জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ শিশু

বণিক বার্তা ডেস্ক

পানি বায়ুদূষণের কারণে সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বিশ্বের অন্তত ৮০ কোটি শিশু। গতকাল ব্যাপক পূর্বে অজ্ঞাত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে প্রকাশিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। খবর এএফপি।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, বিশ্বের প্রতি তিন শিশুর একটি সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের রক্তে শক্তিশালী নিউরোটক্সিনের উপস্থিতি তাদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বিষক্রিয়ার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, সিসা নীরবে শিশুদের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। এর ফল এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় খুব সামান্যই। সিসা দূষণের বিস্তৃত পরিসর এবং মানবদেহ সমাজের ওপর এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব আমলে নিয়ে এর বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সিসায় আক্রান্ত শৈশব শিশুদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে পরবর্তী জীবনে তারা কিডনিজনিত সমস্যা হূদরোগে ভোগে। আর সংকট সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায়। সিসা দূষণের বহু উেসর মধ্যে অন্যতম উন্মুক্ত চুল্লি, রঙ পেট্রল। এছাড়া বহু দেশে সিসার পাইপলাইন পানীয়জলের সরবরাহে রাসায়নিকটির উপস্থিতি মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যায়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, অধিবিষটির অন্যতম প্রধান উৎস হলো রিসাইকেল করা হয়নি এমন কিংবা বাজেভাবে উন্মুক্ত স্থানে ফেলে দেয়া গাড়ির ব্যাটারি। দেখা গেছে, যেসব দেশে শিশুদের মধ্যে সিসার বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি, সেসব দেশে ২০০০ সালের পর সড়কে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণে এসে দাঁড়িয়েছে।

সিসার বিষক্রিয়ার ঝুঁকিতে থাকা শৈশব নিয়ে বিশ্লেষণটি সংকলন করেছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যবিষয়ক অন্যতম শীর্ষ গবেষণা সংস্থা দি ইনস্টিটিউট অব হেলথ মেট্রিকস ইভ্যালুয়েশন। সংস্থাটিতে আংশিক অর্থায়ন করেছে দ্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি দেখেছে, গত কয়েক বছরে যেখানে ধনী দেশগুলোর শিশুদের রক্তে সিসার পরিমাণ কমছে, সেখানে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের ক্ষেত্রে তা মারাত্মক পর্যায়ে বেড়েছে।

দাতব্য সংস্থা পিওর আর্থের সভাপতি রিচার্ড ফুলার বলেন, ভালো খবর হলো শ্রমিক, শিশু আশপাশের পরিবেশকে আক্রান্ত না করেই নিরাপদে সিসা রিসাইকেল করা যায়। তাছাড়া সিসার বিষক্রিয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে আরো বেশি সচেতন করে তোলা যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে তারা শিশুদের পাশাপাশি নিজেদেরও সিসার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন