সামরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত ভারত-শ্রীলংকা

বণিক বার্তা ডেস্ক

সামরিক শক্তি জোরদার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমুদ্র যোগাযোগ বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে শ্রীলংকা ভারত। অঞ্চলটিতে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সাক্ষাতের পর পদক্ষেপের ঘোষণা এসেছে। খবর এএফপি।

অঞ্চলটিতে ভারতের দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের পদচারণা বাড়ছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় শ্রীলংকা মালদ্বীপে বন্দর সড়ক নির্মাণ এবং বিমানবন্দর সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে চীন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছরের নভেম্বরের শেষ দিকে ভারত সফরে এসেছিলেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। সময় দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, অঞ্চলে চীনকে দূরে রাখতে হলে ভারতসহ অন্য আঞ্চলিক শক্তি পশ্চিমা দেশগুলোর বড় বিনিয়োগ দরকার। অন্যথায় শুধু আমরা না, অঞ্চলের অন্য দেশগুলোও চীনের অর্থনৈতিক সহায়তা নিতে বাধ্য হবে।

পরিস্থিতিতে শনিবার শ্রীলংকা সফরে যান অজিত দোভাল। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একটি সমুদ্র গবেষণা সহযোগিতা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অজিত দোভালের আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজাপাকসের অফিস। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত না জানালেও অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকে প্রকল্পটির পর্যবেক্ষক রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া দিল্লি কলম্বোর মধ্যে সামরিক শক্তি কোস্টগার্ড সহযোগিতা জোরদার করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে একই বিবৃতিতে। প্রসঙ্গত, নভেম্বরে রাজাপাকসের দিল্লি সফরের সময় দেশটিকে ৪৫ কোটি ডলার অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিকে নিজের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরে রাজাপাকসে চীন যাচ্ছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। অন্যদিকে নিজের প্রথম বিদেশ সফরে প্রেসিডেন্টের বড় ভাই দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ভারতে যাচ্ছেন। দিনক্ষণ না জানালেও কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসব সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছে কয়েকটি সরকারি সূত্র।

ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের সঙ্গে শ্রীলংকার জোট থাকলেও চীনের

সঙ্গেও দেশটির সুসম্পর্ক বিদ্যমান। রাজাপাকসের বড় ভাইয়ের আমলে দেশটিতে কয়েক কোটি ডলারের চীনা বিনিয়োগ ঋণ এসেছে। তবে মাহিন্দা রাজাপাকসের আগের সরকারের সময়েও দেশটিতে বেইজিংয়ের বিনিয়োগ বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার কলম্বোয় সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতিতে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। সময় শ্রীলংকা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার আসন্ন বেইজিং সফর নিয়ে আলাপ করেন তিনি। এদিকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে শ্রীলংকার স্বার্থ রক্ষার্থে চীন সবসময় দেশটির পাশে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে রাজাপাকসের অফিস। রাজাপাকসের চীন সফরে প্রযুক্তি, পর্যটন অবকাঠামোসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

স্মরণীয়, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে কলম্বোর দক্ষিণে অবস্থিত হাম্বানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে ইজারা দিতে বাধ্য হয় শ্রীলংকা। কৌশলগত কারণে বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন