তিন কার্যদিবস পর সূচকের উত্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার থেকেই টানা পতন চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। সূচকের পাশাপাশি সময় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের হারও কমে গেছে। টানা তিনদিন পতনের পর গতকাল ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে পুঁজিবাজার। দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে দশমিক ৫৯ শতাংশ। অবশ্য সূচক বাড়লেও এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সূচক বাড়লেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে মার্জিন ঋণ নীতিমালায় পরিবর্তন এনে তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগের ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিক্রির তুলনায় কেনার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর প্রথম ঘণ্টার ৬৪ পয়েন্ট যোগ হয় সূচকে। অবশ্য এর পর থেকে পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচক। তবে শেষ পর্যন্ত গতকাল দিনশেষে ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৬৩০ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৪১৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ৪০৯ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ১৬ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল হাজার ৫০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিনশেষে যা ছিল হাজার ৪৮৮ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৪৫ কোটি টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮৮৫ কোটি টাকা। দিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৮টি কোম্পানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১৯৬টির, কমেছে ১৪২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪০টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ দখলে নিয়েছে সাধারণ বীমা খাত। ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া বস্ত্র খাতের দখলে ছিল দশমিক ৩১ শতাংশ। গতকাল বিবিধ খাতের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। ঋণাত্মক রিটার্নের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল পাট খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসসি, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ওয়ান ব্যাংক, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, সোনালি পেপার, আইএফআইসি ব্যাংক ফরচুন সুজ।

গতকাল ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, বিএসসি, এটলাস বাংলাদেশ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিবিএস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, একমি পেস্টিসাইডসএডভেন্ট ফার্মা এএফসি অ্যাগ্রো।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর কমার শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, এএমসিএল (প্রাণ), প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা পিইটি, জেমিনি সী ফুড, এপেক্স ফুড, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, আমান কটন ঢাকা ডাইং।

সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ৯৩ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৫৭৬ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৯৯টি কোম্পানি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৬টির, কমেছে ১০৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৪৩ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫৮ কোটি টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন