সরকার জনস্বার্থে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিয়েছে —ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদে জনসমাগম এড়াতে গণপরিবহন বন্ধ রাখতে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ সত্ত্বেও সরকার জনস্বার্থে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা জানেন, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্তের সংখ্যা একদিন কমলে আবার পরদিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন ঈদে সমাগম এড়ানো না গেলে সংক্রমণ উচ্চমাত্রায় পৌঁছে যাবে। সরকার গণপরিবহন চলাচল অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদযাত্রায় প্রত্যেককে সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। পশুর হাট, লঞ্চ, বাস, ট্রেন স্টেশন, ফেরিঘাট, শপিং মলসহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সামাজিক দূরত্ব মানার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। মাস্ক পরিধান অবশ্যই করতে হবে। জীবনকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য জীবিকা অর্জনে চলাচল যেন জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি না করে, সেদিকে আমাদের সর্বোচ্চ খেয়াল রাখতে হবে। বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ঈদে গণপরিবহন বন্ধের সুপারিশ সত্ত্বেও সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে, জনস্বার্থে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিয়েছে।

তিনি বলেন, শুরু থেকেই একটি মহল সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করাকেই দেশ জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন হিসেবে ব্রত করে নিয়েছে। দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানকে তারা সমর্থন সহযোগিতা না দিয়ে বরং অন্ধ সমালোচনা করছে। সরকার নাকি পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে অনিয়মকারীদের। আমি জানতে চাই, আপনাদের সময় তো দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, ছিল দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্য। তখন কি ধরনের একটি সাহসী উদ্যোগ নিতে পেরেছিলেন? পেরেছিলেন দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে কিছু করতে? পারেননি। যারা গ্রেনেড হামলার বিচার করতে গিয়ে জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছে, চলমান অভিযানকে নাটক বলে পরিহাস করা তাদের মুখেই মানায়। যারা নাটক সাজায়, নাটক করে যাচ্ছেন অব্যাহতভাবে, তারা সবকিছু তো নাটক দেখতে পাবেনএটাই স্বাভাবিক।

সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজদের, দুর্বৃত্তদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। গুটিকয়েক মানুষের লোভ, প্রতারণা, চাতুর্যের কাছে জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা জিম্মি হতে পারে না। তাদের স্বপ্ন সাধনা দিন-রাত পরিশ্রম বর্ণহীন হতে পারে না। শেখ হাসিনা সরকার দেশের জনমানুষের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দেয়। তাই যারা জনস্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যক্তিস্বার্থ সুরক্ষার অপপ্রয়াস চালাবে, যে ক্যাম্পাসেই অবস্থান করুক, তাদের রক্ষা নেই। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতেই হবে।

তিনি বলেন, রোগীর অভাবে কোনো কোনো হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমের রিপোর্ট এসেছে? সংক্রমণের বর্তমান স্তরে রোগীর সংখ্যা কম নয়। তাছাড়া সাধারণ রোগী তো রয়েছে। হাসপাতাল বন্ধ রাখা সমাধান নয়। আমি বলব, আপনারা রোগীদের আস্থা ফিরিয়ে আনুন। হাসপাতালমুখী হওয়ার পরিবেশ তৈরি করুন। অনেক বেসরকারি হাসপাতালের ওপর নানা কারণে রোগীদের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমেছে। তাই আশা করব, আস্থা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বন্যা ক্রমে ছড়িয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে ত্রাণ দুর্যোগ মন্ত্রণালয়কে সরকারিভাবে নেমে পড়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের পাশাপাশি আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের বেসরকারিভাবে এবং স্বেচ্ছাসেবকদের বন্যাদুর্গতদের প্রতি মানবিক সহায়তা দিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। অনেকে ঢাকায় বসে বক্তৃতা-বিবৃতি-দোষারোপের রাজনীতি করছে, তাদের প্রতি অনুরোধ করছি বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন