পণ্য পরিবহনসহ যাতায়াত সহজে কাজ করছে সরকার —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের মানুষের যাতায়াত পণ্য পরিবহন সহজ করতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের একেক অঞ্চলে অনেক পণ্য উৎপাদন হয়। সেগুলো সহজে বাজারজাত করার সুযোগ করে দিতে চাই। যাতে করে এসব পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা লাভবান হতে পারেন। আর সেজন্যই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

গতকাল মুজিব বর্ষ উপলক্ষে একটি ব্রড গেজ একটি মিটার গেজ কোচে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত ৩০টি মিটার গেজ ১৬টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাজধানীর কমলাপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরো সচল গতিশীল করতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের জনগণের সর্বত্র চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরো ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়েতে লোকবলের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লোকবল বাড়াতে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- মহাকাশে উেক্ষপণ করা হয়েছে। ফলে অনলাইনে কেনাবেচা, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি সবকিছুই সহজে করা সম্ভব হচ্ছে। অর্থাৎ প্রযুক্তির মাধ্যমেও যোগাযোগের উন্নতি হয়েছে।

সময় বিআরটিসিকে অলাভজনক আখ্যা দিয়ে বিএনপি সরকারের সময়ে বন্ধ করে দেয়ার পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকারের সবকিছুই যে লাভজনক হবে তা কিন্তু নয়। তবে লাভজনক করা যায়। আমরা বিআরটিসিকেও যেমন লাভজনক করেছি, তেমনি রেলকে চালু রেখে প্রমাণ করেছি এটাকেও লাভজনক করা যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কতটুকু লাভ করল বা কতটুকু লাভ করল না, সেটার থেকে বড় কথা মানুষের সেবা কতটুকু দিতে পারল। মানুষ কতটুকু সেবা পেল, তাদের জীবনমান কতটুকু সহজ হলো।

আওয়ামী লীগ দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় মুখ থুবড়ে পড়া বাংলাদেশ রেলওয়েকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার যখন আমি সরকারে আসি তখন সিদ্ধান্ত নিই রেলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় করার। কারণ পৃথক মন্ত্রণালয় না করলে আলাদা বাজেট পাবে না, আলাদাভাবে প্রজেক্ট নিতে পারবে না, কাজ করতে পারবে না। তাই ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর সিদ্ধান্ত নিই এবং ২০১১ সালে আমি রেলপথ মন্ত্রণালয় গড়ে তুলি। এর মাধ্যমে রেল সম্প্রসারণ করা, রেলকে আরো উন্নত করা, মানসম্পন্ন করা; মানুষ যাতে রেলে যাতায়াত করতে পারে, পণ্য পরিবহন করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়।

সময় রেল সংযোগ নির্মাণে তার সিদ্ধান্তের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেল সংযোগের ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমাদের রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সুগম হয় এবং রেলই সেখানে সব থেকে বেশি লাভজনক।

শেখ হাসিনা জানান, রেল ব্যবস্থাকে বর্ধিত করা, যেসব অঞ্চল রেল নেই সেখানে রেল লাইন নিয়ে যাওয়া এবং রেলের ব্যাপক সম্প্রসারণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ফলে যেকোনো দুর্যোগে রেল মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে নতুন রেল লাইন হচ্ছে, ডুয়াল গেজ রেল লাইন হচ্ছে, মিটার গেজকে ডুয়াল গেজ করা হচ্ছে, নতুন লোকোমোটিভ কেনা হচ্ছে। যেসব অঞ্চলে রেললাইন নেই সেগুলোকেও রেলের আওতায় আনতে কাজ চলছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বা বাঙালি জাতির জন্য জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান সেটা এর মাধ্যমে আরো ভালোভাবে জানা সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন