ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা

দেশে অবস্থানরত বিদেশী ও বিদেশে বাংলাদেশী নাগরিক হিসাবভুক্ত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২১ সালে দেশে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃৃহগণনা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত শুমারির মূল গণনাকাজ হবে ওই বছরের ২ জানুয়ারি, তা চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। জনশুমারিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিক ও বিদেশে অবস্থানরত অথবা ভ্রমণরত বাংলাদেশী নাগরিকদের গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জনশুমারি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ প্রারম্ভিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইউএনএফপিএর দেশীয় প্রতিনিধি ড. আশা টেরকেলন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিবিএসের মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম। শুমারির ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল হক সরদার।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি কাজ আমাদের নিয়মনীতি অনুয়ায়ী করতে হবে। বিধিবিধান পালন করতে হবে অক্ষরে অক্ষরে। জনগণের জন্য আমরা কাজ করি। তারা যেন আমাদের কাজে সন্তুষ্ট হয় এবং আমাদের কাজের মাঝে তাদের যেন আস্থা প্রতিফলিত হয়। আগের চেয়ে আরো নিখুঁত তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। এখানে কোনো আপস চলবে না।

জনশুমারিতে যেকোনো ক্রয় ও বিক্রির ক্ষেত্রে প্রকল্পে জড়িত সবাইকে সাবধান করে তিনি বলেন, যাতে কোনো ধরনের অপচয় না হয়। যদি কাজে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে তা আইনিভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন স্মরণীয় করে রাখতে দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার ক্ষণ গণনা (কাউন্ট ডাউন) শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ। দেশব্যাপী জনশুমারির মূল গণনা ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। খানা তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রথমবারের মতো এ শুমারিতে মূল শুমারির আগে লিস্টিং অপারেশন পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি খানার জন্য একটি ইউনিক হাউজহোল্ড আইডি প্রদান করা হবে। এবারই প্রথম মাল্টিমোড (মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, পিক অ্যান্ড ড্রপ, পেপার বেজড, কল সেন্টার ইত্যাদি) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে।

দুর্নীতি সম্পর্কে সচেতন করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি সম্পর্কে আমাদের পদে পদে সাবধান হতে হবে। ক্রয়-বিক্রিতে আমরা যেন সঠিক দরদাম পেতে পারি। আপনাদের আমি দূূর থেকে দেখব, কাছে থেকে দেখব। কোনো ধরনের ব্যত্যয় যদি আমাদের সামনে আসে, তাহলে আমরা সেটা আইনিভাবে প্রতিরোধ করব। যারাই গণনার কাজ করবে, তাদের কাজগুলো সঠিকভাবে মনিটরিং করতে হবে, যাতে এ গণনার কাজে কেউ বাদ না পড়ে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সঠিকভাবে তথ্য উপস্থাপন না করলে সমস্যায় পড়তে হয়। তথ্য তুলে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ভেরিয়েশন যেন খুব বেশি না হয়। এজন্য সঠিক পদ্ধতি মেনে কাজ করতে হবে। সিস্টেম অনুযায়ী কাজ না করার ফলে আমাদের কাজগুলো বিশ্বের সামনে ফুটে উঠছে না। তথ্য কালেকশনে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।

১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সর্বশেষ ও পঞ্চম জনশুমারি ও গৃহগণনা হয় ২০১১ সালে। জনশুমারিতে ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পে সরকারের ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৮ লাখ এবং বিদেশী অর্থায়ন ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন