শর্ত ভেঙে চলছে বেসরকারি আট বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক

আট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানীতে অনুমোদিত ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল জাতীয় সংসদে নোয়াখালী- আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তথ্য জানান। এছাড়া ঢাকায় আরো দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ ক্যাম্পাস রয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ধারা ১৩ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে প্রদত্ত সাময়িক সনদে উল্লিখিত স্থান বা শহরের বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ওই শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা শহরে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি নর্দান ইউনিভার্সিটি তাদের অনুমোদিত ভবন বা ক্যাম্পাসের বাইরে অননুমোদিত ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে অননুমোদিত ভবনগুলো বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক বা জনসাধারণের সচেতনতার্থে ইউজিসির ওয়েবসাইটে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন প্রদানের পাশাপাশি গণবিজ্ঞপ্তিতেও এসব বিশ্ববিদ্যালেয়র নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অবৈধ ভবনে কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত করার জন্য অতি সম্প্রতি ইউজিসি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির কার্যক্রম চলমান। এছাড়া উল্লিখিত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া উত্তরা বনানীতে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় দুটি অবৈধ ক্যাম্পাস এবং ঢাকা শহরের উত্তরায় দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার একটি অবৈধ শাখা রয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্যাম্পাস স্থানান্তর বৈধ কর্তৃপক্ষের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা নিয়ে ২০১৬ সালে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ইউজিসি কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্রতিবেদনে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর শাখা বন্ধের সুপারিশ করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা মুছে দেয়া হয়। সুপারিশে যেহেতু ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে একে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা চলমান এবং তার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা প্রদর্শন করা সম্ভব নয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই বলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান।

শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন আরো দুটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গত চলতি বছরের ১৯ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির তদন্তকাজ চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন