প বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সংস্কৃতি, নারী জাগরণ, গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে ধারণ করে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর . আতিউর রহমান। যুদ্ধোত্তর বাস্তবতার নিরিখে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে আপসহীন অভিযাত্রা, রাষ্ট্রনির্ভরতা থেকে ব্যক্তিখাতের বিকাশসহ বিভিন্ন দিকে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন . আতিউর রহমান।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ স্বাধীনতার আগে বাঙালিদের ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে পাট, চা চামড়া রফতানি হতো, কিন্তু সবই ছিল অবাঙালিদের হাতে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে বাংলাদেশের অগ্রগতি সহ্য হয়নি দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবারো সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। মহাকাশে স্যাটেলাইট, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা বাংলাদেশ ট্রেড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য . মোস্তফা আবিদ খান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এম মাহফুজুর রহমান বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, পরিচালকরা, বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, মহাসচিব মাহফুজুল হকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন