একটি ফলের চারা লাগাতে সাধারণত তিন মিটার বাই তিন মিটার জমি প্রয়োজন হয়। সে হিসাবে প্রতি কাঠা জমিতে সর্বোচ্চ ১৬টি গাছ লাগানো সম্ভব। তবে ফলের গাছের সঙ্গে শোভাবর্ধনকারী গাছের চারা লাগালে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৫টিতে উন্নীত করা যায়। অথচ বন অধিদপ্তরের এক প্রকল্পে প্রতি কাঠায় প্রায় ৬২০টি গাছ লাগানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এসব গাছ লাগাতে ব্যয় হবে ১০ কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
মাদারীপুরের চরমুগুরিয়া ইকো পার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে নেয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এসব গাছ লাগাবে বন অধিদপ্তর। মোট ৪২ কোটি ৯১ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প এলাকার মোট আয়তন ১৭ দশমিক ৯৭ একর। এর মধ্যে প্রায় দুই একর আয়তনের পুকুর রয়েছে। তাছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো ও স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। ফলে বনায়নের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ একর বা ৯০৯ কাঠা জমি অবশিষ্ট থাকবে। এতটুকু জমিতেই লাগানো হবে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ফলদ, বনজ ও শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষের চারা। সে হিসাবে প্রতি কাঠায় ৬০০টির বেশি গাছ লাগাতে হবে।
অস্বাভাবিক ঘনত্বে গাছ লাগানোর পরিকল্পনাসংবলিত এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কীভাবে অনুমোদন দিয়েছে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, আমার জানামতে, প্রতি হেক্টরে বনজ গাছ লাগানো যায় ২ হাজার ২০০ থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার। আর শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো হলে গাছের সংখ্যা সর্বোচ্চ দ্বিগুণ হতে পারে। আবার ফলের গাছ লাগালে সংখ্যাটা আরো কমে আসবে। স্বল্প জমিতে এত বেশি গাছ লাগানোর কোনো উপায় আমার জানা নেই। যদিও প্রকল্পটির বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। তবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের পরিকল্পনা যদি থেকে থাকে, তবে তা হবে অস্বাভাবিক।
জানা গেছে, চরমুগুরিয়া মূলত বানরের আবাসস্থল হিসেবে বেশি পরিচিত। ষাটের দশকে মাদারীপুরের কূলদ্বীপ ও চরমুগুরিয়া বন্দরে ৮-১০ হাজার বানরের বসবাস ছিল। গভীর বনজঙ্গল ও শত শত ফলদ গাছ থাকার কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে বানর এখানে এসে আশ্রয় নিত। বানরসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য ২০১৫ সালে ইকো পার্কটি তৈরি করা হয়। ইকো পার্কটির বর্তমান আয়তন পাঁচ হেক্টরের কাছাকাছি। সেটিকে আরো বড় পরিসরে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কিন্তু নানা অসংগতি থাকায় পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় প্রকল্পটি নিয়ে ব্যাপক আপত্তি তুলেছে কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের বন, মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ উইং।
কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. জাকির হোসেন আকন্দ এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা পিইসি সভায় প্রকল্পগুলোকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করি। কোনো ধরনের অসংগতি থাকলে সেগুলোকে বাদ দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিই। কিন্তু প্রকল্পটি নানাভাবেই অসংগতিপূর্ণ। স্বল্প জমিতে অধিক পরিমাণে গাছ লাগানো ছাড়াও ক্রয় পরিকল্পনায় অস্বচ্ছতা পেয়েছি।
জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় তিন ধরনের গাছের চারা রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এর মধ্যে ফলদ ও বনজ প্রজাতির চারা ক্রয়, পরিবহন ও রোপণ করা হবে ২ লাখ ৫০ হাজার। প্রতিটি চারার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা। সে হিসাবে মোট খরচ হবে ৩
- রাশিয়া কি আওয়ামী লীগের বৃত্ত থেকে বের হতে পারবে
- ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু
- জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অনন্য ছিলেন যারা
- রাজনীতি, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
- ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা
- গুলশানে সম্পত্তি বিক্রেতা বেড়েছে, ক্রেতা কম