ডিসেম্বরে খুলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-তেজগাঁও অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সরকারের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির (পিপিপিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইব্রাহিম। গতকাল প্রকল্পটির চলমান নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়ে এমন আশাবাদের কথা জানান তিনি।

মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা উত্তর দক্ষিণের মধ্যে সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা তৈরি করবে। পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যবসাকেন্দ্রকে সংযুক্ত করবে। যানজট যেমন কমাবে, তেমনি নগরবাসীর জন্য আরামদায়ক সুবিধাজনক যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

নির্মাণকাজ পরিদর্শনের আগে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তারা পিপিপিএর সিইওর কাছে প্রকল্পের সার্বিক কাজের বিস্তারিত অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বিষয়গুলো সুরাহার জন্য পিপিপিএর সিইওকে অনুরোধ জানান।

সময় মোটা দাগে পাঁচটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্মকর্তারা। হাতিরঝিল-বুয়েট র্যাম্প এগুলোর মধ্যে অন্যতম। হাতিরঝিল অংশে র্যাম্পটির কাজ করার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সম্মতি প্রয়োজন। পাশাপাশি পান্থকুঞ্জে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) ভাঙার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এখনো কোনো সংস্থার কাছ থেকে কাজগুলো করার জন্য সম্মতি না পাওয়ার কথা জানান প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা আরো বলেন, কমলাপুরে এক্সপ্রেসওয়ের দুটি র্যাম্প বাদ দেয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু র্যাম্প দুটি বাদ দেয়া হলে এক্সপ্রেসওয়ের রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে। র্যাম্প দুুটি নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। এর বাইরে কারওয়ান বাজারে এফডিসি গেট এলাকায় মেট্রোরেলের অ্যালাইনমেন্টের সঙ্গে কিছু জটিলতা এবং তৃতীয় ধাপের গতিপথে ১১৮টি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

জটিলতাগুলোর বিষয়ে পিপিপিএর সিইও বলেন, ঢাকা বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর। এখানে অবকাঠামো নির্মাণের মতো কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ধরনের জটিলতা তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জটিলতাগুলো দূর করা হবে বলে সময় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন তিনি।

ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। বাস্তবায়ন হচ্ছে তিনটি ধাপে। প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ধাপ বিমানবন্দর-বনানী অংশের অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অংশ বনানী-মগবাজারের অগ্রগতি ৩১ দশমিক শূন্য শতাংশ আর তৃতীয় অংশ মগবাজার-কতুবখালীর অগ্রগতি দশমিক শূন্য শতাংশ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রসঙ্গত, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি তৈরি করা হচ্ছে। মূল এক্সপ্রেসওয়ে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, চীনের শ্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল করপোরেশন গ্রুপ লিমিটেড (সিএসআই) দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিনো-হাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। এজন্য ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিও গঠন করা হয়েছে। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহায়তা করছে বাংলাদেশ সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন