৫ বছরে বিএসএফআইসির লোকসান ৩ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) গত ৫ বছরে ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির আয় হয় ৩ হাজার ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। একই সময়ে ব্যয় হয় ৭ হাজার ৮৬ কোটি ২ লাখ টাকা। 

আজ বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। 

প্রতিবেদনে বিএসএফআইসির লোকসানের ৮টি কারণের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো- চিনির উত্পাদন খরচের চেয়ে বিক্রয়মূল্য কম; বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কমে যাওয়া; পুঞ্জিভূত ঋণ ও সুদের পরিমাণ অনেক বেশি; অধিক চিনি সমৃদ্ধ, পোকা ও রোগবালাই প্রতিরোধে সক্ষম আখের জাত উদ্ভাবন না হওয়া; কারখানাগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো ও জরাজীর্ণ; বেসরকারি খাতে আমদানিকৃত ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উত্পাদন করে কম মূল্যে বাজারজাত করা; আখের মূল্য ও চিনির মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকার এসব কারণে ক্রমাগত লোকসানের কারণে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পরিচালনা করার কারণে ঋণের সুদ বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্পাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং চিনি সংগ্রহের হার কমে যাওয়া।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ক্রমাগত লোকসান দিয়ে যাচ্ছে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে লোকসা হয় ৫২৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা; ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৩৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা; ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮৩৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা; ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।

প্রতিবেদনে করপোরেশনের বর্তমানে দায় দেনার পরিমাণ ৮ হাজার ৮৪৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা বলে জানানো হয়েছে।  এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ ৭ হাজার ১৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ডিএসএল ও পাকিস্তানি ঋণ ৯৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, আখের দাম ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা, বেতন বকেয়া ৯২ কোটি ৩ লাখ টাকা, প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতে ১০৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, গ্র্যাচুইটি ২৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা, সরকরাহকারীদের পাওনা ১৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, আয়কর বাবদ ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ভ্যাট ৯ কোটি টাকা এবং ডিলার জামানত ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, একেএম ফজলুল হক, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এবং মো. শফিউল ইসলাম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন