লিভারপুলের বিশ্ব জয়

দুর্দান্ত সময় পার করছে ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুল। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সুপার কাপ জেতা দলটি এবার জিতে নিল ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও। কাতারের দোহায় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে লিভারপুল হারিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লামেঙ্গোকে। প্রথম ৯০ মিনিটে অবশ্য গোল করতে পারেনি কোনো দল। অতিরিক্ত সময়ের মিনিটের মাথায় লিভারপুলের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলেরই তারকা রবার্তো ফিরমিনো। সেই গোলটি লিখে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল তারা। সেই সঙ্গে শেষ করল দুর্দান্ত এক প্রতিশোধ মিশনও। এর আগে ১৯৮১ সালে ইন্টারন্যাশনাল কাপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। যে ম্যাচে কিংবদন্তি জিকোর গোলে জিতেছিল ফ্লামেঙ্গো। কাতারের জয় দিয়ে এবার সেই আক্ষেপও দূর করল তারা।

শুরু থেকেই ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা জয়কে পাখির চোখ করেছিল লিভারপুল। যে কারণে কারাবাও কাপও উৎসর্গ করে এসেছে তারা। একই সময়ে সূচি ঠিক হওয়ায় অনভিজ্ঞ দল কারাবাও কাপের জন্য রেখে, মূল দল নিয়ে ক্লোপ চলে আসেন কাতারে। সেমিফাইনালে মেক্সিকোর ক্লাব মন্তেরিকে হারিয়ে নিশ্চিত করে ফাইনালের টিকিট। শনিবার রাতে ফাইনালের লড়াইয়েও বাজিমাত করেছে অ্যানফিল্ডের দলটি।

এদিকে জয় আরো এক ধাপ উপরে তুলে দিল লিভারপুল বস ইয়ুর্গেন ক্লোপকে। তার হাত ধরেই বদলে যাওয়া এক দলে পরিণত হয়েছে লিভারপুুল। দীর্ঘ সময় শিরোপাবঞ্চিত থাকাঅল রেডদের ফের শিরোপা জিততে দারুণ অবদান রেখেছেন তিনি। তবে শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দলের খেলোয়াড়দেরই দিয়েছেন ক্লোপ। তিনি বলেন, ‘ছেলেদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা অবিশ্বাস্য। আমরা দারুণ কিছু কাজ করেছি। আমি দারুণ কিছু পারফরম্যান্স দেখেছি এবং আমি আনন্দিত।

দোহায় লিভারপুলের জয়টা প্রকৃত অর্থেই কষ্টসাধ্য ছিল। অল রেডদের প্রেসিং ফুটবলের দারুণ জবাব নিয়ে এদিন মাঠে নামে ব্রাজিলিয়ান জায়ান্টরা। এমন পরিসংখ্যানও বলছে মাঠের লড়াই ছিল সমানে সমান। লিভারপুলের ৪৭ শতাংশ বল দখলের বিপরীতে ফ্লামেঙ্গোর দখলে বল ছিল ৫৩ শতাংশ। তবে ১৮টি শট নিয়ে ছয়টিই লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল ক্লোপের দল। অন্যদিকে ফ্লামেঙ্গোর নেয়া ১৫ শটের মাত্র তিনটিই ছিল লক্ষ্যে। এদিন অবশ্য লিভারপুলের দারুণ কিছু সুযোগ নস্যাৎ হয়েছে ফ্লামেঙ্গো গোলরক্ষক আলভেস ক্যারেইরার সৌজন্যে। তবে কৃতিত্ব দিতে হয় লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসনকেও। স্বদেশী ক্লাবটির পাওয়া দারুণ সুযোগ রুখে দিয়ে অবদান রেখেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষক। তবে সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচের নায়ক রবার্তো ফিরমিনো। একাধিকবার নিরাশ হওয়া ফিরমিনো ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন ৯৯ মিনিটের মাথায়। সাদিও মানের অ্যাসিস্টে বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশিংয়ে দলকে প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের উপলক্ষ গড়ে দেন তিনিই। এর আগে সেমিফাইনালে জয়সূচক গোলটিও এসেছিল ফিরমিনোর কাছ থেকে। তবে টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে গোল্ডেন বল জিতেছেনইজিপশিয়ান কিংখ্যাত মোহাম্মদ সালাহ। কিন্তু ম্যাচ শেষে একটি দুশ্চিন্তাও সঙ্গী হয়েছে লিভারপুলের। চোটে পড়েছেন দলের তারকা মিডফিল্ডার অক্সালেড চেম্বারলিন। যদিও তার চোট গুরুতর কিছু নয় বলেই মনে করছেন ক্লোপ। এএফপি বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন