মার্কেটিং
জগতে বহুল
স্বীকৃত এক
ধারণা হলো—ক্রেতাই
রাজা! মাঝেমধ্যে
ভাবি এমনটা
বলার মাধ্যমে
ভোক্তার শক্তিমত্তার
(বা প্রবল
দাপটের) স্বীকৃতি
দেয়া হয়,
নাকি তার
উল্টোটা?! বুঝতে
অসুবিধা হলো?
আচ্ছা, কথাচ্ছলে
কেউ যদি
নিজের সন্তানকে
ইঙ্গিত করে
বলে, সে
তো এক
রাজপুত্র! তখন
আমরা কোন
অর্থটা বুঝি?
অকর্মণ্য সন্তানকে
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য
করছেন নাকি
তার প্রশংসা?
তাহলে মার্কেটিংয়ের
ক্ষেত্রে আমরা
কেন শুধু
ইতিবাচক অর্থটাই
গ্রহণ করছি?
আমরা ছাত্রজীবনে
শিখেছিলাম পল
মাজুর নামের
এক ভদ্রলোক
বহুল প্রচলিত
এই তত্ত্বের
প্রবর্তক। তবে
এখন ফিলিপ
কটলারের নামে
Customer is the king in marketing কথাটা
ইন্টারনেটে ভাসছে।
আর দশজনের
মতো আমারও
শুরুর দিকে
সেটা মানতে
সমস্যা ছিল
না। কিন্তু
একদিন ছেলেকে
রাজার গল্প
শোনাতে গিয়ে
তাতে সন্দেহ
ঢুকে পড়ে!
ভেবে দেখলাম
অধিকাংশ রাজাই
ছিলেন কিঞ্চিৎ
বোকা আর
ব্যাপকভাবে আবেগতাড়িত!
সামান্য ইস্যুতে
তারা এমন
সব কর্মকাণ্ড
করে বসতেন,
যা সাধারণ
বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরও
করার কথা
না।
এই যেমন
ধরুন, রাজাকে
ব্যতিক্রমী কোনো
জিনিস দেখিয়ে
অবাক করতে
পারলেই তাকে
(স্থান-কাল-পাত্র
বিবেচনা ছাড়াই)
রাজকন্যার সঙ্গে
বিয়ে দেয়া,
সঙ্গে অর্ধেক
রাজত্ব! কিংবা
ছোট্ট মেয়ে
(বুঝেই হোক
কিংবা না
বুঝে) বলল,
‘বাবা,
আমি তোমাকে
নুনের মতো
ভালোবাসি।’ আর
অমনি তাকে
এক কাপড়ে
বনবাসে পাঠিয়ে
দেয়া হলো!
এভাবে গল্প
শুনিয়ে বিস্মিত
করা, রূপবান
ও রহিমের
অসম বিয়ের
আদেশ স্বপ্নযোগে
পাওয়া, সন্তানের
অসুস্থতা দূর
করা ইত্যাদি
কারণে হুটহাট
করেই রাজারা
অযৌক্তিক সব
ঘোষণা দিয়ে
বসতেন। হয়তো
সে কারণেই
দীর্ঘমেয়াদে তাদের
রাজত্ব টেকেনি।
তাহলে ক্রেতাকে
তেমন এক
চরিত্র হিসেবে
বর্ণনা করলে
তাকে শক্তিধরের
পরিবর্তে ‘বোকা’
হিসেবে চিত্রায়ণের
বিষয়টি খুব
কি দোষণীয়
হবে? এমনটা
বলার (রাজা
বলে গণ্য
করার) পেছনে
আরেকটা উদ্দেশ্য
থাকাও অসম্ভব
নয়। সেটা
হলো, তোষামোদির
মাধ্যমে তাদের
‘সন্তুষ্ট
রেখে’ নিজেদের
স্বার্থ হাসিল
করা।
তাছাড়া বিলাস-ব্যাসনে
মত্ত, সামান্য
কারণে যুদ্ধে
লিপ্ত হওয়া,
অযৌক্তিক (উচ্চমূল্যে
মণিমাণিক্য কেনা,
প্রত্যেক রানীর
জন্য আলাদা
প্রাসাদ নির্মাণ
ইত্যাদি) খাতে
বিপুল অর্থ
ব্যয় করা,
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
নিরসনের পরিবর্তে
(অনেক সময়
তা) উসকে
দেয়া—এমন
অসংখ্য কাজ
যারা করতেন—একজন
ক্রেতাকে তাদের
সঙ্গে তুলনা
করার মধ্যে
বাঁকা কোনো
উদ্দেশ্য থাকাটা
খুব কি
অসম্ভব?
আমার মতে,
বাহ্যিকভাবে প্রচণ্ড
শক্তিশালী হলেও
রাজা-বাদশারা
যুক্তির ধার
খুব একটা
ধারতেন না।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে
দূরদর্শিতা, যুক্তি
ও বাস্তবতার
চেয়ে অধিকাংশ
ক্ষেত্রেই তাদের
আবেগ প্রাধান্য
পেত। আজকের
ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত
বিশ্লেষণ করলে
কি একই
চিত্র দেখা
যায় না?
তাছাড়া বর্তমানে
ক্রেতাদের সত্যিকার
অবস্থান রাজা
তো দূরের
কথা, নিপীড়িত
প্রজাদের চেয়েও
দুর্বল ও
ভঙ্গুর।
একবার ভাবুন,
অধিকাংশ কোম্পানির
রয়েছে বহু
বছরের ব্যবসায়িক
অভিজ্ঞতা, বিপুল
পরিমাণ মূলধন,
মিডিয়ার ওপর
প্রভাব, দেশে-বিদেশে
পড়ালেখা ও
প্রশিক্ষণ নেয়া
কর্মী-ব্যবস্থাপক,
আন্তর্জাতিক ও
স্থানীয় গবেষণার
তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে
প্রবেশাধিকার। এমন
অসংখ্য হাতিয়ারের
সমন্বয়ে তারা
ক্রেতাদের ওপর
দখল লাভের
জন্য ঝাঁপিয়ে
পড়ছে।
অন্যদিকে ক্রেতা?
ওই পণ্যটা
দেখার আগে
হয়তো এক
মিনিটও সে
বিষয়ে চিন্তা
করেনি! তার
কাছে না
আছে সংশ্লিষ্ট
বিষয়ের প্রয়োজনীয়
তথ্য কিংবা
সত্যিকারের বিশ্লেষণী
ক্ষমতা। তার
পরও তাকে
‘রাজা’
বলে ঘোষণা
করা অনেকটা
‘পুতুল
রাজা’র
কথাই স্মরণ
করিয়ে দেয়।
তার পরও
ক্রেতাকে রাজা
বললে তা
শুনে আমরা
খুশি হই
কেন? কারণ
আমরা নিজেকে
ক্ষমতাধর ভাবতে
পছন্দ করি।
আর কেউ
তা যথার্থভাবে
প্রয়োগ করলে
অতিশয় প্রীত
বোধ করি।
এ ব্যাপারে
এক গল্প
মনে পড়ছে।
এক লোক
তেলবাজিতে ছিল
ওস্তাদ। খুব
গুরুগম্ভীর, সৎ
ও নীতিমান
এক বসের
কাছে গিয়ে
তার বিদ্যার
প্রয়োগ শুরু
করল। তখন
বস খুব
রেগে বললেন,
খবরদার আমাকে
তেল মারবেন
না; ওটা
আমি একদম
পছন্দ করি
না। তখন
তৈলবিশারদ খুব
স্বাভাবিক ভঙ্গিতে
বলে উঠল,
‘স্যার,
তেল পছন্দ
করে না—এমন
মানুষ আমার
জীবনে এই
প্রথম দেখলাম!’
বস তখন
হেসে বললেন,
আমি বুঝতে
পারছি আপনি
আমাকে তেল
মারছেন। তবুও
বলতেই হবে
যে আপনার
ধরনটা আমার
ভালো লেগেছে!
আমার মনে
হয়, অধিকাংশ
ক্রেতার অবস্থাই
তেমন। বাহ্যিকভাবে
তাদের প্রচণ্ড
শক্তিধর মোড়ক
দেয়ার জন্য
‘রাজা’
বলে সম্মোধন
করা হচ্ছে।
আর কোম্পানির
স্বার্থ ষোলো
আনার ওপর
আঠারো আনা
উসুল করা
হচ্ছে, তাই
না?
এই নিবন্ধের
ভাবনা মাথায়
আসার সময়
শিরোনাম ছিল
‘ক্রেতার
কাছে যুক্তি
না আবেগ—কোনটা
বড়?’ কারণ
ক্রেতা নিজেকে
যতই যুক্তিশীল
ভাবুক না
কেন, প্রতিনিয়ত
আবেগের কাছে
ধরাশায়ী হয়।
বিশেষত ক্রেতার
ক্রয়সামর্থ্য যত
বাড়ে, আবেগনির্ভর
সিদ্ধান্ত গ্রহণের
প্রবণতাও বাড়তে
থাকে। কথাটা
বিশ্বাস করতে
কষ্ট হচ্ছে?
তাহলে একই
অফিসে কর্মরত
সর্বোচ্চ ও
সর্বনিম্ন বেতনধারী
দুজন ব্যক্তির
কথা ভাবুন।
একজন মাসে
১০-১২
হাজার টাকায়
সংসার চালান।
আরেকজন হয়তো
৩-৪
লাখ টাকা
বেতন পান।
কিন্তু (অধিকাংশ
ক্ষেত্রে) বসের
পারসোনাল লোনের
পরিমাণ সেই
পিয়নের চেয়ে
ঢের বেশি!
কেন এমনটা
হয়? বসের
পরিবারের লোকেরা
কি দশ
গুণ বেশি
খাবার খায়,
নাকি একবারে
দশ সেট
করে পোশাক
পরে?
ক্রেতা যে
যুক্তির চেয়ে
আবেগকে প্রাধান্য
দেয়, তার
অসংখ্য দৃষ্টান্ত
আমাদের চারপাশে
রয়েছে। এই
যেমন কৈশোরে
মাত্র কয়েক
সপ্তাহে নজর-কাড়া
সুন্দরী হওয়ার
আশায় যে
বস্তু মাখা
শুরু হয়,
যৌবন অস্তাচলে
যাওয়ার পরেও
(তেমন কারো
নজর কাড়তে
নিশ্চিত ব্যর্থ
হওয়ার পরেও)
তারা কি
সেই পণ্যটা
ছুড়ে ফেলে?
সাধারণত না।
আবার যে
বিশেষ দ্রব্য
খাওয়ালে সন্তান
জ্ঞান-বুদ্ধিতে
সবাইকে ছাড়িয়ে
যাবে বলে
দাবি করা
হয়, বাছাধন
পরীক্ষায় টেনেটুনে
পাস করার
পরেও রাগে-ক্ষোভে
মা-বাবা
কি তা
বর্জন করেন?
আমার তো
মনে হয়
আরো বেশি
করে খাওয়াতে
শুরু করেন!
এমন অসংখ্য
মানুষ রয়েছে,
যারা রাস্তার
ধারে বিক্রি
হওয়া ভাজা-পোড়া
খাবার (স্ট্রিট
ফুড) খেয়ে
পেটের সমস্যায়
সারা রাত
ঘুমাতে পারেন
না। তার
পরও সেটা
দেখলে জিভের
জল নিয়ন্ত্রণে
রাখতে পারে
না। ফুচকা-চটপটির
অস্বাস্থ্যকর প্রস্তুত
প্রণালিসংক্রান্ত ভাইরাল
ভিডিও দেখার
পরেও কি
সেগুলো খাওয়া
ছাড়তে পারেন?
বরং গলাধঃকরণের
সময় তৃপ্তিতে
চোখ দুটো
বুজে আসে,
তাই না?
৩ লাখ
টাকায় বিক্রি
হওয়া লেহেঙ্গা
কিংবা ৩০
লাখ টাকার
কোরবানির গরুর
ক্ষেত্রেও কি
ক্রেতার পক্ষে
বড় কোনো
যুক্তি থাকে?
আবার যে
মানুষটা করোনার
ভয়ে বাসা
থেকে একশ
গজ দূরের
মসজিদে যায়
না, তাকেই
যদি যুক্তরাজ্যের
ভিসা ধরিয়ে
দেয়া হয়,
তখন কি
তা ফিরিয়ে
দেবে? আবার
সেই ব্যক্তিই
ঘরোয়া আলাপে
জোরগলায় বলবে,
সে দেশের
করোনা পরিস্থিতি
খুব খারাপ,
তাই না?
ঠাণ্ডা পানীয়র
ক্ষতিকর দিক
সম্পর্কে জানার
পরেও বহু
যুক্তিশীল মানুষ
ভাবে, মাঝেমধ্যে
একটু-আধটু
খেলে তেমন
কিছু হয়
না! আবার
ধূমপানের লাভ-ক্ষতির
তর্ক ধূমায়িত
কক্ষ ছাড়া
জমেই না!
অন্যদিকে কভিডের
সময় ঠাণ্ডাজাতীয়
জিনিস পরিহারে
তত্পর ব্যক্তিরাও
১ ডলারে
আনলিমিটেড আইসক্রিম
খাওয়ার অফার
পেয়ে করোনাকে
পরোয়া না
করে সুদীর্ঘ
লাইনে দাঁড়ান!
মজার ব্যাপার
হলো, সেই
আইসক্রিমের অফারদাতা
ছিল প্যারিসভিত্তিক
এক পাঁচতারকা
হোটেল। অথচ
ওই ঘটনার
মাসখানেক আগে
ফ্রান্সের পণ্য
বর্জনের হুংকারে
এদেশীয় ফেসবুক
ছিল সয়লাব!
১২ বছর
স্যার-ম্যাডামদের
পিটুনি খেয়ে,
দীর্ঘদিন প্রাইভেট
পড়েও অধিকাংশ
বাংলাদেশী ইংরেজি
শিখতে পারে
না। অথচ
তারাই ‘একখানা
বিশেষ পুস্তক
আয়ত্ত করিয়া
ইংরেজির আদ্যোপান্ত
শিখিয়া লইবে’—এমন
ভাবনায় রকমারিতে
হুমড়ি খেয়ে
পড়ছে! ইহকাল
ও পরকালে
সমানতালে সফল
হওয়ার আকাঙ্ক্ষায়
কেনা রকমারির
শীর্ষ বিশে
থাকা বইয়ের
তালিকা দেখে
বিস্ময় জাগে
বটে! সফল
হওয়ার জন্য
এত মানুষ
বই কিনছে,
তার পরও
ব্যর্থ মানুষে
চারপাশটা গিজগিজ
করে, আজব
না ব্যাপারটা?
প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলো
জামানতের বিপরীতে
৬ পার্সেন্টের
বেশি লাভ
দিতে হিমশিম
খায়। অথচ
ভুয়া এনজিও
১৫-২০
পারসেন্ট মুনাফা
দেবে শুনেই
অনেকে দৌড়ে
গিয়ে বিপুল
পরিমাণ অর্থ
তাদের হাতে
তুলে দিয়ে
আসে। নিজেদের
পেনশনের টাকা
জমা রাখা
মানুষগুলোকে অমন
কাণ্ড করতে
দেখে বিস্ময়
জাগে—ভুল
তাহলে শুধু
তরুণরাই করে
না! শুধু
তাই না,
কমিশন পাওয়ার
লোভে অন্যান্য
আত্মীয়স্বজনের অর্থও
সেখানে বিনিয়োগ
করিয়েছে! অন্যদিকে
সাধারণ জ্ঞান-বুদ্ধিতেও
যাদের কর্মকাণ্ডে
শিরকের স্পষ্ট
নিদর্শন ধরা
যায়, তাদের
জন্যও জীবন
বাজি রাখা
মুসলমান ভক্ত-আশেকানের
অভাব হয়
না।
আবার রেস্টুরেন্টে
দীর্ঘক্ষণ মেনু
বিশ্লেষণ করে
শেষমেশ অর্ডার
করা হয়
ওয়েটারের পরামর্শে।
সেটাই যদি
হবে তাহলে
শুরুতেই তাকে
জিজ্ঞাসা করা
হয় না
কেন? আসলে
গবেষণা বলছে,
অনেক ক্রেতা
ঘণ্টার পর
ঘণ্টা এমনকি
কয়েক দিন
বিশ্লেষণ করেও
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
নেয় মাত্র
কয়েক সেকেন্ডে!
অধিকাংশ ক্ষেত্রে
সেই সিদ্ধান্ত
হয় আগের
বিশ্লেষণে যৌক্তিক
মনে হওয়া
সিদ্ধান্ত থেকে
একেবারে ভিন্ন।
দোকানে পণ্য
বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও
প্রায়ই এমনটা
দেখা যায়।
ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজে
অসংখ্য মানুষ
বিশ্বাস করে।
সত্যিই বিশ্বাস
করা উচিত
কিনা, সেটা
অন্য বিতর্ক।
তবে কিশোরগঞ্জের
পাকুন্দিয়া উপজেলায়
আয়োজিত ‘ফুঁ
অনুষ্ঠান’ আমাকে
বেশ ভাবিয়েছে।
শোনা যায়,
কয়েক দিন
মাইকিং করে
প্রায় ৫০
হাজার মানুষকে
পানি পড়া
নেয়ার জন্য
বড় এক
মাঠে জড়ো
করা হয়।
তারপর মঞ্চে
দাঁড়িয়ে কবিরাজ
সাহেব মাইক্রোফোনে
সজোরে ফুঁ
দেন। তখন
সবাই নিজেদের
শিশি-বোতল-মগ-জগসহ
অন্যান্য পাত্র
সেদিকে মুখ
করে ধরে
রাখে! ফুঁয়ের
এমন বায়বীয়
ক্ষমতায় বিশ্বাস
করা সবাই
কি মূর্খ-নিরক্ষর
ছিল? ছবিতে
কিন্তু কোট-প্যান্ট
পরা অনেককেই
দেখা যাচ্ছিল!
আবার ভাবুন,
৪ লাখ
টাকায় গাড়ি
হয়; অন্যদিকে
৪ কোটি
টাকা দিয়েও
অনেকে সেটা
কেনেন। তাহলে
দামি গাড়িটিতে
কি সত্যিই
১০০ গুণ
বেশি সুযোগ-সুবিধা
থাকে? না
থাকলে ক্রেতারা
সেগুলো শতগুণ
অর্থ দিয়ে
ক্রয় করে
কেন? আবার
বিমানে বিজনেস
ও ইকোনমি
ক্লাসের মধ্যে
সত্যিই কি
ততটা পার্থক্য
থাকে—টিকিটের
দামে যেমনটা
দেখা যায়?
করোনাকালে ধনী
লোকেরা স্বাস্থ্য
সুরক্ষার জন্য
যে পরিমাণ
অর্থ ব্যয়
করছে, তার
বিপরীতে গরিব-অসহায়
লোকেরা আদৌ
কোনো ব্যয়
করেছে কি?
তার পরও
কোন শ্রেণীর
আক্রান্ত হওয়ার
হার বেশি?
এর পরও
যারা নিজেকে
ব্যতিক্রমী যুক্তিশীল
(সাধারণ মানুষের
মতো নন)
বলে মনে
করছেন, তাদের
কাছে দুটো
প্রশ্ন রেখে
শেষ করি।
আপনার জীবনে
মা-বাবার
অবদান বেশি
নাকি সন্তানদের?
কিন্তু কাদের
ব্যাপারে আপনি
অধিকতর যত্নশীল?
আরেকটা বিষয়
হলো, স্মার্টফোনের
অধিক ব্যবহার
নানাভাবে ক্ষতিকর
জানার পরেও
দিন দিন
এর পেছনে
সময় বরাদ্দ
বাড়ছে নাকি
কমছে? নিজেকে
যুক্তিশীল ভাবা
আর বাস্তব
কর্মকাণ্ডে ব্যাপক
এই পার্থক্য
ভাবনার বিষয়
নয় কি?
আসলে আমরা
প্রত্যেকেই নিজেকে
যুক্তিশীল ও
বুদ্ধিমান ভাবতে
পছন্দ করি।
একজন ধূমপায়ী,
মাদকাসক্ত, জুয়াড়ির
সঙ্গে খোলামেলা
আলাপ করুন।
দেখবেন তাদের
নিজ নিজ
কার্যকলাপের পক্ষে
অসংখ্য যুক্তি
রয়েছে। হায়
হায় কোম্পানির
কাছে সর্বস্ব
খোয়ানো কিংবা
ভণ্ড কবিরাজের
কাছে গিয়ে
নিঃস্ব হওয়া
মানুষটিও তার
কর্মকাণ্ডের সমর্থনে
অনায়াসে ডজন
খানেক যুক্তি
হাজির করবে!
তাহলে...ক্রেতা
আবেগ নাকি
যুক্তি কোনটাকে
প্রাধান্য দেয়?
মো. আব্দুল হামিদ: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও ‘মস্তিষ্কের মালিকানা’ বইয়ের লেখক