কোনো দেশের নাগরিক হলে আপনার কি শুধু ওই দেশের ভূখাণ্ডিক সীমানার ভেতরে উপার্জিত আয়, নাকি স্বাধীনভাবে যে দেশেই আয় করুন না কেন সব অর্থের ওপর কর দেয়া উচিত? সাম্প্রতিক সময়ে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে জনআলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ভারত, চীন ও চিলি বৈশ্বিক আয়ের ওপর কর আরোপ করে। আবার পশ্চিম ইউরোপ, জাপান, কানাডা, পেরু ও কলম্বিয়ায় নিজস্ব ভূখণ্ডের ভেতরকার আয়ের (টেরিটরিয়াল ইনকাম) ওপর কর আরোপ করা হয়। যদি পৃথিবী বৈশ্বিক করায়নের দিকে যাত্রা করে এবং কিছু প্রারম্ভিক তথ্য বিনিময় প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ঘটায়, তাহলে বিশেষত উন্নয়নশীল বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর এর প্রভাব হবে অত্যন্ত ইতিবাচক।
সরকারের ব্যয় নির্বাহ কার করা উচিত এবং যেকোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একটি ইস্যু কীভাবে কেন্দ্রীয় ইস্যুতে পরিণত হয়? এটিও এক বড় প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর সামাজিক পছন্দ-প্রাধিকার এবং কার্যকারিতা বিবেচনা উভয়কেই সমন্বয় করে, যদিও প্রথমোক্তটি প্রায় ক্ষেত্রে শেষোক্ত বিষয়কে আড়াল করে।
অধিকাংশ রাষ্ট্রশাসন ব্যবস্থায় মানুষ দরিদ্রের চেয়ে ধনীর ওপর অধিক হারে কর আরোপ পছন্দ করে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের আরোপিত মাথাপিছু কর (পোল ট্যাক্স)। থ্যাচার ১৯৯০ সালের নভেম্বরে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন, যখন তিনি সবার জন্য একই হারে কর আরোপের চেষ্টা করেছিলেন।
এদিকে কার্যকারিতা বিবেচনা বলে যে কর সেসব পণ্য বা বস্তুর ওপর আরোপ করা উচিত, করের প্রতিক্রিয়ায় যেগুলো স্থানান্থর বা পরিবর্তন কঠিন। যেমন
জমি। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে জমি স্থানান্তর করা কঠিন, কিন্তু
পেট্রলের ওপর পৌর কর এড়ানো যেতে পারে; যদি জ্বালানি তেলের ওপর কর আরোপ করে না এমন মিউনিসিপ্যালিটির কাছাকাছি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করা যায়। মিউনিসিপ্যালিটিগুলোর মধ্যকার প্রতিযোগিতা এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা পেট্রলের ওপর কর প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারে। বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক সীমান্তের চেয়ে স্থানীয় পৌর সীমানাগুলোয় করভিত্তির অধিক সহজেই স্থানান্তর হওয়া একটি কারণ কেন জাতীয় সরকারগুলো অনেক কর আরোপ করে এবং আহরণ করে এবং তা রাষ্ট্র ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে বিনিময় করে।
আমাদের শ্রম, নাকি পুঁজি-মূলধনের ওপর কর আরোপ করা উচিত? দরিদ্রদের চেয়ে ধনীরা বেশি পুঁজির মালিক হওয়ায় এবং সেখান থেকে তাদের আয় বেশি উপার্জিত হওয়ার কারণে অবশ্যই মূলধন আয়ের ওপর কর আরোপ করতে হবে। কিন্তু শ্রমের তুলনায় পুঁজি বা মূলধন সহজেই বাইরে গমনাগমন করতে পারলে কার্যকারিতা বিবেচনা প্রয়োগ করে বলা যায়
যে পুঁজির চেয়ে বরং শ্রমের ওপর অবশ্যই কর আরোপ করতে হবে, যাতে পুঁজি বাইরে চলে যেতে না পারে কিংবা তা সুনির্দিষ্ট দেশের ভেতরে ব্যয় হয় বা সঞ্চয় হয়। প্রকৃতপক্ষে, অ্যান্থনি এটকিনসন ও জোসেফ স্টিগলিেসর সেমিনাল আর্টিকেল প্রকাশের পর থেকে বিপুলসংখ্যক সাহিত্যে বলা হয় যে, মূলধন আয়ের ওপর চূড়ান্ত করায়ন শূন্য হওয়া উচিত।
ভূখাণ্ডিক সীমানার ভেতরে অর্জিত আয়ের ওপর
- বিভাজিত শিক্ষা, বিবর্ণ ভবিষ্যৎ
- অবকাঠামোর আলোকচ্ছটা ও মাথাপিছু আয় কি উন্নয়নের মানদণ্ড?
- প্রবাসী শ্রমিকদের হয়রানি-নির্যাতন বন্ধে বিএমইটির কাজের গতি ও নজরদারি বাড়াতে হবে
- কারখানার তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ: গবেষণার যে জ্ঞান কাজে লাগাতে অনীহা
- আমাদের যেন ঋণ এনে ঋণ পরিশোধ করতে না হয়
- বোরোর হিট স্ট্রোক মোকাবেলায় করণীয়